বিজ্ঞাপন

মাটির ওপর নাকি নিচ দিয়ে মেট্রোরেল— সম্ভাব্যতা যাচাই শুরু

January 31, 2023 | 7:12 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঢাকার পর চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল চালু করতে প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নেওয়া প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে সময় লাগবে দুই বছর। চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংস্থা প্রধানদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে মাটির ওপর-নিচ উভয়দিকেই মেট্রোরেল নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউ’র মোহনা হলে চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা যাচাই কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়। ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে কাজের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ পেয়েছে কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (কোইকা)। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণ করবে।

অনুষ্ঠানে ডিটিসিএ’র অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন জানান, কোইকা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মূল কাজ করবে। ডিটিসিএ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন তাদের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।

বিজ্ঞাপন

প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ৭০ কোটি ৬৩ লাখ টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত। এতে কোইকা দেবে ৫৭ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা দেবে সরকার।

২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেকে) বৈঠকে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে চট্টগ্রাম নগরীতে পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও মেট্রোরেল বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এরপর ওই বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর পরিবহন মাস্টারপ্ল্যানসহ মেট্রোরেলের সমীক্ষার জন্য প্রিলিমিনারি সার্ভে কাজ’ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ প্রথমে মাটির নিচ দিয়ে ‘পাতাল রেলপথে’ মেট্রোরেল চালুর প্রস্তাব দেন। এতে সায় দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীও।

বিজ্ঞাপন

তাদের প্রস্তাবে সমর্থন দিয়ে ওই সভায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘চট্টগ্রাম শহর অত্যন্ত জনবহুল। শহরের ভেতর অনেক এলাকায় সড়কের ওপরে মেট্রোরেল করার উপযোগিতা নেই। আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল করার কথা ভাবতে হবে। এতে তিনগুণ খরচ বেশি হবে। তারপরও আন্ডারগ্রাউন্ডে মেট্রোরেল নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে ভালো হবে।’

প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ মাটির নিচ দিয়ে মেট্রোরেল চালুর পক্ষে ফের মতামত দেন। অনুষ্ঠানে কোইকা’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক টনি ইলহো চং জানান, মাটির নিচে ও ওপরে উভয়দিকেই মেট্রোরেল চালুর সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রামে মেট্রোরেল হবে এটা চট্টলবাসীও কখনো আশা করেনি। মেট্রোরেলের জন্য অনেক বছর ধরে আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে আবেদন-নিবেদন করে আসছিলাম। মেট্রোরেলের জন্য আপাতত ফিজিবিলিটি স্টাডির শুরু হয়েছে। আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে চট্টগ্রাম শহরে জনবসতি আরও বাড়বে। গণপরিবহনে চাপ কমাতে মেট্রোরেল সহায়ক হবে।’

সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘আমি মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পরপরই চট্টগ্রাম শহরে মেট্রোরেল করার প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিলাম। তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদও বলেছেন, মেট্রোরেল হলে চট্টগ্রাম আরও নান্দনিক শহরে পরিণত হবে।’

বিজ্ঞাপন

সড়ক ও জনপথ বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্ল্যাহ নুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান রওশন আরা মান্নান, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরীফা খানম, বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং গুন এবং সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন