বিজ্ঞাপন

বিশ্বের শীর্ষ ১০০ সবুজ কারখানার ৫০টিই বাংলাদেশে

February 6, 2023 | 7:20 pm

এমদাদুল হক তুহিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: তৈরি পোশাক খাতের সবুজ কারখানা (গ্রিন ফ্যাক্টরি) বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ। প্রতিনিয়তই দেশের নতুন নতুন কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরি তকমা পাচ্ছে। পোশাক খাতের উদ্যোক্তারাও কর্মপরিবেশ নিশ্চিতে প্রচুর বিনিয়োগ করছেন। ফলে বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি সবুজ কারখানার (গ্রিন ফ্যাক্টরি) মধ্যে বাংলাদেশেরই এখন ৫০টি। থাকা বাকি ৫০টি কারখানা অন্যান্য দেশের।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশে এখন সবুজ কারখানার সংখ্যা ১৮৭ টি। ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ডিজাইন (এলইইডি) গ্রিন ফ্যাক্টরি বা সবুজ কারখানার সার্টিফিকেশন দিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেশের পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে।

তথ্যমতে, শীর্ষ ১০০টি সবুজ কারখানার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চীন, দেশটিতে সবুজ কারখানা রয়েছে ১০টি। তৃতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তানে কারখানা রয়েছে নয়টি। ভারত ও শ্রীলঙ্কায় ছয়টি করে সবুজ কারখানা রয়েছে। ভিয়েতনাম ও তাইওয়ানে শীর্ষ ১০০টি সবুজ কারখানার মধ্যে রয়েছে চারটি করে। আর আমেরিকা ও মিয়ানমারে রয়েছে দু’টি করে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, আরও একটি পোশাক কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষে থাকা বাংলাদেশে এখন সবুজ কারখানা ১৮৭টি। এছাড়া গ্রিন ফ্যাক্টরির তকমা পেতে প্রক্রিয়ায় রয়েছে আরও ৫৫০টির বেশি কারখানা।

ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিলের (ইউএসজিবিসি) তথ্যমতে, বাংলাদেশে এখন গ্রিন ফ্যাক্টরি ১৮৭টি। এর মধ্যে প্লাটিনাম ক্যাটাগরির ৬৩টি, গোল্ড ১১০টি, সিলভার ১০টি ও সার্টিফাইড চারটি। এছাড়া ৫৫০টির বেশি কারখানা গ্রিন ফ্যাক্টরি হতে রেজিস্ট্রেশন বা পাইপলাইনে রয়েছে। নতুন করে সবুজ কারখানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে চট্টগ্রামের কেডিএস আইডিআর লিমিটেড। এর আগে, গত মাসে গাজীপুরের জেএল ফ্যাশন লিমিটেড ও জেকেএল এডমিন অ্যান্ড ডাইকেয়ার বিল্ডিং এবং নরসিংদির ভাটপারার আমানত শাহ ফ্যাব্রিক্স লিমিটেড সবুজ কারখানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

আরও পড়ুন:

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা দেশের পোশাক খাতে গ্রিন রেভুল্যাশন আনার চেষ্টা করছি। দেশীয় পোশাক খাতে ভালো কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের চেষ্টা করছি। আমরা চাই এখানে ডে-নাইট কাজ করার সুযোগ তৈরি হোক। বিদ্যুৎ খরচ যাতে কম হয় সে লক্ষ্যে কাজ করছি। পানি পুনর্ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। বর্তমানে দেশে ১৮৭ টি গ্রিন ফ্যাক্টরি রয়েছে। এরমধ্যে ৬৩টিই প্ল্যাটিনাম ক্যাটাগরির। বিশ্বের টপ ১২টি কারখানার মধ্যে বাংলাদেশেই ১০টি। টপ ১০ এর মধ্যে আটটি, আর টপ ১০০ এরমধ্যে ৫০টি। এটি বাড়ছে, ১৫ দিন আগেও ছিল ৪৯টি। সবুজ কারখানায় দেশের পোশাক খাত বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে।’

জানতে চাইলে বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) সভাপতি কাজী ইফতেখার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটি কারখানা যখন সবুজ হয় তখন ক্রেতারা ওই কারখানার প্রতি আকৃষ্ট হয়। সবুজ কারখানা বাড়তে থাকলে যে নেগেটিভ প্রচারণা রয়েছে দেশের বিরুদ্ধে সেটি ধীরে ধীরে কেটে যাবে। সবুজ কারখানা হলে কর্তৃপক্ষের যে বিশেষ বেনিফিট হবে তা নয়, তবে তা দেশের ইমেজ বাড়ায়। বাইরের দেশে বাংলাদেশের ইমেজ বাড়ে।’

জানতে চাইলে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি ও বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটি অবশ্যই গর্বের ও গৌরবের। এটি সিম্বল অব ব্রান্ডিং। সবুজ কারখানা বৃদ্ধি ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে সহযোগিতা করবে। তবে সব ফ্যাক্টরি যদি গ্রিন হয়ে যায়, তবুও ক্রেতারা কিন্তু ফেয়ার প্রাইজ দিতে চাইবে না। ক্রেতারা এত কম প্রাইজ দেয় যে উদ্যোক্তারা অনেক সময় খরচই উঠাতে পারে না। শীর্ষ ১০০ কারখানার মধ্যে ৫০টিরই অবস্থান বাংলাদেশে হওয়ায় এটি আমাদের ব্র্যান্ডিংয়ে অনেক সহায়তা করবে।’

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সবুজ কারখানা নিয়ে প্রচুর কাজ করেছি। এ খাতে প্রচুর বিনিয়োগ করেছি। সে কারণেই শীর্ষ ১০০টি সবুজ কারখানার মধ্যে ৫০টিরই অবস্থান বাংলাদেশে। এটি খুবই গৌরবের বিষয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিংও।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা এক ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছি। বৈশ্বিক সংকট চলছে। ক্রেতাদের ভোগ কমে গেছে। ডলারের মূল্য বেড়ে গেছে। দেশে গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়তি। পোশাক উৎপাদনে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তার মাঝে এই খবর প্রশান্তিদায়ক।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন