বিজ্ঞাপন

কিংফিশার বার থেকে বিপুল পরিমাণ মদসহ গ্রেফতার ৩৫

October 7, 2022 | 6:36 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর উত্তরায় কিংফিশার নামে একটি বারে অভিযান চালিয়ে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় ৫০০ বোতল অবৈধ বিদেশি মদ ও ৬ হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করা হয়। ডিবি পুলিশের দাবি, গ্রেফতারদের মধ্যে ওই বারের কর্মচারী ও বারে আসা অতিথিরা রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরে গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ রোডের এক বাসায় কথিত বারে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে রাজধানীর উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ এভিনিউ রোডের একটি একটি বাড়িতে শত শত ছেলে-মেয়ে গান বাজনার নামে ডিজে পার্টি এবং প্রচুর পরিমাণ মদ বিক্রি হচ্ছে বলে আমাদের কাছে গোপন তথ্য আসে। আগেও উত্তরার এমপি থেকে শুরু করে অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি আমাদের কাছে অভিযোগ করেন ওই বাড়িতে সবসময় একটি নৈরাজ্যকর পরিবেশ বিরাজ করে।

তিনি বলেন, এই তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ডিবি উত্তরার সব টিম গতকাল রাত ৯টার দিকে ওই বাড়িতে যায়। তারা সেখানে গিয়ে দেখেন ভয়াবহ অবস্থা। প্রথমে ভবনের সাত তলায় গিয়ে ডিবির দল দেখে, অনেক ছেলে-মেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে ভেতরে গিয়ে দেখে, সেখানে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মদ ও বিয়ার মজুত রয়েছে। ডিবির দলগুলো ৫ম তলা ও ৬ষ্ঠ তলায় গিয়েও একই অবস্থা দেখতে পায়।

পরে ডিবি এসব বিদেশি মদ ও বিয়ার একত্রিত করে কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় এগুলো তারা কীভাবে দেশে নিয়ে এসেছে। অভিযানে ৫০০ বোতল দামি বিদেশি মদ ও প্রায় ৬ হাজার ক্যান বিয়ার জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্যই ডিবিকে জানাতে পারেনি। কাগজপত্রের জন্য ডিবি পুলিশ বাড়িটিতে রাত ৯টা থেকে প্রায় রাত ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। তারপরও কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি বার কর্তৃপক্ষ। সে কারণে সেখান থেকে আমরা ৩৫ জনকে গ্রেফতার করি। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

ভবনটিতে এ কার্যক্রম কী ব্যানারে চলত— প্রশ্ন করা হলে ডিবি প্রধান বলেন, ‘কিংফিশার রেস্টুরেন্টের নামে এই ভবনের এসব কার্যক্রম চলত।’

কথিত এই বারের মালিক মুক্তার হোসেন নামের এক ব্যক্তি। রাজধানী ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে তার আরও বেশ কয়েকটি বার রয়েছে।

মুক্তার হোসেনের কাছে বারের কয়টি লাইসেন্স আছে— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা গতকাল যেই ভবনটিতে অভিযান পরিচালনা করেছি সেখানের ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। ম্যানেজার আমাদের বলেছেন মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জে পাঁচটি বার চালান মুক্তার হোসেন। সেগুলো একই লাইসেন্সের কি না সেটি জানি না। তবে গতকাল আমরা উত্তরার যে ভবনে অভিযান পরিচালনা করেছি সেখানে কিংফিশার রেস্টুরেন্টের নামে এসব কার্যক্রম চলত।’

বিজ্ঞাপন

ম্যানেজার আরও জানান, ২০০৮ সালের দিকে বারিধারায় অবস্থিত এভিলিয়ন নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ করতেন মুক্তার। লেকভিউ নামে গুলশান-২ এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে ছিল সেখানেও কাজ করতেন ওয়েটার হিসেবে।

ওয়েটার থেকে এখন শত কোটি টাকার মালিক মুক্তার হোসেন। যুক্তরাষ্ট্রে তার বাড়ি-গাড়ি আছে। সেখানে তার স্ত্রী ও সন্তান বসবাস করেন।

মামলায় প্রতিষ্ঠানটির কাকে কাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালিক ও ম্যানেজারসহ অনেকজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

গ্রেফতার ৩৫ জনের মধ্যে প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কতজন রয়েছে— জানতে চাইলে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এ বিষয়গুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি।’

এই কর্মকাণ্ডে সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কোনো কোরিয়ান নাগরিক জড়িত কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।’

উত্তরার কথিত বারে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের যাতায়াত ছিল। তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে— এমন প্রশ্নে জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, ‘কাদের যাতায়াত ছিল সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করব।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন