বিজ্ঞাপন

সীতাকুণ্ড বিস্ফোরণ: কারখানা মালিক বললেন— কারও হাত নেই

March 5, 2023 | 6:35 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর কারখানায় এসেছিলেন সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন উদ্দীন। তিনি বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডকে নিছক দুর্ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন। তবে কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে – এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মহান রাব্বুল আলামিনই ভালো জানেন।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (৫ মার্চ) বিকেলে উপজেলার ভাটিয়ারি ইউনিয়নের ছোট কুমিরায় ধ্বসংস্তূপে পরিণত হওয়া কারখানার সামনে আসেন মামুন উদ্দীন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

মামুন উদ্দীন বলেন, ‘১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ২৭ বছর ধরে এই কারখানা চলছে। আগে কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। যে প্রজেক্টে এটা হয়েছে, এটা নতুন। আমি এটাকে দুর্ঘটনাই বলব। এখানে কারও হাত নেই। মহান রাব্বুল আলামিনই এটা ভালো জানেন।’

শনিবার (৪ মার্চ) বিকেলে সীমা শিল্পগ্রুপের সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেড কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। এতে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ২২ জন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, সীমা অক্সিজেন অক্সিকো লিমিটেডে উৎপাদিত অক্সি-এসিটিলিন গ্যাস লোহার পাত কাটা ও লোহা গলাতে ব্যবহার হয়। বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় বিশেষ করে জাহাজভাঙ্গা ও স্টিল রি-রোলিং মিলে এই গ্যাস ব্যবহার করা হয়। প্রয়াত শিপব্রেকিং ব্যবসায়ী মোহাম্মদ শফির গড়ে তোলা কারখানাটি বর্তমানে তার তিন ছেলে মামুন উদ্দীন, আশরাফ উদ্দীন ও পারভেজ উদ্দীন পরিচালনা করেন।

তাদের মালিকানায় সীতাকুণ্ডের জাহানাবাদে এস ট্রেডিং নামে তাদের একটি জাহাজভাঙ্গা এবং বানু বাজার এলাকায় সীমা স্টিল রি-রোলিং মিল (এসএসআরএম) নামে একটি কারখানা রয়েছে।

বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া কারখানাটিতে সীমা গ্রুপের মোট পাঁচটি অক্সিজেন প্ল্যান্ট আছে। এর মধ্যে তিনটি অক্সিকো অক্সিজেন লিমিটেডের, যেগুলো বন্ধ ছিল। দু’টি সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের। যেগুলো চালু অবস্থায় ছিল। ফলে বিস্ফোরণে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের পর কারখানাটিতে প্রয়োজনীয় অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আনুষাঙ্গিক অনুমতিপত্র ছিল না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মামুন উদ্দীন বলেন, ‘যত ধরনের লাইসেন্স দরকার সবগুলো মেইনটেইন করেই কারখানা চালাই। ফায়ার সেফটি সংক্রান্ত ব্যবস্থা পর্যাপ্ত আছে। ফায়ার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা হয়েছে। আমাদের সব আপ টু ডেট।’

বন্ধ থাকা প্ল্যান্টগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছয় মাস ধরে প্ল্যান্টগুলো বন্ধ আছে। সেখানে ফায়ার এক্সটিংগুইসার আছে।’

তদন্ত কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অসহযোগিতার কিছু নেই। তদন্ত কমিটি যা যা তথ্য নেবে, সব দেব।’

বিজ্ঞাপন

হতাহতদের শ্রম আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং আহতদের চিকিৎসার পাশাপাশি কারখানা থেকে তাদের বেতন নিয়মিত দেওয়া হবে বলে জানান মামুন উদ্দীন।

এদিকে, বেলা পৌনে ১২টার দিকে দুর্ঘটনাস্থলে যান সীমা গ্রুপের ব্যবস্থাপক মো. আব্দুল আলীম। তার সঙ্গে যাওয়া কোম্পানির সুপারভাইজার মো. সানাউল্লাহ সাংবাদিকদের জানান, বিস্ফোরণের সময় মাত্র ছয় জন শ্রমিক প্ল্যান্টে ছিলেন। এর মধ্যে তিনজন নামাজ পড়তে বাইরে বের হয়েছিলেন। জাহাজ কাটার কাজ কম থাকায় অক্সিজেন উৎপাদন কমে যাওয়ায় কারখানায় শ্রমিকও কম ছিল বলে জানান তিনি।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন