বিজ্ঞাপন

‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না, খেলা হবে’

December 4, 2022 | 5:12 pm

সারাবাংলা টিম

পলোগ্রাউন্ড থেকে: ‘খেলা হবে’ স্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ‘সংবিধান সংশোধনের দিবাস্বপ্ন ভুলে যান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভুলে যান। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর পলোগ্রাউন্ডে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনি বলেন- সরকার নাকি আপনাদের ঘুম নষ্ট করছে। আরে ঘুমটা তো আসলে নষ্ট হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার। দেশের মানুষ যাতে কষ্ট না পায়, শান্তিতে ঘুমাতে পারে, সেই চিন্তায় শেখ হাসিনা ঘুমাতে পারেন না।’

জনসভায় বিপুল জনসমাগমের প্রসঙ্গ টেনে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘খেলা হবে। ফখরুল সাহেব, আপনি এসে দেখে যান। ইতিহাস সৃষ্টি করেছে শেখ হাসিনার পলোগ্রাউন্ডের মহাসমাবেশ। এক মহাসমুদ্র! কর্ণফুলীর সব ঢেউ, বঙ্গোপসাগরের ঢেউ- সব ঢেউ আজ এখানে, চট্টগ্রাম শহরে এসে দেখে যান। বীর চট্টলা জেগেছে। কান পেতে শুনুন মহাসাগরের গর্জন। শুনতে না পেলে আমীর খসরু, আবদুল্লাহ আল নোমান আর মীর নাছিরকে বলুন শুনতে।’

বিজ্ঞাপন

বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের দেশে বহু মায়ের বুক খালি করেছে, সন্তানহারা মায়ের কান্না, স্বামীহারা বধূর কান্না… বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীকে যারা জামিন দিয়েছে, যারা শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে, সেই দলের নাম বিএনপি- বাংলাদেশ নালিশ পার্টি। কর্মীরা কষ্ট করে বিএনপির সমাবেশে আসে, তাবু টানিয়ে, মশার কামড় খেয়ে, লোটা-কম্বল নিয়ে পড়ে থাকে। আর ফখরুল সাহেবরা থাকেন এসি রুমে। তাদের কাছে শুধু টাকা আর টাকা। দুবাইয়ের টাকা। টাকার বস্তা নিয়ে সমাবেশ করেন তারা।’

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্র, উন্নয়ন, অর্জনের জন্য শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। খেলা তো হবেই। এই ডিসেম্বরেই খেলা হবে।’

জনসভায় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন চট্টগ্রামে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের জন্য অনেক করেছেন। এই ঋণ আমরা চট্টগ্রামবাসী কোনোদিন শোধ করতে পারব না। একটি বিষয়, কালুরঘাট সেতু, আপনি (শেখ হাসিনা) মরহুম এমপি বাদল ভাইকে আমার সামনে কথা দিয়েছিলেন- সেতুটি করে দেবেন। আমরা জানি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ডেডিকেটেড রেললাইন হচ্ছে। কালুরঘাটে রেলসেতুর সঙ্গে একটি ডেডিকেটেড সড়ক সেতুর ঘোষণা আপনার কাছ থেকে চট্টগ্রামবাসী শুনতে চায়।’

বিজ্ঞাপন

আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘জিয়া, বিএনপি, খালেদা, এরশাদ মিলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বন্দী করেছিল। জননেত্রী শেখ হাসিনা সেই বন্দী গণতন্ত্রকে মুক্ত করে ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ বিএনপির মুখে শুনি গণতন্ত্র আর ভোটের কথা। লজ্জা করে না? এই বিএনপিই রাতের অন্ধকারে ভোট চুরি করেছিল, হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট নিয়েছিল। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে বিএনপি নেতাদের অনেক তর্জন-গর্জন শুনছি। মির্জা ফখরুল সাহেবকে পরিষ্কার করে বলতে চাই- বাড়াবাড়ি করলে পরিণতি ভালো হবে না। ইট মারলে পাটকেল খেতে হবে। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকা করা হবে।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘একটি অশুভ শক্তি বলছে- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না, নির্বাচন করতে দেবে না। এই বাংলাদেশের জনগণ কোনো অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতার মসনদে দেখতে চায় না। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনই যথেষ্ঠ। চট্টগ্রামের জনসভা প্রমাণ করেছে, আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে আবার জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাবে, শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকের জনসভায় সমুদ্রের ঢেউ আর মানুষের ঢেউ যেন একাকার হয়ে গেছে। জনসভায় যত মানুষ হয়েছে, তার চেয়ে ৮-১০ গুণ বেশি মানুষ হয়েছে বাইরে। মির্জা ফখরুল সাহেব হুমকি দিচ্ছেন- ১০ ডিসেম্বর নাকি বিএনপি ঢাকা দখল করবে। ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ করেছিল। ১০ ডিসেম্বরও এই আগুন সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানি বাহিনীর মতো দেশের জনগণের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হবে।’

আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও বাহাউদ্দিন নাছিম, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি এম এ সালাম এবং দক্ষিণের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন