February 9, 2023 | 7:25 pm
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড এলাকা থেকে ১৫ দিন আগে চুরি হওয়া তিন বছর বয়সী এক শিশুকে ফেনী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে শিশুটি চারবার হাতবদল হয়েছে এবং তিনবার বেচাকেনা হয়েছে। প্রতিবার হাতবদলে দর বেড়েছে শিশুটির।
এ ঘটনায় তিন নারীসহ ছয়জনকে বুধবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) গ্রেফতার করেছে ইপিজেড থানা পুলিশ। এরা হল- সুমি শীল (৪৫), লাকী আক্তার (৩৭), মো. আকিব (১৯), বেলাল হোসেন (৪০), হাবিবুর রহমান মজুমদার (৩৩) এবং রোজিনা আক্তার (৩২)।
‘সংঘবদ্ধ’ চক্রের সদস্যদের মধ্যে সুমি, লাকী ও আকিব মিলে শিশুটিকে চুরি করে এবং বাকি তিনজন বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল করিম সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, নগরীর ইপিজেডের জোড়া খাম্বা এলাকায় শিশুটির বাসা। তার মা পোশাক কারখানার কর্মী ও বাবা দিনমজুর। তাদের সাত বছর বয়সী এক মেয়েও আছে।
গত ২৫ জানুয়ারি দুপুরে ভাই হৃদয়কে নিয়ে তার বোন তাদের বাসার অদূরে রেললাইন সংলগ্ন সাইক্লোন শেল্টারের কাছে খেলতে গিয়েছিল। এসময় দুই নারী গিয়ে শিশুটির বড় বোনকে ২০ টাকা দিয়ে চকলেট কিনতে দোকানে পাঠায়। এ সুযোগে তারা হৃদয়কে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা ইপিজেড থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলা তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। সেখানে দেখা যায়, দুই নারীসহ তিনজন শিশুটিকে কোলে করে নিয়ে রিকশায় করে চলে যাচ্ছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইপিজেড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রানা প্রতাপ বণিক জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে সুমি, লাকী ও আকিবকে শনাক্ত করে নগরীর পতেঙ্গা এলাকা থেকে বুধবার আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা শিশুটিকে ৩০ হাজার টাকায় ফেনীতে বেলালের কাছে বিক্রির তথ্য দেয়।
এ তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত শিশুটির বাবা-মাকে নিয়ে ফেনীর দাগনভূঁইয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেলালকে আটক করে পুলিশ। বেলাল জানায়, সে শিশুটিকে হাবিবের কাছে দিয়েছে। হাবিবকে আটকের পর সে শিশুটিকে রোজিনার কাছে দিয়েছে বলে জানায়। পরে দাগনভূঁইয়া উপজেলার মাছুমপুর থেকে রোজিনাকে আটক করে শিশুটি উদ্ধার করা হয়।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) শাকিলা সোলতানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিশুটি চারবার হাতবদল হয়েছে এবং তিনবার বেচাকেনা হয়েছে। প্রতিবারই দর বেড়েছে এবং সর্বশেষ দর উঠেছিল ৩০ হাজার টাকা।'
‘গ্রেফতার ছয়জন সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তারা মূলত নিম্ন আয়ের লোকজনের সন্তানদের টার্গেট করে তাদের বাচ্চা চুরি করে এবং নি:সন্তান দম্পতিদের কাছে বিক্রি করে। যেসব শিশু ছোট এবং কথা বলতে পারে না, তাদের টার্গেট করে, যাতে সহজেই চুরি করে বিক্রি করে দেয়া যায়।’
গ্রেফতার ছয়জনকে শিশুটির বাবার দায়ের করা মামলায় বৃহস্পতিবার বিকেলে মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। দু’জন চুরির দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান এসআই রানা প্রতাপ বণিক।
সারাবাংলা/আরডি/ এনইউ