বিজ্ঞাপন

সেপ্টেম্বরে সড়কে নিহতদের ৩৫ শতাংশই মোটরসাইকেল আরোহী

October 3, 2022 | 5:36 pm

সারাবাংলা ডেস্ক

ঢাকা: সারা দেশে গত সেপ্টেম্বর মাসে ৪০৭টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮২টিই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ৪৭৬ জনের মধ্যে ১৬৯ জনই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। যা মোট নিহতের ৩৫ দশমিক ৫০ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৩ অক্টোবর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪০৭টি। এতে নিহত হয়েছেন ৪৭৬ জন এবং আহত হয়েছেন ৭৯৪ জন। নিহতের মধ্যে নারী ৬২ ও শিশু ৭৭ জন। এছাড়া মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৩ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২১ দশমিক ৬৩ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৩ জন, অর্থাৎ ১৩ দশমিক ২৩ শতাংশ। এই সময়ে নয়টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৭৮ জন নিহত এবং তিনজন নিখোঁজ রয়েছে। ২১টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৬৯ জন (৩৫.৫০%), বাস যাত্রী ৩৬ জন (৭.৫৬%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ২৮ জন (৫.৮৮%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার আরোহী ৯ জন (১.৮৯%), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ১০৪ জন (২১.৮৪%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-আলমসাধু-পাখিভ্যান-মাহিন্দ্র-টমটম)১৩ জন (২.৭৩%) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ১৪ জন (২.৯৪%) নিহত হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ:

১. ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন;

২. বেপরোয়া গতি;

৩. চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা;

বিজ্ঞাপন

৪. বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট না থাকা;

৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল;

৬. তরুণ ও যুবদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো;

৭. জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা;

৮. দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা;

৯. বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি;

১০ গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সুপারিশ:

১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে হবে;

২. চালকের বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করতে হবে;

৩. বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে;

৪. পরিবহনের মালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে;

৫. মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে;

৬. পর্যায়ক্রমে সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে;

৭. গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে;

৮. রেল ও নৌ-পথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের উপর চাপ কমাতে হবে;

৯. টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে;

১০.“সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে “সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮” বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না মন্তব্য করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রতিবেদনটিতে আরও বলেছে, অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

সারাবাংলা/এনইউ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন