বিজ্ঞাপন

আঙুলের ছাপে হাজিরা বাতিল চেয়ে চসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের বিক্ষোভ

January 3, 2023 | 7:43 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ভবনের মূল ফটক অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন পরিচ্ছন্ন কর্মীরা। আঙুলের ছাপের মাধ্যমে হাজিরা পদ্ধতি বাতিল, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ী করা, কর্মীদের নিয়োগপত্র দেওয়া এবং বকেয়া পাওনা পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনে নামেন তারা। এসময় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী কার্যালয়ে ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর টাইগারপাসে নগর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন প্রায় ২০০ পরিচ্ছন্ন কর্মী। এসময় তারা চার দফা দাবি নিয়ে স্লোগান দেন।

বিক্ষোভের খবর পেয়ে তিনজন কাউন্সিলর সেখানে যান। তারা হলেন- জামালখান ওয়ার্ডের শৈবাল দাশ সুমন, ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের হাসান মুরাদ বিপ্লব ও লালখান বাজার ওয়ার্ডের আবুল হাসনাত মো. বেলাল। কাউন্সিলররা মেয়রের সঙ্গে কথা বলে বিক্ষোভরত পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাছে আসেন। মেয়র দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে কাউন্সিলররা জানালে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা সেখান থেকে সরে যান।

এসময় পরিচ্ছন্ন কর্মীদের উদ্দেশে কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ‘অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়ী করার নথি আমরা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রীপরিষদে পাঠিয়ে দিয়েছি। ডিজিটাল হাজিরা সংক্রান্ত ঝামেলায় যাদের বেতন কাটা হয়েছে বা পাওনা আছে তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে পাওনা টাকা পরিশোধ করা হবে।’

বিজ্ঞাপন
ছবি: সারাবাংলা

ছবি: সারাবাংলা

ঘটনাস্থলে এক পরিচ্ছন্ন কর্মী সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফিঙ্গারপ্রিন্টে হাজিরা পদ্ধতি চালুর পর থেকেই আমাদের বেতন কেটে রাখা হচ্ছে। আমরা মাসের ৩০ দিনই কাজ করি। ইদ-পূজাতেও আমাদের ছুটি নেই। আমি গত নভেম্বরে প্রতিদিনই কাজে এসেছি। ফিঙ্গারপ্রিন্টও দিয়েছি। কিন্তু মেশিনে আমার চারদিনের হাজিরা তোলা হয়নি। আমার ১৮০০ টাকা কেটে রাখা হয়। এ ঘটনা অনেকের সঙ্গে হয়েছে। আমরা ফিঙ্গারপ্রিন্টে হাজিরা পদ্ধতি বাতিল চাই।’

জানতে চাইলে চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্টাফদের নিয়মিত হাজিরা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল সিস্টেম চালু করা হয়েছে। তবে পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ডিজিটাল হাজিরা দিতে রাজি নন। তারা চান আগের নিয়মে ম্যানুয়ালি হাজিরা দিতে। ফিঙ্গারপ্রিন্টে ডিজিটাল হাজিরার মাধ্যমে উপস্থিতি নিশ্চিত করায় অনেকের বেতন কাটা হয়েছে। এ কারণে তারা এটা বাতিল চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন।’

বাতিল হবে কি না- জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘আমরা ফিঙ্গারপ্রিন্টেই হাজিরা নেব। ভুয়া নামে হাজিরা দেখিয়ে বেতন তোলা, কর্মস্থলে না এসেও হাজিরা দেখানোর সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। যদি মেশিনে কোনো সমস্যা থাকে সেটা আমরা খতিয়ে দেখব।’

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ভুয়া নামে হাজিরা দিয়ে বেতন নেওয়া কিংবা কর্মস্থলে না এসেও হাজিরা দেখানো— এ ধরনের নানা অনিয়মের কারণে বরাবরই সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চসিকের ‘ডোর টু ডোর’ বজ্র্য অপসারণ প্রকল্প। দায়িত্ব পালনের সময় চসিকের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন এ অনিয়ম উদঘাটন করেছিলেন।

এসময় বলা হয়েছিল, ‘ডোর টু ডোর’ প্রকল্পের অধীনে আউটসোর্সিংয়ের নামে ভুতুড়ে নিয়োগ হয়েছে। অস্তিত্বহীন অনেকের হাজিরা দেখিয়ে তোলা হচ্ছিল কোটি কোটি টাকার বিল। পরবর্তীতে ওই প্রকল্পসহ ৪টি বিভাগের কর্মচারীদের জন্য ডিজিটাল হাজিরা চালু করে চসিক।

এতে চসিকের ৪১ ওয়ার্ডে কর্মরত ডোর টু ডোর, পরিচ্ছন্নতা বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ ও সচিবালয় শাখার প্রায় সাড়ে চার হাজার কর্মীর ডিজিটাল হাজিরার আওতায় আসে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইসি/এনএস

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন