বিজ্ঞাপন

ছাত্রলীগ নেতা খুনের মামলায় আ.লীগ নেতাসহ ২৪ জনের বিচার শুরু

October 3, 2022 | 2:05 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছরের মাথায় চট্টগ্রামে ব্যাপক আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত বিশ্বাস খুনের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৩ অক্টোবর) চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. আমিরুল ইসলাম এ আদেশ দিয়েছেন। আদালত এ মামলায় ৩০ অক্টোবর থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আদেশ দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ গঠনের শুনানিতে প্রথমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পড়ে শোনানো হয়। আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে অব্যাহতি প্রার্থনা করেন। আদালত নামঞ্জুর করে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় ২৪ আসামির প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।’

দিদারুল আলম মাসুম ছাড়া বাকি ২৩ আসামি হলেন- মোক্তার হোসেন (২২), আমির হোসেন বাবু (২০), খাইরুল নুর ইসলাম খায়ের (২০), ফয়সাল আহমেদ পাপ্পু (২১), রুবেল কান্তি দে (২৭), সালাহউদ্দিন লাভলু প্রকাশ ডিস সালাহউদ্দিন (২১), রাজিবুল ইসলাম রাজিব (২৩), মামুনুর রহমান রাব্বি (২২), ইব্রাহিম খলিল বাবর (২২), আইনুল কাদের চৌধুরী নিপু (২৭), জাহিদুর রহমান জাহেদ (২৫), জিয়াউল হক ফয়সাল (৩০), নিজাম উদ্দিন রুবেল (২৫), মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন হানিফ ওরফে পিচ্চি হানিফ (৩৫), মিজানুর রহমান রাকিব (২৩), মো. শামীম (২৯), মোজাম্মেল হক মুরাদ (৩০), আবু জিহাদ সিদ্দিকী (২৮), মো. মামুন (২৬), টিপু সুলতান (২৮), নিয়াজ মোর্শেদ নিপু (২৮), আমজাদ হোসেন (২৩) এবং আব্দুর রব নওশাদ (২৪)।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ গঠনের সময় দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৩ জন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। আবু জিহাদ সিদ্দিকী নামে একজন আসামি অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর সকালে নগরীর সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ার নিজ বাসার সামনে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক সুদীপ্ত বিশ্বাসকে পিটিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মেঘনাথ বিশ্বাস বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সাড়ে তিন বছর তদন্তের পর ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতা দিদারুল আলম মাসুমসহ ২৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মামলার অভিযোগপত্রে নগরীর লালখানবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমকে সুদীপ্ত হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। আর কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন আইনাল কাদের নিপু। ফয়সাল আহমেদ পাপ্পু’র আঘাতে সুদীপ্ত মারা যান বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।

বিচারের মুখোমুখি হওয়া আসামিরা সবাই দিদারুল আলম মাসুমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ফেসবুকে লেখালেখির কারণে দিদারুল আলম মাসুমের নির্দেশে সুদীপ্তকে খুন করা হয়েছে বলে শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিলেন নগর ছাত্রলীগের নেতারা। মিজানুর রহমান নামে এক আসামিও জবানবন্দিতে ‘বড় ভাই’ মাসুমের নির্দেশে খুনের কথা উল্লেখ করেন বলে গণমাধ্যমে তথ্য আসে।

আসামিদের মধ্যে দিদারুল আলম মাসুমসহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এদের মধ্যে চারজন আদালতে জবানবন্দি দেন। মাসুমসহ ২৩ আসামি জামিনে আছেন।

বিচার শুরুর আদেশ আসায় সন্তোষ প্রকাশ করে সুদীপ্ত বিশ্বাসের বাবা মেঘনাথ বিশ্বাস বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে ছেলে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় আছি। আদালতে অনেকবার সময় পেছানো হয়েছে। আসামিরা অনেক প্রভাবশালী। আমি নিরীহ শিক্ষক। আদালত বিচার শুরু করেছেন। আমি চাই, দ্রুত বিচার কার্যক্রম শেষ হোক। আসামিরা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন