বিজ্ঞাপন

শহীদ শেখ মণি থেকে শেখ পরশ: সাফল্য সংগ্রামে ৫০

November 10, 2022 | 5:55 pm

মানিক লাল ঘোষ

স্বাধীনতার মহান স্থপতি বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শেখ ফজলুল হক মণির হাত ধরে যুবলীগের যাত্রা শুরু ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর। নানা প্রতিকূলতা, হাজারও আন্দোলন-সংগ্রাম, অজস্র নেতাকর্মীদের ত্যাগ-তিতিক্ষা কখনো রাজপথ, কখনো মানবিকতায় গৌরবান্বিত ৫০ বছর পার করছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। লড়াই-সংগ্রামে কষ্টিপাথরে যাচাই করা বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ দেশ, মাটি ও মানুষের — ঠাঁই করে নিয়েছে গণমানুষের হৃদয়ে। যুবলীগ আজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার একটি সর্ববৃহৎ শক্তিশালী যুব সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শেখ মণির হাতে গড়া যুবলীগ ৫১বছরে পদার্পণের পথে। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় এ দেশের ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি, যুব আন্দোলনের পথিকৃৎ, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর প্রধান, লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট শেখ ফজলুল হক মণি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র, শোষণমুক্ত সমাজ অর্থাৎ সামাজিক ন্যায়বিচার, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সব ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীনভাবে পালনের অধিকার তথা জাতীয় চার মূলনীতিকে সামনে রেখে বেকারত্ব দূরীকরণ, দারিদ্র দূরীকরণ, দারিদ্র বিমোচন, শিক্ষা সম্প্রসারণ, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি গড়ে তোলা এবং যুবসমাজের ন্যায্য অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠাই যুবলীগের মূল লক্ষ্য। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে এই মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্য থেকে স্বাধীনতা ও প্রগতিকামী যুবক ও যুব মহিলাদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের রাজনৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে একটি সুশৃঙ্খল সংগঠন গড়ে তুলতে কাজ করছে যুবলীগ।

জন্মলগ্ন থেকেই যুবলীগের নেতাকর্মীরা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও দেশগড়ার কাজে আত্মনিয়োগের পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোষর, স্বৈরাশাসক এর অত্যাচারের বিরূদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করেছে বারবার। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন করতে গিয়ে বগুড়ায় যুবলীগ নেতা আব্দুল খালেক খসরু, চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতা মৌলভী ছৈয়দ আহমদ নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন তৎকালীন সরকারের রোষানলে। পরে দুর্বিষহ জীবন কাটিয়েছেন যুবলীগের অসংখ্য নেতাকর্মীরা।

১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে যুবলীগই প্রথম দাবী তুলে। তৎকালীন যুবলীগ চেয়ারম্যান বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যতম সদস্য প্রবীণ জননেতা আমির হোসেন আমু প্রথম বিবৃতি দেন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে। জনমত সৃষ্টি করতে এর স্বপক্ষে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে যুবলীগের নেতাকর্মীরা লিফলেট বিতরণ করে। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসার পর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে যে সংগ্রাম শুরু হয়, যুবলীগের নেতাকর্মীরা এই পথযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যুবলীগ নেতা নূর হোসেনের তাজা রক্তের প্রতিশোধ নিতে গর্জে ওঠে রাজপথ, যার ফলে ক্ষমতাচ্যুত হতে বাধ্য হয় স্বৈরশাসক এরশাদ। ১৯৯০ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৫৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ বদু এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আত্মাহুতি দেন। এছাড়া ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুবলীগের অনবদ্য ভূমিকা, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, বিএনপি জোট সরকারের সরাসরি মদদে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ জাতীয় নেতৃবৃন্দদের প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা, ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে যুবলীগ ছিলো সোচ্চার ও অপ্রতিরোধ্য। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা আন্দোলন, ২০০৭ সালে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তির আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আওয়ামী যুবলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রামে জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে যুবলীগ সবসময় সাহসী ভূমিকা পালন করছে।

বিজ্ঞাপন

১/১১ এর প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা কারান্তরীণ হলে তার মুক্তির আন্দোলনেও যুবলীগ রাখে সাহসী ভূমিকা। সংগঠনটির অসংখ্য নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে কারা নির্যাতনের শিকার হন । ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ভোট বিপ্লবের অগ্রভাগে আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত। যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আসামিদের বিচারকাজ সম্পন্ন করতে এবং ২০১৩ সালের ৫ এবং ৬ মে হেফাজতের ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ সরকারের নিরবচ্ছিন্ন ছায়াসঙ্গী হিসেবেও যুবলীগ রাজপথে ছিল সোচ্চার। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার গঠন করে। ঠিক তখনই বিএনপি জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাস, বোমা মেরে মানুষ হত্যার মধ্য দিয়ে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থার তৈরি করলে যুবলীগ তাদের প্রতিহত ও প্রতিরোধ করতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে রাজপথে ছিল সর্বদা প্রস্তুত।

সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে । এর ফলে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা। তবে নির্বাচনের আগে ও পরে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় বিএনপি ও জামায়াত। কারণ জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি-জামায়াত আগে থেকেই জানতো জনগণ তাদের সাথে নেই, পাশে নেই, যে কারণে তারা ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করেছিল কিন্তু যুবলীগ সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দেয়।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সাতটি জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালে প্রথম কংগ্রেসে শেখ ফজলুল হক মণি চেয়ারম্যান ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ আহমেদ সাধারণ সম্পাদক, ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় কংগ্রেসে আমির হোসেন আমু চেয়ারম্যান ও ফকীর আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৬ সালে তৃতীয় কংগ্রেসে মোস্তফা মহসিন মন্টু চেয়ারম্যান ও ফুলু সরকার সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৬ সালে চতুর্থ কংগ্রেসে শেখ ফজলুল করিম সেলিম চেয়ারম্যান ও অ্যাডভোকেট কাজী ইকবাল হোসেন সাধারণ সম্পাদক, ২০০৩ সালে পঞ্চম কংগ্রেসে অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক চেয়ারম্যান ও মীর্জা আজম সাধারণ সম্পাদক এবং ২০১২ সালে ৬ষ্ঠ কংগ্রেসে মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী চেয়ারম্যান ও মোঃ হারুনুর রশীদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

বিজ্ঞাপন

সংগঠনটির সর্বশেষ কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর। যুবলীগের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে যুবলীগের সপ্তম জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় সভায় শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান ও মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক করে দায়িত্ব অর্পণ করেন।

যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই প্রথম প্রতিক্রিয়ায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, ‘যুবলীগের একজন চেয়ারম্যান হিসেবে নয়, একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থেকে কাজ করব, আপনারা আমার শক্তি হবেন, আমার বাবা শেখ মণি, বঙ্গবন্ধুর ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের পক্ষে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখার জন্য এই সংগঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ত্যাগ ও তার কন্যার দেশের প্রতি হৃদয়ের ভালোবাসা থেকে আমি সাহস পাই। তাই আজ আমি আপনাদের সামনে বলতে চাই, আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হচ্ছে আমি সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে তা পালন করব।’

দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে নতুন আঙ্গিকে যুবলীগকে ঢেলে সাজান যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল। অতীতের কিছু ভুল ভ্রান্তি শুধরে যুবলীগকে ইতিবাচক ধারায় ফিরিয়ে আনেন তারা। শেখ মণির সুযোগ্য উত্তরসূরী শেখ ফজলে শামস পরশের মিশনারী ও ভিশনারী লিডারশীপে নতুন গতি ফিরে পায় যুবলীগ। যুবলীগ কর্মীদের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর সত্যিকারের আদর্শ বাস্তবায়ন করে প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার আপ্রাণ চেষ্টা শুরু করেন তিনি। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় যুবলীগ আজ যুবসমাজের প্রাণের সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

শুধু রাজপথের আন্দোলন নয়, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে মানবিক কর্মকান্ডে জনমনে ব্যাপক আলোড়ন, মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করেছে যুবলীগ। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত, মানুষ নানা সংকটে জর্জরিত ঠিক তখনি রাজপথের লড়াই-সংগ্রামের সংগঠন যুবলীগ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নির্দেশে যুবলীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নাগরিক সচেতনতায় মাঠে নেমেছিল।

বিজ্ঞাপন

প্রথমে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান ও মাস্ক বিতরণ করে সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে লকডাউন শুরু হওয়ায় পথচারী, ভাসমান মানুষের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেছে। ২৪ ঘণ্টা নাগরিক সেবা প্রদান করেছে। যুবলীগের কর্মী থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা যার যার সাধ্য অনুযায়ী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে পবিত্র রমজান মাসে ও শোকার্ত আগস্টে মাসজুড়ে দুস্থদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ যুবলীগের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে।

শেখ মণি’র যোগ্য উত্তরসূরির হাতে দায়িত্বে আসার দ্বিতীয় বছরে মুজিববর্ষের কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ‘গাছ লাগাই, জীবন বাঁচাই’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে যুবলীগ। ফলজ, বনজ এবং ওষধি- এই তিন রকম বৃক্ষরোপণে অংশ নিয়েছেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। এই নির্দেশনার পর মহানগর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড পর্যায়সহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সংগঠনের পাশাপাশি বক্তিগত উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করেছেন সততা ও নিষ্ঠার সাথে।

প্রধানমন্ত্রীর সকল মানবিক কর্মসূচীর সফল বাস্তবায়নে সবার আগে, সবার পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। করোনার সময় যখন ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। ঠিক তখনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সারাদেশে যুবলীগের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছায় কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে। কৃষকের পাকা ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে। এমনকি ধান মাড়াই করে গোলায় ভরে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, করোনায় আক্রান্তের ভয়ে যখন পরিবারের আত্মীয়-স্বজন করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন কাজে এগিয়ে আসেনি, সেই দুঃসময়ে করোনায় মৃত ব্যক্তির জানাজা থেকে শুরু করে দাফন কাজ সম্পন্ন করেছে আওয়ামী যুবলীগের নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে এ এক অন্যন্য দৃষ্টান্ত। গতবছর দুর্গাপূজার সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে যে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল তাদের মোকাবেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় যুবলীগ রেখেছে সাহসী ভূমিকা। সম্প্রীতি সমাবেশের আয়োজন করে জেলায় জেলায় প্রতিরোধ গড়ে তোলা, মন্দিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি যুবলীগের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও মাঠে ছিল।

করোনা মহামারী চলাকালীন বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রমের মধ্যে যুবলীগ সবচেয়ে বেশি প্রশংসা অর্জন করেছে, ভূমিহীনদের জন্য অভূতপূর্ব আবাসনের উদ্যোগ নিয়ে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রায়ন প্রকল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এ কর্মসূচি হাতে নেয় যুবলীগ, যা এখনো চলমান। যুবলীগই বাংলাদেশের একমাত্র রাজনৈতিক সংগঠন যারা ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ভূমিহীনদের ঘর উপহার রাজনৈতিক পরিমন্ডলে বিরল মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শেখ ফজলে শামস পরশ ও মাইনুল হোসেন খান নিখিল যুবলীগের নেতৃত্বে আসার পর রাজপথের যুবলীগ গত ৩ বছরে পরিণত হয় মানবিক যুবলীগে।

কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে দাবিতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ, ১০ ডিসেম্বর এর আল্টিমেটাম, দেশকে অচল করার হুমকিতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বিরূদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় রাজপথে আবার আপন চেহারায় ফিরছে শেখ মণি’র যুবলীগ শেখ পরশের সাহসী ও সূদুরপ্রসারী নেতৃত্বে।

উপমহাদেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী এই যুব সংগঠন ১১ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উদযাপন করবে তাদের ৫০ বছর পূর্তি ও সুবর্ণ জয়ন্তী। এ উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছে যুব মহাসমাবেশ। মহাসমাবেশকে সামনে রেখে বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ জানান, করোনা সংক্রমণের পর এই প্রথম কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতিহাসের সবচেয়ে বৃহৎ যুব সমাবেশে যুবলীগ প্রমাণ করতে চায় এদেশের যুব সমাজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ। এই দেশের উন্নয়ন আর অগ্রগতির বিরূদ্ধে যারা অবস্থান নিয়ে অগ্নি সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের ভাবধারায় ফিরিয়ে নিতে চায় যুবলীগের নেতৃত্বে তাদের রুখে দেবে এদেশের যুবসমাজ।

আওয়ামীলীগ সভাপতি, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা যে স্বপ্ন নিয়ে শেখ ফজলে শামস পরশকে চেয়ারম্যান ও মো: মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে সাধারণ সম্পাদক করে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, সেটা ইতিমধ্যে সফলতা অর্জন করেছে যুবলীগের এই নেতৃত্বে। পরশ-নিখিলের সাহসী নেতৃত্বে আগামীর পথচলায় সকল বাধা অতিক্রম করে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে সকল ইতিবাচক কর্মকান্ডের সফল বাস্তবায়নে মাঠে থাকবে যুবলীগের সকল নেতাকর্মীরা। গৌরব-ঐহিত্য-সংগ্রামের পথচলায় সবার আগে সবার পাশে থাকবে যুবলীগ এমন প্রত্যাশা এই দেশের যুব সমাজের।

লেখক: ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন