বিজ্ঞাপন

দায়-দায়িত্বহীন কেউ যেন ভবিষ্যতে ক্ষমতায় না আসে: প্রধানমন্ত্রী

October 13, 2022 | 3:38 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল তত মানুষ মারা যায়নি, এই কথা বলে দায়-দায়িত্বহীনতার পরিচয় যেন কেউ না দেয়। ভবিষ্যতে এমন কেউ যেন ক্ষমতায় না আসে সেদিকেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২২ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও গৃহীত কর্মসূচির বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলা ও প্রতিরোধে সফলতার প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্যোগ সহনশীল দেশ হিসেবে আজ বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ স্থান পেয়েছে। যতই দুর্যোগ আসুক আমরা সেটা মোকাবিলা করতে সক্ষম। এটা আমরা প্রমাণ করেছি। এটা অব্যাহত রাখতে হবে। আবার ঐ রকম যেন কেউ ক্ষমতায় না আসে যত মানুষ মারা যাওয়ার কথা ছিল তত মানুষ মরে নাই। এই কথা বলে দায়-দায়িত্বহীনতার পরিচয় যেন কেউ না দেয়। ভবিষ্যতে সেদিকেও দেশবাসীকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’

জলবায়ু অভিঘাত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের যে অভিঘাত বাংলাদেশে আসছে আসলে বাংলাদেশ কিন্তু কোনো মতেই এর জন্য দায়ী নয়। আমরা সব সময় সতর্ক। আমাদের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও কৃষক লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন আমরা একটা কর্মসূচি সব সময় করতাম। ১৯৮৪ সালে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, ১৯৮৫ সাল থেকে প্রতি বছর পহেলা আষাঢ় থেকে তিন মাস বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি। আমাদের প্রতিটি নেতা-কর্মীর ওপর নির্দেশ আছে, যে যেখানে পারবে, গাছ লাগাবে। তখন জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো বিষয় ছিল না। আমাদের বাংলাদেশ সবুজ বাংলাদেশ, এই সবুজায়ন যাতে থাকে সেদিকে লক্ষ রেখেই আমাদের কর্মসূচি আমরা দীর্ঘ দিন থেকে অনুসরণ করে যাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ কোনো রকম ইমিশন করে না, বাংলাদেশ ক্ষতিকারক না কিন্তু বাংলাদেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উন্নত দেশগুলো উন্নয়ন করে ফেলেছে। আর তার ফলে আজকে আমরা ভুক্তভোগী। আমাদের এটাই দাবি ছিল, যেসব ক্ষতিগ্রস্ত দেশ; জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব দেশ সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এদের সব রকমের সহযোগিতা তাদের দেওয়ার কথা। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো আমরা তো অনেক প্রতিশ্রুতি পাই কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সহযোগিতা পাওয়া যায়! তারপরও আমি বলবো, প্যারিস চুক্তি হওয়ার ফলে একটা আশার প্রদীপ জ্বেলে আছে। পাশাপাশি গ্লাসগোতেও কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভবিষ্যতে কী হয় কিন্তু আমাদের একটা কথা মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের ভৌগলিক অবস্থার কথা চিন্তা করে আমাদের ব্যবস্থাটা আমাদের নিজেদেরই করে নিতে হবে।’

পরিবেশ রক্ষায় নানামুখী উদ্যোগ নেওয়ার জন্য এ সময় সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বন্যা আমাদের প্রয়োজন। সারা বছর বৃষ্টিতে যে ভূমিটা ক্ষয় হয়, বন্যায় পলি পড়ে সেই ভূমিটা আবার পুনরুদ্ধার হয় কিন্তু এই বন্যায় মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও আমরা সতর্ক। সে জন্য বন্যাপ্রবণ এলাকায় আমরা এখন বন্যা ও সাইক্লোন শেল্টার আমরা নির্মাণ করে দিচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশটা একটা অদ্ভুত দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন মোকাবিলা করতে হয় আবার অগ্নিসন্ত্রাসের মতো দুর্যোগও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়। যেটা মানুষ সৃষ্ট। চলন্ত গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন, লঞ্চে আগুন। এটাই হলো আমাদের দুর্ভাগ্য।’

বিজ্ঞাপন

ভবিষ্যত পরিকল্পনা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতার ডাকে সারা দিয়ে অস্ত্র তুলে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে আমরা এ দেশ গড়ে তুলেছি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত আমাদের ওপর এসেছে, সেগুলো মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। একদিকে করোনা, অপর দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা—এসব মোকাবিলা করেই কিন্তু আমাদের এগিয়ে যেতে হচ্ছে। তবে ইনশাল্লাহ আমরা এগিয়ে যেতে পারবো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তার ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, ‘কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না’। তো বাঙালি জাতিকে কেউ দাবায়া রাখতে আর পারবে না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মনুষ্য দুর্যোগ সব মোকাবিলা করে বাংলাদেশ তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাবে।’

এ সময় ২৫টি জেলা ত্রাণ, গুদাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র, ৫০টি মুজিব কেল্লা এবং ৮০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/এনআর/ইআ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন