বিজ্ঞাপন

মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারবেন না রামগড়ের ইউএনও

December 6, 2022 | 4:27 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতকে মোবাইল কোর্ট (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত করেননি চেম্বার জজ আদালত। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ১২ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে রিটকারী আইনজীবী হাসান এম এস আজিম বলেন, রামগড়ের ইউএনওকে মোবাইল কোর্ট (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) পরিচালনা থেকে বিরত থাকতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ গত ৪ ডিসেম্বর স্থগিত করেননি চেম্বার আদালত। এ বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ১২ ডিসেম্বর দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন আদালত।

এর আগে ২০ নভেম্বর খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার দিনমজুর আবুল কালাম ও রুহুল আমিনকে দেওয়া সাজা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। অন্য এক রুলে তাদের (ক্ষতিগ্রস্ত দুই দিনমজুর) কেন পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

জনপ্রশাসন সচিব, খাগড়াছড়ির ডিসিসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

বিজ্ঞাপন

ঘটনাস্থলে উপস্থিত না থেকে নিজ কার্যালয়ে বসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দুইজন দিনমজুরকে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় এ আদেশ দেন আদালত।

এর আগে ২৩ অক্টোবর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দু’জন দিনমজুরকে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাতের ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা কেড়ে নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটে ওই দুই দিনমজুর আবুল কালাম ও রুহুল আমিনকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়। আবুল কালাম ও রুহুল আমিন এ রিট দায়ের করেন।

গত ৫ আগস্ট দৈনিক আজকের পত্রিকায় ‘প্রশাসন-বিজিবি বিরোধ: কারাগারে দিনমজুর’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জমি নিয়ে বিরোধ চলছে খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মধ্যে। আর সেই বিরোধের সাথে-পাঁচে না থেকেও কারাগারে যেতে হলো দুই দিনমজুরকে। গত ১ আগস্ট রামগড় উপজেলা প্রশাসন ও বিজিবি বিরোধপূর্ণ জায়গায় বেড়া দেওয়ার কাজ করতে গেলে ইউএনও খোন্দকার ইখতিয়ার উদ্দিন আরাফাত দু’জন দিনমজুরকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেন। এ সময় তিনি দিনমজুর দুজনকে পাঁচ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। দু’জন দিনমজুর হলেন- অফিস টিলার আবুল কালাম ও দারোগা পাড়ার রুহুল আমিন।

এর আগে গত বছর এ জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দেওয়ায় তিনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা দেখিয়ে কারাদণ্ড দেন নিরীহ দিনমজুর আলী আহাম্মদকে।

বিজ্ঞাপন

গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর আলী আহাম্মদ দিনমজুরকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নিজের গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যান ইউএনও। পরে রাতে এক আদেশে তাকে এক মাসের কারাদণ্ড দেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারের হতদরিদ্রদের ঘর নির্মাণের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ দেন খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার ময়ুরখীল গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর আলী আহাম্মদ। এবার আরেক ইউএনওর প্রতিশোধের বলি হয়ে জেলে গেলেন দুই দিনমজুর।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন