বিজ্ঞাপন

বিশ্বকাপের দল পরিচিতি: ইরান

November 9, 2022 | 7:33 pm

মো. সাইফুল আলম তালুকদার

কাতার বিশ্বকাপে থাকা ‘গ্রুপ-বি’ নিয়ে এবারের আলোচনা। এই গ্রুপে আছে ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েলস এবং ইরান।‌‌ ফিফা র‍্যাংকিংয়ে দলগুলোর অবস্থান যথাক্রমে ৫, ১৬, ১৯ এবং ২০। এই গ্রুপ থেকে ইংল্যান্ডের পরের রাউন্ডে যাওয়া প্রায় নিশ্চিত তবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে যুক্তরাষ্ট্র, ওয়েলস এবং ইরানের‌ শক্তিমত্তার বিচারে এই তিন দলই বেশ কাছাকাছি।

বিজ্ঞাপন

আজকের আলোচনা থাকবে ইরান।‌‌ যদিও তারা কাতার বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে সবার আগে কিন্তু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে ইরানই সবার আগে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে পারে।

কাতার বিশ্বকাপে তারা কিভাবে কোয়ালিফাই করল—

এশিয়ান অঞ্চলে গ্রুপ-এ থেকে দক্ষিণ কোরিয়াকে টপকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ইরান। আর বাছাইপর্বে সব গ্রুপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পয়েন্টও অর্জনকারী দেশ ছিল ইরান। বাছাইপর্বে তারা ১৮টি ম্যাচের মধ্যে ১৪টি ম্যাচে জয়লাভ করে।

বিজ্ঞাপন

বিগত বিশ্বকাপে ইরানের পারফরম্যান্স—

১৯৭৮ সাল থেকে এই বিশ্বকাপ পর্যন্ত বিশ্বকাপে ইরান ষষ্ঠবারের মতো অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে শেষ তিন বিশ্বকাপেই তারা টানা অংশগ্রহণ করেছে।

এশিয়ান অঞ্চলে জাপানের (চারবার শিরোপা জিতেছে জাপান) পর সর্বোচ্চ তিনবার করে শিরোপা জিতেছে ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়া। তবে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব কখনোই পার করতে পারেনি ইরান। ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক ২-১ গোলে জয় এবং সর্বশেষ ২০১৮ বিশ্বকাপে মরক্কোকে ১-০ গোলে হারানো, এই দুটি জয়ই তাদের সেরা সাফল্য। ইরান প্রতিটি বিশ্বকাপে ন্যূনতম ১ পয়েন্ট হলেও পেয়েছে, তবে ২০১৮ সালে তারা সর্বোচ্চ ৪ পয়েন্ট অর্জন করেছিল এবং সে যাত্রায় শক্তিশালী পর্তুগালের সঙ্গেও ১-১ গোলে ড্র করেছিল।

বিজ্ঞাপন

কোচ কার্লোস কুইরোজ—

তিন বছর বিরতি দিয়ে কোচ কার্লোস কুইরোজ‌ আবারও ইরানের জাতীয় দলের দায়িত্বে ফিরেছেন। তার নেতৃত্বে ইরান ২০১৪ এবং ২০১৮ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছিল। প্রথম দফায় তিনি কোচ ছিলেন ৮ বছর। ক্লাব ক্যারিয়ারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হবার আগে আরব আমিরাত এবং দক্ষিণ আফ্রিকাকে তিনি কোচিং করিয়েছেন। পরবর্তীতে পর্তুগাল, ইরান, কলম্বিয়া এবং মিশরেরও কোচ ছিলেন কুইরোজ।

রক্ষণাত্মক দৃঢ়তা এবং পাল্টা আক্রমণে গোল করার কৌশল অবলম্বন ‘টিম মেলির’ একটি স্টাইল হয়ে দাঁড়িয়েছে যার মূল কারিগর হচ্ছেন পর্তুগালের ৬৯ বছরের বয়সী কোচ কুইরোজ‌। তিনি ইরানে অনেক জনপ্রিয় কোচ কারণ তার নেতৃত্বে ২০১৪ সালে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে মাত্র ১-০ গোলে এবং ২০১৮ সালে স্পেনের কাছে একই ব্যবধানে হারের পরেও ইরানিরা রাস্তায় নেমে তার জন্য গলা ফাটিয়েছিল।

তবে কুইরোজার জন্য একটি বড় অন্তরায় হচ্ছে খুব বেশি পরিমাণ রক্ষণাত্মক খেলার কারণে অনেক সময় দুর্বল দলের বিপক্ষে প্রাধান্য বিস্তার করে খেলতে পারে না বা তার দল সময়মতো গোল পায় না।

বিজ্ঞাপন

ইরানের বিশ্বকাপ সময়সূচি—

২১শে নভেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় প্রথম ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪৫ হাজার ৪১৬ জন দর্শক আসন বিশিষ্ট ‘খলিফা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে’। দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে ওয়েলসের বিরুদ্ধে ২৫শে নভেম্বর বিকাল ৪টায় আর ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে ‘আল রাইয়ান স্টেডিয়ামে’, যার দর্শক ধারন ক্ষমতা ৪৪ হাজার ৭৪০। ‘আল থুমানা’র ৪০ হাজার আসন বিশিষ্ট স্টেডিয়ামে খেলবে গ্রুপের শেষ ম্যাচ চিরশত্রু যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, যেটি অনুষ্ঠিত হবে ৩০শে নভেম্বর রাত ১টায় মিনিটে।

বিশ্বকাপে ইরান কতদূর যেতে পারে—

বাজির দর: ৭৫০/১ অনুযায়ী ইরান যোজন যোজন দূর পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্বকাপ ইতিহাস অনুযায়ী তাদেরকে প্রায়শই মাত্র একটি ম্যাচেই ভালো খেলতে দেখা যায়। আর সেই একটি জয় যদি যুক্তরাষ্ট্র বা ওয়েলসের বিরুদ্ধে তুলে নিতে পারে এবং সেই সঙ্গে একটি ড্র থাকে তবে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়াটা তাদের জন্য বেশ সহজ হয়ে যাবে। সম্প্রতি উরুগুয়ের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে ১-০ গোলের জয় নিশ্চয়ই তাদের মনোবল বাড়িয়ে দিবে। যুক্তরাষ্ট্র সেপ্টেম্বর মাসে এশিয়ার দুইটি দেশের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলে একটিতে জাপানের কাছে ০-২ গোলে হেরেছে আর অন্যটিতে সৌদি আরবের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে। তাই ইরান যদি আবারও ১৯৯৮ সালের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয় পায় আর সেই সঙ্গে ওয়েলসকে রুখে দিতে পারলেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে ইরান।

খেলার ফর্মেশন—

ইরান এবারের বিশ্বকাপে ৪-১-৪-১ পদ্ধতিতে খেলতে পারে। তাদের খেলার মূল পরিকল্পনাই থাকবে ডিফেন্সকে শক্তপোক্ত রাখা যাতে গোল হজম করতে না হয়। প্রীতি ম্যাচে সেনেগালের সঙ্গে ড্র করা শেষ ম্যাচটিতে ইরানি দল প্রতি আক্রমণের সঙ্গে নিচ থেকে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রধান স্ট্রাইকার হিসেবে সরদার আজমুন খেলবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। কেননা ইনজুরি থেকে এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। তিনি যদি ফিট না হতে পারেন তাহলে সে জায়গায় মেহদি তারেমি খেলবেন। আর যদি আজমুন ফিট থাকেন তাহলে তারেমি‌ লেফট উইঙ্গার হিসেবে খেলবেন।

শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা—

এশিয়ান দেশ হিসেবে ইরান নিশ্চয়ই কাতারে এক ধরনের বাড়তি উদ্দীপনা নিয়ে খেলবে। তাদের দলে প্রায় ১৫ জন খেলোয়াড় আছে যাদের পূর্ববর্তী বিশ্বকাপে‌ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গ্রীক লিগে খেলা অধিনায়ক এহসান হায়সাফি এবং মিলাদ মোহাম্মদী দলের রক্ষণ সামলাবেন।‌‌ হায়সাফি এখন পর্যন্ত ১২১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন। আক্রমণভাগে আলী রেজা জাহানবখশ, মেহদি তারিমি এবং সর্দার আজমুন দীর্ঘদিন যাবৎ ইউরোপে খেলছেন। তারা ইতোমধ্যে ৬০৮টি ম্যাচ খেলেছেন রাশিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইংল্যান্ড এবং পর্তুগালের শীর্ষ লিগে।‌‌ অর্থাৎ দলটিতে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মিশ্রণ রয়েছে।

ভালো রক্ষণভাগের সাথে রক্ষণাত্মক পদ্ধতির সমন্বয় থাকলেও মধ্যমাঠে সৃষ্টিশীল খেলোয়াড়ের অভাব রয়েছে যারা অ্যাটাকিং লাইনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারতেন।‌‌ আমিনীর মৃত্যুর পর উদ্ভূত বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি দলের ভিতরেও সঞ্চার করেছে। এমনকি কোচ কুইরেজোর পুনরায় আগমনে দলের ভেতর ভিন্ন মতবাদ সৃষ্টি করেছে।

যাদের দিকে চোখ রাখতে হবে—

সরদার আজমুন: ফরোয়ার্ড, সরদার আজমুন ইরানের মেসি নামে পরিচিত। ২৭ বছরের এই স্ট্রাইকার বর্তমানে খেলছেন জার্মানির বায়ার লেভারকুজেনে।‌‌ তিনি যথেষ্ট সৃজনশীল এবং হঠাৎ করে গতি বাড়ানোর জন্য পরিচিত। হেড করতে তিনি যথেষ্ট ভালো বিধায় তাকে ইব্রাহিমোভিচের সাথেও তুলনা করা হয়। আলী দায়ির পরে তিনিই ইরানের সবচেয়ে সফলতম ফুটবলার। আলী দায়ি প্রতিটি গোল করতে ১.৩৬টি ম্যাচ খেলেছেন, যেখানে আজমুনকে খেলতে হয়েছে ১.৫৮টি ম্যাচ। তার বর্তমান মার্কেট ভ্যালু হচ্ছে ২৮.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মেহদি তারেমি: ‘আমি আফসোস করছি যে এই ছেলেটি ইউরোপিয়ান ফুটবলে বেশি আগে যায়নি এবং এটা আমার দোষ‌ ছিল।’ কয়েক মাস আগে কাঁদতে কাঁদতে ফুটবল বিষয়ক টিভি শোতে এই কথাটি বলছিলেন মেহদি তারেমির বাবা। ৩০ বছরের এই স্ট্রাইকার, ২০১৮ বিশ্বকাপের পর পর্তুগিজ লিগে খেলতে যাওয়ার পর থেকে ললিগ এবং জাতীয় দলের হয়ে প্রতি দুই ম্যাচ অন্তর গোল করে যাচ্ছেন। আলীরেজা জাহানবখশ এবং সরদার আজমুনের সাথে তার গোল করার দক্ষতার উপর নির্ভর করবে ইরান দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবে কিনা!

আলীরেজা জাহানবখশ: ডাচ লিগের ফেইনুর্ড ক্লাবে খেলা ২৯ বছরের, আলীরেজা জাহানবখশ ইরানের সেরা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। তিনি একজন টেকনিক্যালি গিফটেড প্লেয়ার, যার প্রমাণ ইংলিশ লিগে ব্রাইটনের হয়ে চেলসির বিরুদ্ধে একটি অত্যাশ্চর্যজনক ওভারহেড কিক দিয়ে প্রমাণ করেছিলেন। ডাচ লিগের দ্বিতীয় সেরা তরুণ খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন ২০১৪ সালে এবং ২০১৭-১৮ মৌসুমে সেখানে তিনি ২১টি গোল করে এশিয়ার প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোপের শীর্ষ লীগের সেরা গোলদাতা হন। তিনি‌ এবং অধিনায়ক হায়সাফী তৃতীয়বারের মতো ইরানের হয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন।

এহসান হায়সাফী: ইরানের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফুটবলার অধিনায়ক এহসান হায়সাফী। ৩২ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় অবিশ্বাস্য প্রতিভার অধিকারী। তিনি একাধারে লেফটব্যাক এবং ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে পারেন। তার নেতৃত্বের গুণাবলির জন্য ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত। জার্মান এবং‌ গ্রীক লিগে খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে এহসানের।

তরুণ তুর্কি

 ২৪ বছরের ওমিদ নুরাফখান একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি ফুলব্যাক, সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার এবং ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডেও খেলতে পারেন। ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির আরেকজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, সাইদ এজাতোলাহি বর্তমান দলে প্রায়ই সুযোগ পাচ্ছেন এবং তার পরিশ্রমী খেলা দৃষ্টি কেড়েছে। তিনি এখন পর্যন্ত জাতীয় দলের হয়ে ৪৭টি ম্যাচ খেলেছেন। ‌

বিশ্বকাপ ইরানের সম্ভাব্য মূল একাদশ—

গোলরক্ষক: আলিরেজা বেইরানভান্দ (পার্সেপোলিস);

ডিফেন্ডার: সাদেগ মোহররমি (লোকোমোটিভা জাগ্রেব), হোসেন কানানী জাদেগান (আল-আহলি), মজিদ হোসাইনী (কায়সারিসপোর), মিলাদ মোহাম্মদী (এইকে এথেন্স);

মিডফিল্ডার: এহসান হায়সাফি (এইকে এথেন্স), সামান ঘোদ্দোস (ব্রেন্টফোর্ড), আলী ঘোলিজাদেহ (শার্লেরোই), আলীরেজা জাহানবখশ (ফেইনুর্ড)

ফরোয়ার্ড: মেহেদি তারেমি (এফ.সি পোর্তো) & সরদার আজমুন (বেয়ার লেভারকুসেন)।

আমার দেখা ইরানের সর্বকালের সেরা ১৪ খেলোয়াড় (বর্তমান ও নতুন খেলোয়াড় সহ)—

এই দলের পাঁচজন বর্তমান জাতীয় দলে খেলছেন এবং তার মধ্যে তিনজনকে রেখেছি সেরা একাদশে এবং বাকি দুইজনকে নেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে।

গোলরক্ষক:

আলিরেজা বেইরানভান্দ (ম্যাচ সংখ্যা: ৫১; তিনি এ পর্যন্ত ১৮২টি ম্যাচ ইরানিয়ান, বেলজিয়ান এবং পর্তুগিজ লিগে খেলেছেন। তার বয়স: ৩০ বছর এবং বর্তমান জাতীয় দলে খেলছেন)।

রক্ষণভাগ:

রাইট উইংব্যাক: মেহেদী মাহদাভিকিয়া (ম্যাচ সংখ্যা: ১১১টি, গোল সংখ্যা: ১৩টি। তিনি ইরানিয়ান এবং জার্মান লিগে ৩৮৬টি ম্যাচে ৫৪ গোল করেছেন। তার মধ্যে জার্মানির ৩টি ক্লাবে খেলেছেন ২৫৫টি ম্যাচ এবং হ্যামবুর্গ ক্লাবে ২১১টি ম্যাচ খেলে ২৬টি গোলের পাশাপাশি ৫৫টি গোলে সহায়তা করেছেন। ২০০৩ এবং ২০০৪ সালে পরপর দুবার জার্মান দর্শকদের দ্বারা ‘সেরা খেলোয়াড়’ নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ২০০৩-০৪ সালে জার্মান বুন্দেস লিগায় ‘সবচেয়ে বেশি গোল সহায়তাকারী’ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন)।

সেন্ট্রাল ডিফেন্স: রহমান রেজাই (ম্যাচ সংখ্যা: ৫৪, গোল সংখ্যা: ৩। তিনি ইতালিতে ১৬৬টি ম্যাচ খেলেছেন পিরুজিয়া, মেসিনা এবং লিভোরনো ক্লাবে, যার মধ্যে ২০০৪-০৫ সালে মেসিনাকে ইতালিয়ান সিরি আ’তে ৭তম স্থান অধিকারে ভূমিকা রেখেছিলেন)।

জালাল হোসেইনি (ম্যাচ সংখ্যা: ১১৫টি, গোল সংখ্যা: ৮টি। তিনি ইরান এবং কাতার লিগে ৫৭৬টি ক্লাব ম্যাচ খেলেছেন)।

লেফট ফুলব্যাক: এহসান হায়সাফি (ম্যাচ সংখ্যা: ১২১টি, গোল সংখ্যা: ৭টি। বয়স: ৩২ বছর এবং এখনো জাতীয় দলে খেলে যাচ্ছেন। তিনি এখন পর্যন্ত ইরান, জার্মান এবং গ্রীক লিগে ৪৩৬টি ম্যাচ খেলেছেন। বর্তমানে তিনি গ্রীসের এইকে এথেন্স ক্লাবে খেলছেন)।

মধ্যমাঠ:

রক্ষণাত্মক মিড ফিল্ডার: আন্দ্রানিক তেমুরিয়ান (ম্যাচ সংখ্যা: ১০১টি, গোল সংখ্যা: ৯টি। তিনি ইরানিয়ান এবং ইংলিশ লিগে ১৪টি ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের হয়ে ২৪৫টি ক্লাব ম্যাচ খেলেছেন। তিনি ইরানের প্রথম খ্রিস্টান অধিনায়ক ছিলেন)।

আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার: জাভেদ নেকোনাম (ম্যাচ সংখ্যা: ১৫১টি, গোল সংখ্যা: ৩৯টি। তিনি শুধুমাত্র ইরানিয়ান এবং স্প্যানিশ লিগেই খেলেছেন ৪০৯টি ম্যাচ, যার মধ্যে স্পেনের ওসাসুনাতে খেলেছেন ১৭১টি ম্যাচ)।

খোদাদাদ আজিজী (ম্যাচ সংখ্যা: ৪৫টি, গোল সংখ্যা: ১১টি। তিনি জার্মানির এফ.সি কোলন ক্লাবে খেলেছেন ৫০টি ম্যাচ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারেও খেলেছেন কিছুদিন)।

করিম বাঘেরি (ম্যাচ সংখ্যা: ৮৭টি, গোল সংখ্যা: ৫০টি। ক্লাব পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য ক্লাবগুলির মধ্যে তিনি জার্মান লিগের আর্মিনিয়া বিয়েলেফেল্ড ক্লাবে খেলেছেন ৫১টি ম্যাচ। ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমে তিনি জার্মানির ‘কিকার ম্যাগাজিনের’ বিবেচনায় জার্মান লিগের সেরা একাদশে ছিলেন)।

ফরোয়ার্ড: সরদার আজমুন (ম্যাচ সংখ্যা: ৬৫টি, গোল সংখ্যা: ৪১টি। তার বয়স মাত্র ২৭ বছর এবং বর্তমান জাতীয় দলে খেলছেন। ইরানে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি কখনো ইরানি লিগে খেলেননি। এখন পর্যন্ত ক্লাব পর্যায়ে ২২৫টি ম্যাচ খেলেছেন রাশিয়ান এবং জার্মান লিগে, যার মধ্যে রাশিয়ার জেনিত সেন্ট পিটার্সবার্গ ক্লাবে খেলেছেন ৭৯টি ম্যাচ এবং গোল করেছেন ৫২টি। তিনি বর্তমানে জার্মানির বেয়ার লেভারকুসেনে খেলছেন ২০২২ সালে থেকে)।

আলী দাই (ম্যাচ সংখ্যা: ১৪৯টি, গোল সংখ্যা: ১০৯টি। তিনি পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পরে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোল করেছেন। ক্লাব পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য ম্যাচের মধ্যে ১৩৭টি ম্যাচ তিনি খেলেছেন জার্মানির আর্মিনিয়া বিয়েলেফেল্ড, বায়ার্ন মিউনিখ এবং হার্থা বার্লিন ক্লাবে)।

অতিরিক্ত:

মিডফিল্ডার মাসুদ শোজাই (ম্যাচ সংখ্যা: ৮৭টি, গোল সংখ্যা: ৮টি। ইরানি এবং আরব আমিরাতের মতো লিগে খেলা ছাড়াও তিনি স্প্যানিশ লিগে ওসাসুনা, লাস পামাস এবং গ্রীসের প্যানিওনিওস ও এইকে এথেন্স ক্লাবে ১৮৩টি ম্যাচ খেলেছেন)।

উইঙ্গার আলীরেজা জাহানবখশ (ম্যাচ সংখ্যা: ৬৪টি, গোল সংখ্যা: ১৩টি। বয়স: ২৯ বছর এবং বর্তমান জাতীয় দলে খেলছেন। তিনি এখন পর্যন্ত ডাচ এবং ইংলিশ লিগে ২২৩টি ম্যাচ খেলেছেন। বর্তমানে তিনি নেদারল্যান্ডসের ফেইনুর্ড রটারডাম ক্লাবে খেলছেন ২০২১ সাল থেকে)।

স্ট্রাইকার মেহদি তারেমি (ম্যাচ সংখ্যা: ৬০টি, গোল সংখ্যা: ২৮টি। তিনিও বর্তমান জাতীয় দলে রয়েছেন এবং বয়স ৩০ বছর। তিনি এখন অব্দি পর্তুগিজ লিগে ১০৪টি ম্যাচ খেলেছেন রিও আভে এবং এফ.সি পোর্তোর হয়ে। যার‌ মধ্যে ২০২০ সাল থেকে পোর্তোর হয়ে ৭১টি ম্যাচ খেলে‌ ৪০টি গোল করে ফেলেছেন)।

সারাবাংলা/এসআইটি/এসএস

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন