বিজ্ঞাপন

ইনস্টিটিউট বন্ধ হলেও আন্দোলনে অনড় চবি শিক্ষার্থীরা

February 5, 2023 | 5:10 pm

চবি করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চারুকলা ইনস্টিটিউট এক মাস বন্ধ করে দিযেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইনস্টিটিউটকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা। এদিকে বন্ধ ঘোষণার পরও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। এসময় মূল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ১০০ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর আড়াইটার দিকে শেষ হয়েছে। এ সময় ‘লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’; ‘দাবি মোদের একটাই, চারুকলা ক্যাম্পাসে চাই’; ‘একুশ’শ একর জানে না, চারুকলার ঠিকানা’— স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ।

চারুকলার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফরিন বিনতে আলম তমা বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি, মূল ক্যাম্পাসে চারুকলা আসতে চাই। আমাদের আন্দোলনের ৯৫ দিন পার হয়ে গেছে। এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। আমাদের সুনির্দিষ্ট কিছুই দেখাতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমাদের একটাই দাবি চারুকলা মূল ক্যাম্পাসে প্রত্যাবর্তন করা। হঠাৎ করে ইনস্টিটিউট বন্ধ করে দিয়ে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া কোনো সমাধান হতে পারে না। আমরা ক্লাস করলে সেটা ক্যাম্পাসে এসে করব।’

চারুকলা ইনস্টিটিউট মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জহির রায়হান অভি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসের অনেক শিক্ষার্থী একাত্মতা প্রকাশ করছেন। আমরা অবশ্যই শিক্ষার্থীদের পাশে চাই। আমরা প্রশাসনের কোনো সাড়া পাইনি। সিন্ডিকেট যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেখানে কোনো স্থানান্তরে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আসেনি। ইনিস্টিউট বন্ধ ঘোষণা করে আমাদের আন্দোলন বন্ধ করার চেষ্টা করছেন কি না- প্রশ্নই থেকে যায়। আমাদের সময়ের দরকার। আমরা অবশ্যই কর্মসূচি পালন করব। পরবর্তী কর্মসূচি জানিয়ে দেওযা হবে। যেহেতু আমাদের নিজেদের ঘর, হোস্টেল হারিয়ে ফেলছি। সেকারণে সিদ্ধান্ত নিতে একটু বেগ পাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে, ঝুঁকিমুক্ত ক্লাসরুম, ভবন ও ছাত্রাবাস নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য বাস, ডাইনিং ও ক্যান্টিন চালুসহ ২২ দফা দাবিতে ২০২২ সালের অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে আন্দোলনে নামেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ৩ নভেম্বর থেকে তারা চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নেওয়ার এক দফার আন্দোলন শুরু করেন।

প্রায় আড়াই মাস ধরে টানা আন্দোলনে অচল হয়ে থাকা চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে গত ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রামে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এরপর আন্দোলনকারীদের নিয়ে ফটক খুলে চারুকলার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন মন্ত্রী-উপমন্ত্রী। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে তাদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান।

শিক্ষার্থীরা প্রথমে ক্লাসে ফিরতে অস্বীকৃতি জানালে ২২ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটে যান। তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা সাতদিনের জন্য আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে ক্লাসে ফেরেন।

বিজ্ঞাপন

সাত দিনের ক্লাস শেষে তাদের দাবি মেনে না নেওয়ায় গত ৩১ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সকাল থেকে ফটকে তালা লাগিয়ে ক্লাস ছেড়ে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন চবির চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

পরে গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় চারুকলা ইনস্টিটিউট আগামী এক মাসের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি বন্ধ থাকবে ছাত্রাবাসও। সেজন্য রাত ১০টার মধ্যে ক্যাম্পাস ছাড়তেও বলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের। তবে আগামী এক মাস অনলাইনে ক্লাস চলবে বরে জানানো হয়।

সারাবাংলা/সিসি/এনএস

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন