বিজ্ঞাপন

আধুনিক যন্ত্রের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা

December 5, 2022 | 3:25 pm

আব্দুর রউফ পাভেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

নওগাঁ: জেলার রাণীনগর উপজেলায় আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। শ্রমিক সংকট দূর করতে, স্বল্প সময়ে জমি চাষ করতে, জমিতেই ধান কাটা-মাড়াইসহ সময় ও খরচ বাঁচানোয় জনপ্রিয়তা পাচ্ছে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি। আর এসব যন্ত্র সংগ্রহে প্রতিবছরই ভর্তুকি প্রদান করছে সরকার। যা ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন কৃষক। একইসঙ্গে সফল হচ্ছে কৃষিকে আধুনিকায়ন করার সরকারি কর্মসূচি।

বিজ্ঞাপন

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বছরের প্রতি মৌসুমে সরকারের পক্ষ থেকে ভুর্তকিতে সিডার পাওয়ার ট্রেলার, হার্ভেস্টার মেশিন, গার্ডেন ট্রেলার, ধান মাড়াইয়ের মেশিনসহ নানা ধরনের কৃষি যন্ত্রগুলো প্রদান করা হচ্ছে। পুরাতন চাষাবাদ থেকে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কৃষিতে দেশের কৃষকদের যুক্ত করতে সরকারের এই পদক্ষেপ দারুন প্রভাব ফেলেছে। কৃষি যান্ত্রিকরণের কারণে কম সময়ে ও কম খরচে চাষাবাদের পাশাপাশি ফলনও বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক গুণ। যেসব কৃষকদের কৃষি যন্ত্রগুলো নেওয়ার সামর্থ নেই সেই বিষয়টি সমাধান করার লক্ষ্যে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষি সমবায় সমিতির মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মেশিনগুলো প্রদান করা হয়েছে। যেকোনো কৃষক এই যন্ত্রগুলো ভাড়া নিয়ে তাদের চাষাবাদের কাজে ব্যবহার করতে পারছেন। এছাড়াও অল্প জমি চাষের জন্য গার্ডেন ট্রিলার মেশিনটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে।

উপজেলার রাণীনগর বাজারের টুটুল বলেন, ‘বাগানসহ অন্যান্য ছোট ছোট পরিত্যক্ত জায়গায় বড় পাওয়ার ট্রেলার মেমিন দিয়ে চাষ করা সম্ভব নয়। তাই আমি কৃষি অফিস থেকে একটি গার্ডেন ট্রেলার মেশিন নিয়েছি। মেশিন দিয়ে আমার বাগানসহ ছোট ছোট পরিত্যক্ত জায়গা ইচ্ছে মাফিক চাষ করে এখন বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করছি। ওই মেশিন দিয়ে আশেপাশের মানুষেরও চাহিদা পূরণ করছি। গার্ডেন ট্রেলার মেশিন নিয়ে অনেক উপকৃত হয়েছি।’

উপজেলার রাজাপুর গ্রামের কৃষক হামিদুল হক বলেন, ‘চলতি আমন মৌসুমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের জন্য তেমন শ্রমিক খুঁজতে হয়নি। হার্ভেস্টার মেশিন দিয়ে প্রতি বিঘা জমির ধান ২ হাজার টাকা করে কাটা ও মাড়াই করে নিয়েছি। এতে করে আমার খরচ ও সময় অনেক কম লেগেছে। এই সব মেশিন পাওয়াতে আমরা নানাভাবে উপকৃত হচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মূল চালিকা শক্তিই হচ্ছে কৃষি। তাই কৃষিকে পুরাতন পদ্ধতিতে রেখে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। তাই কৃষিকে আধুনিকায়ন করতে বর্তমান সরকারের পরিকল্পনাকে মাঠ পর্যায়ে শতভাগ বাস্তবায়ন করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকদের পুরাতন চাষাবাদ পদ্ধতি থেকে ফিরিয়ে এনে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কৃষি যান্ত্রিকরণের দিকে নিয়ে আসতে চলতি আমন মৌসুমে ভুর্তকিতে ৫টি সিডার পাওয়ার ট্রেলার মেশিন পাঁচজন কৃষককে প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ১৪টি গার্ডেন ট্রেলার মেশিন ইতিমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে এই মেশিনটি কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।’

শহীদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘জমি ফেলে না রেখে একই জমিতে একাধিক ফসলের দ্বিগুণ ফলন পেতে এই কৃষি যান্ত্রিকরণের কোনো বিকল্প নেই। একসময় দেশের সকল কৃষকই আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে সকল চাষাবাদ করবেন বলে আমি আশাবাদী। এতে করে দেশের কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন তার সঙ্গে সরকারের কোষাগারে জমা হবে দ্বিগুণের চেয়ে বেশি রাজস্ব।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন