বিজ্ঞাপন

সাড়া ফেলুক সারাবাংলা

December 5, 2022 | 5:45 pm

বিভুরঞ্জন সরকার

আজকাল প্রিন্ট সংবাদপত্রের সংখ্যাও যেমন অনেক, তেমনি অনলাইন পোর্টালের সংখ্যাও কম নয়। সংবাদমাধ্যের সংখ্যা বাড়ছে ঠিকই কিন্তু ঠিক ঠিক সংবাদ কি পাওয়া যাচ্ছে? আমি যা জানতে চাই, যা জানলে আমার উপকার সেটা আমাকে না জানিয়ে আমার আগ্রহ নেই সে বিষয় আমাকে জানানো কেন?

বিজ্ঞাপন

আজকাল মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে অনেক কথা হয়। বলা হয়, সরকার কথা বলতে দেয় না। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, ইত্যাদি। কথা যদি বলতে দেওয়া না হয়, তাহলে প্রতিদিন এত এত সংবাদপত্রে কি ছাপা হয়? অকথা কুকথা? নিউজপোর্টারগুলোতে তাহলে থাকছে কি?

বলা হতে পারে, কাজের কথা কম, অকাজের কথা বেশি। অর্থাৎ আমরা প্রতিদিন গণমাধ্যমে যা পাচ্ছি তার বেশিরভাগ আবর্জনা। গণমাধ্যমের একজন কর্মী হিসেবে আমি অবশ্য এটা মনে করি না যে, আমি পাঠকদের সামনে প্রতিদিন আবর্জনা উগলে দেই। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে নেতিবাচক খবর বেশি থাকে, ইতিবাচক কম। কারণ পাঠকও খারাপ খবরই পড়তে চান বেশি। এখানে পাঠক রুচি বদলানোর ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের কোনো উদ্যোগ বা ভূমিকা আছে বলে মনে হয় না।

সারাবাংলা.নেট নামের পোর্টালটি পাঁচ বছর অতিক্রম করে ছয় বছরে পা রাখলো, এটা একটি বড় ঘটনা। এই সময়ে আরও অনেক পোর্টাল নিশ্চয়ই আত্মপ্রকাশ করেছে এবং কোনো কোনোটির হয়তো অকাল মৃত্যুও হয়েছে। সারাবাংলা টিকে আছে, এটা এর সাংবাদিক ও অন্য সংশ্লিষ্ট সবার সাফল্যের প্রকাশ। সারাবাংলার সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। জন্মলাভ করাই সব নয়, টিকে থাকা, নামযশখ্যাতি নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই বড় কথা। খবর চাই, মতামত চাই, চাই জীবনচর্চার নানা বিষয়। শিল্পসাহিত্য তথা সুকুমার চিত্তবৃত্তির উন্মেষও চাই। আর এসবের জন্য চাই দূরদৃষ্টি এবং সৃজনশীল মনোভাব। আশা করবো, সারাবাংলা টিমে এর সব কিছুরই সমাহার ঘটবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা যেহেতু একটি গণমাধ্যম তাই এর ছয় বছরের যাত্রালগ্নে দু-একটি কথা বলার লোভ সামলাতে পারছি না। বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থাকা না-থাকা নিয়ে বিতর্ক আছে। কেউ মনে করেন দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে আসছে, আবার কেউ মনে করেন, কোনো সমস্যা নেই, কথা তো বলা যাচ্ছে। এত সংবাদপত্র ছাপা হচ্ছে, এত সব টিভি চ্যানেল চলছে। এগুলো তো মতপ্রকাশের স্বাধীনতারই চিহ্ন।

তবে সরকার পক্ষ যে সমালোচনা পছন্দ করে না – এটা ঠিক। শুধু বর্তমান সরকারের আমলেই গণমাধ্যমের ওপর বা স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর অসহিষ্ণুতা দেখানো হচ্ছে ব্যাপারটা তেমনও নয়। গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর আমল ছাড়া আর সব আমলেই হয়েছে। তবে আমরা যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সেই সরকারকেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণকারী বলে মনে করে থাকি। কারণ বর্তমানটা আমাদের কাছে যতটা জ্বলজ্বলে, অতীতটা ততটাই ধুসর।

আরএসএফ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বলেছে, দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা প্রায়ই তাঁদের অপছন্দের সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন, অন্যদিকে সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে ও হয়রানি করতে মামলা-মোকদ্দমার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের বেশির ভাগ গণমাধ্যমের মালিকানা কয়েকটি বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর। তাঁরা একে দেখেন প্রভাব সৃষ্টি ও সর্বোচ্চ সুবিধা লাভের হাতিয়ার হিসেবে।

বিজ্ঞাপন

এই মালিকেরা স্বাধীন সম্পাদকীয় নীতি নয়, বরং সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখাকে অগ্রাধিকার দেন। এর ফলে সরকারের লোকজনই ঠিক করে দেন বেসরকারি টিভি চ্যানেলের টক শোর অতিথি কারা হবেন। এতে আরও বলা হয় মূলধারার গণমাধ্যম ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সমস্যাগুলো সামনে আনে না। এমনকি তারা উগ্রবাদী ইসলামি গ্রুপগুলো সম্পর্কেও কিছু প্রকাশ বা প্রচার করে না। এসব গ্রুপ অতীতে সেক্যুলার লেখক-সাংবাদিকদের হত্যা করেছে, এখন তাঁদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

অর্থাৎ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শুধু সরকারের হাতে বিপদগ্রস্ত তা নয়, মালিকপক্ষেরও এ ক্ষেত্রে ভূমিকা বা দায় আছে। দেশের গণমাধ্যমগুলোতে এখন সংকট দ্বিবিধ। একদিকে সরকার, অন্যদিকে মালিকপক্ষ । কার দায় কতটুকু তা নিয়ে সততার সঙ্গে তেমন আলোচনা হয় না। অনেক গণমাধ্যমেই সাংবাদিকদের নিয়মিত বেতন-ভাতা দেওয়া হয় না। ইচ্ছেমতো নিয়োগ-ছাঁটাই চলে। করোনাকালেও অনেক সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। মালিক পক্ষের কাছে অধিক সংবেদনশীলতা প্রত্যাশা করা হলেও তারা মূলত কঠোরতার পরিচয় দিয়ে থাকেন। সাংবাদিকদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়গুলো সরকারকেও সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করতে দেখা যায় না। সরকার যেসব গণমাধ্যমে দেদারসে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, ভুয়া প্রচার সংখ্যা দেখিয়ে যারা বেশি মূল্যের বিজ্ঞাপন বাগিয়ে নিচ্ছে, শুল্কমুক্ত নিউজপ্রিন্ট নিচ্ছে, সেসব মালিক বা গণমাধ্যম যদি সাংবাদিকদের ঠিকমতো বেতন পরিশোধ না করে তাহলে এক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ অবশ্যই দরকার। পোশাক শিল্পে ‘কমপ্লায়েন্স’ বলে একটি শব্দ চালু হয়েছে। গণমাধ্যমের জন্যও তেমন কিছু ভাবা প্রয়োজন। সাংবাদিকদের কাছে সততা, সাহসিকতা এবং বস্তুনিষ্ঠতা আশা করলে তাদের সম্মানজনকভাবে জীবন ধারণের নিশ্চয়তাও দিতে হবে। সাংবাদিকের জীবন হাঁসের জীবন নয়। হাঁস কাদা-প্যাকের মধ্যে থেকেও গা-ঝাড়া দিয়ে সাফসুতরো হয়ে চলতে পারে। সাংবাদিকদের পক্ষে সেটা সম্ভব নয়। তারা মানুষ। অন্য সব পেশাজীবী মানুষের যেমন মানবিক ত্রুটি-দু্র্বলতা আছে, কোনো কোনো সাংবাদিকেরও তেমন থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।

সমাজের অন্য শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে যেমন দুর্নীতি-অসততা আছে, তেমনি সাংবাদিকদের মধ্যেও আছে। তবে এরমধ্যে মাত্রা ভেদ আছে। ধান্ধাবাজ সাংবাদিক আছেন। স্বল্প বেতন এবং অনিয়মিত বেতনের কারণে সাংবাদিকদের কেউ কেউ ‘হাতপাতা’ স্বভাব রপ্ত করতে বাধ্য হন। আমাদের দেশে গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের এক ধরনের ‘ধান্ধা’র জীবন বেছে নিতে বাধ্য করেন। ঢাকার সাংবাদিকদের থেকে মফস্বলের সাংবাদিকদের জীবন আরো দুর্বিষহ। বেশির ভাগ মফস্বল সাংবাদিক একটি নিয়োগপত্র এবং পরিচয়পত্র ছাড়া আর কিছু পান না। কোনো কোনো পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল কিছু মাসোহারা দিলেও তা অতি সামান্য এবং অনিয়মিত। তাহলে মফস্বল সাংবাদিকের জীবন চলে কীভাবে? নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো যায় কিন্তু নিজের খাওয়াটা তো থাকতে হবে!

সাংবাদিকদের সত্য সন্ধানের তাগিদ অহরহ দেওয়া হয়। প্রশ্ন হলো, কোন সত্য সন্ধান করবেন একজন সাংবাদিক। ব্যক্তি সাংবাদিকের কি আলাদা কোনো অস্তিত্ব আছে? আমি যদি অনুসন্ধানী একটি প্রতিবেদন তৈরি করি সেটা প্রচার বা প্রকাশের ক্ষমতা তো আমার নেই। সেটা তো মালিক বা সম্পাদকের হাতে। তার ব্যবসায়িক স্বার্থের সঙ্গে আমার প্রতিবেদন সাংঘর্ষিক হলে সেটা তো কোনো দিন আলোর মুখ দেখবে না।

বিজ্ঞাপন

এক সময় ধনিক গোষ্ঠীর লুটপাটের কাহিনী প্রকাশ করে পাঠকপ্রিয় হয়েছিল সাপ্তাহিক ‘একতা’। এখন কি কোনো গণমাধ্যম ধনিক গোষ্ঠীর লুটপাটের কাহিনী ধরাবাহিকভাবে প্রকাশ করবে? আমাদের দেশে ধনিক গোষ্ঠী তো গড়েই উঠেছে লুটপাটের মাধ্যমে। লুটেরা পুঁজির মালিকরাই তো এখন দেশের রাজনীতি ও গণমাধ্যমের নিয়ন্তা। গণমাধ্যমের মালিকানা এবং পরিচালনার ধরন বদল না হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বিষয়টি প্রশ্নবোধক হয়ে থাকবে বলে মনে হয়। সাংবাদিকদের বেঁচে থাকার মতো বেতন-ভাতা নিশ্চিত না করে তাদের কাছে সৎ সাংবাদিকতা আশা করাও দুরাশা। কারণ এখন ‘সেই সত্য রচিবে যা তুমি, ঘটে যা তা সব সত্য নহে। কবি, তব মনোভূমি রামের জন্মস্থান, অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো’।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রায়ই অভিযোগ করেন, সরকার সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন করছে। তিনি মনে করেন, ‘সত্য উদ্ঘাটন করাই তো সাংবাদিকদের কাজ’। কোনো সন্দেহ নেই, সত্য উদ্ঘাটন করাই সাংবাদিকদের কাজ। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন কি এটা মির্জা সাহেবদের মনে ছিল? বিএনপি আমলে কি দেশে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন কম হয়েছে? বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। হুমায়ুন কবির বালু, মানিক সাহা, শামসুর রহমান, দীপঙ্কর চক্রবর্তী খুন হয়েছিলেন বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে। কোনো হত্যাকাণ্ডের কি সঠিক তদন্ত ও বিচার হয়েছে? আমাদের দেশে ক্ষমতার বাইরে থেকে রাজনীতিবিদরা যা বলেন ক্ষমতায় গিয়ে তার বিপরীতটা করেন। রাজনীতির এই বৈপরীত্য সমাজের অন্য ক্ষেত্রগুলোকেও প্রভাবিত করে থাকে। গণমাধ্যম এবং সাংবাদিকতাও রাজনীতির ‘মন্দ’ হাওয়া থেকে মুক্ত নেই। মুক্ত থাকার বাস্তব কারণও নেই।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও সাংবাদিকদের ওপর মামলা-গ্রেপ্তারের মতো নিন্দনীয় ঘটনা ঘটছে। সরকারের কারো কারো মধ্যে অসহিষ্ণুতা দেখা যাচ্ছে। এটা সেই ‘রাজা যতো বলে পারিষদ দলে, বলে তার শতগুণ’-এর মতো কি? ধরে আনতে বললে বেঁধে আনার ঘটনা অনেক সময়ই ঘটে। তবে নির্যাতন-নিবর্তনের একটি ঘটনাও সমর্থনযোগ্য নয়। তুচ্ছ কারণে জেলজুমুমের শিকার হতে হলে সেটা মানা যায় না। পেছন দিয়ে হাতি চলে যাবে, আর সামনে সুই দেখলে হৃদকম্প হওয়াটা ভালো লক্ষণ নয়। সরকারে থাকলে সমালোচনা সহ্য করার মানসিক শক্তিও থাকতে হবে। হঠাৎ হঠাৎ মাথা গরম করা ঠিক না।

সরকারের পায়ের নিচে শক্ত ভিত থাকলে তো অতিরিক্ত নার্ভাস হওয়ার কথা নয়। ‘ধরা যাবে না, ছোঁয়া যাবে না, বলা যাবে না কথা’- দেশে এমন পরিস্থিতি কারা তৈরি করছে? সরকার নিজেদের জনপ্রিয় বলে দাবি করে। কোনো জনপ্রিয় সরকারের দেশ চালাতে হাঁটু কাঁপার কথা নয়। সাংবাদিক বা স্বাধীনভাবে যারা লেখালেখি করেন তাদের জন্য ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করা মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কি এসবে অনুমোদন আছে? নাকি হুঁকোর চেয়ে ছিলিমের গরম বেশি?

সরকারে থাকলে বিরোধিতা হবেই। বিরোধিতার চেয়ে প্রশংসা অনেক সময় বেশি ক্ষতির কারণ হয়। যে সরকার শুধু প্রশংসা শুনতে চায় সে তো হীরক রাজা। হীরক রাজা প্রজাদের মগজ ধোলাই করে নিজেকে ‘ভগবান’ বানানোর চেষ্টা করে কিন্তু শেষ পর্যন্ত ‘খানখান’ হয়েছে।

সবশেষে বলার কথা একটাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন দিয়ে সাংবাদিকদের হাত–পা বেঁধে ফেলার অপকৌশল বা অপচেষ্টা থেকে সরকারকে সরে আসতেই হবে। বিরুদ্ধ মত প্রকাশ ততক্ষণ বাধা দেওয়া যাবে না, যতক্ষণ সেই মত অন্যের জীবন সংহার বা দাঙ্গা-হাঙ্গামার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে।

আমাদের দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কতটুকু অবাধ এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত কি না তা নিয়ে বিতর্ক চলুক। কিন্তু সরকারের কাছে অসহিষ্ণুতা কাম্য নয়। সরকারের ত্রুটিবিচ্যুতি ধরিয়ে দিলে তাকে শত্রু না ভেবে বরং বন্ধু ভাবা উচিত। রবীন্দ্রনাথের সেই লাইনগুলো মনে রাখা উচিত : নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো / যুগ জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আলো / সবাই মোরে ছাড়তে পারে বন্ধু যারা আছে / নিন্দুক সে ছায়ার মতো থাকবে পাছে পাছে।

সারাবাংলা সাড়া ফেলুক সারাবাংলার পাঠকদের মধ্যে।

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন