বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর জীবনে মার্চ

March 6, 2023 | 5:35 pm

অরুণ কুমার গোস্বামী

মার্চ মাসে বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেছেন। এ মাসেই চূড়ান্ত পর্যায়ে তিনি তার স্বপ্ন বুনন করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নিজে প্রস্তত হয়ে দেশবাসীকে ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে’ ‘সংগ্রামের’ আহ্বান জানিয়েছেন এই মার্চ মাসে। একইভাবে বাংলাদেশের জন্ম, স্বপ্ন বুনন ও তা সফল করার সংগ্রাম শুরুর মাস মার্চ। এভাবে বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীন বাংলাদেশের মধ্যে আত্মা ও রক্তের অচ্ছেদ্য বন্ধন সৃষ্টি করেছে মার্চ মাস।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের পাঁচ দশক আগে ১৯২০ সালের মার্চ মাসের ১৭ তারিখ তৎকালীন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে বঙ্গবন্ধু জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বয়স যখন ৫১ বছর পূর্ণ হয়েছিল, তখন ১৯৭১ সালের ৭ ও ২৬ মার্চ জাতীয় জীবনে সর্বাধিক আকাঙ্খিত ‘মুক্তি ও স্বাধীনতা’ সংগ্রামের নিমিত্তে ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে’ তোলা এবং ‘যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা’ করার জন্য বঙ্গবন্ধু আহ্বান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নিজের জীবনের এবং বাংলাদেশের জাতীয় জীবনের গতি-প্রকৃতি পরিবর্তনকারী ঐতিহাসিক মূহুর্ত আবির্ভূত হয়েছিল ১৯৭১ এ। যাকে বলা হয় ‘ডিফাইনিং মোমেন্ট’ বা কাল নির্ধারণী মূহুর্ত। এ ধরনের ঐতিহাসিক মূহুর্ত বাঙালি জাতির জীবনে আর কখনও আসে নাই, যেটি ১৯৭১ এর মার্চে এসেছিল। এ মূহুর্তের জন্য বঙ্গবন্ধু সারা জীবন জেল-জুলুম, ভোগ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে এই মূহুর্তের জন্য তিনি তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। এই মূহুর্তের জন্য বাঙালি জাতি হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করেছিল।

১৯৭১ বছরটি প্রকৃতপক্ষে বাঙালি জাতির ‘ডিফাইনিং মোমেন্ট’ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। বাঙালির জাতীয় জীবনে এই ‘ডিফাইনিং মোমেন্ট’ নিয়ে আসার জন্য অনেক মহান নেতা সচেষ্ট হয়েছেন, সংগ্রাম করেছেন কিন্তু তাদের সেইসব প্রচেষ্টা ও সংগ্রাম সফলতার মুখ দেখতে পায় নাই। বঙ্গবন্ধুর জন্মের পঞ্চাশ বছর পর তার জন্মভূমি বাংলাদেশের ইতিহাসের গতি-প্রকৃতির পুরোটাই তার নেতৃত্বে ও নির্দেশনায় নির্ধারিত হয়েছে। ১৯৭১ এর মার্চ মাসের ঘটনাবলী তার জ্বলন্ত উদাহরণ। ভালোবাসার এক অকৃত্রিম ও অদৃশ্য গ্রন্থি বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির মধ্যে এক অচ্ছেদ্য বন্ধন সৃষ্টি করেছিল। তাইতো তিনি বাঙালি জাতির আত্মার আত্মায় পরিণত পেয়েছিলেন। সংগ্রামী বাঙালি জাতির হৃদয়ের স্পন্দন তিনি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাই তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালিরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মুক্তিযুদ্ধে প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের সহযোগিতায় বিজয় অর্জন সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিয়েছিল।

ধর্মীয় উপনিবেশ পাকিস্তান সৃষ্টির মূল দলিল হচ্ছে লাহোর প্রস্তাব। ১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ পাঞ্জাবের লাহোরে সে সময়ের নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অধিবেশনে উপমহাদেশের মুসলমানদের জন্য স্বতন্ত্র আবাসভূমির প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছিল। পাকিস্তান স্বাধীন হবার পর এই দিনটিকে সমগ্র পাকিস্তানব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গে, পাকিস্তান দিবস হিসেবে পালিত হত। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মভূমি তৎকালীন (পূর্ব) বাংলায় সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। সে সময়ের (পশ্চিম) পাকিস্তানে ২৩ মার্চ ‘পাকিস্তান দিবস’ হিসেবে পালিত হলেও, (পূর্ব) বাংলায় সেভাবে পালিত হয়নি। প্রসঙ্গক্রমে স্টানলি উলপার্টের বই ‘জুলফি অব পাকিস্তান’ এ উল্লেখিত একটি পর্যবেক্ষণ উদৃত করা যেতে পারে। উলপার্ট বলছেন, ‘মুসলিম লীগের লাহোর প্রস্তাব অনুমোদিত হবার একত্রিশতম বছর পূর্তি উৎসব হিসেবে ১৯৭১ এর মার্চের তেইশ তারিখটি পশ্চিম পাকিস্তানে উদযাপিত হয়েছিল, যেটি প্রতি বছর পাকিস্তান দিবস হিসেবে স্মরণ করা হতো। কিন্তু সেই সকালে ঢাকার বেশীরভাগ সংবাদপত্রে ‘বাংলা দেশের মুক্তি’ শিরোনাম দিয়ে বিশেষ সংখ্যা বের করা হয়েছিল। এতে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বার্তা সন্নিবেশিত হয়েছিল, ‘আমাদের দাবী ন্যায়সঙ্গত এবং সেকারণে জয় আমাদেরই’, এটি শেষ হয়েছিল ‘জয় বাংলা’ বলে।

বিজ্ঞাপন

‘পাকিস্তান দিবসে’ ১৯৭১ এর ২৩ মার্চ বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে তৎকালীন (পূর্ব) বাংলায় প্রতিরোধ দিবস পালিত হয়েছিল। সন্ধ্যায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত তার বাসভবনে বিশাল জন সমাবেশে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার নীচে দাঁড়িয়ে, বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন, ‘তাদের ন্যয্য ও বৈধ দাবী-দাওয়া অর্জনের জন্য আমাদের জনগণ রক্ত দিতে শিখেছে এবং এদেরকে বাধা দেওয়ার জন্য যে কোন হস্তক্ষেপ, নির্যাতন এবং শক্তিপ্রয়োগ, সোজা কথায়, হবে একটি ব্যর্থ চেষ্টা।’

১৯৭১ এর ১ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। ইয়াহিয়া খানের এ ধরণের ঘোষণার পর মওলানা ভাসানি বলেছিলেন, ‘তোমরা মুজিবকে চেন না। সে নয় বছর যাবৎ আমার সেক্রেটারি ছিল। আমার জীবনের ৩১ জন সেক্রেটারির মধ্যে সে ছিল সর্বোত্তম। আমি তাকে এমনকি আমার পুত্রদের চেয়েও বেশী ভালোবাসি। সে কখনও জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে না। ’

১৯৭০ এর ৪ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য জেনারেল ইয়াহিয়া খান ঢাকায় এসেছিলেন। এ সময় পাকিস্তানের গোয়েন্দারা ইয়াহিয়া খানকে, সহকর্মীদের সাথে বঙ্গবন্ধুর কথাবার্তার গোপনে ধারণকৃত একটি টেপ রেকর্ড বাজিয়ে শুনিয়েছিলেন, সেখানে বঙ্গবন্ধু তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের বলছেন, উলপার্ট উল্লেখ তার বইয়ের ১৫২ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর উক্তি উল্লেখ করেছেন। যেখানে বঙ্গবন্ধু বলছেন, ‘অর্থাৎ আমার লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা; নির্বাচনের পরে আমি লিগ্যাল ফ্রেম ওয়ার্ক অর্ডার (এল এফ ও) টুকরো টুকরো করে ফেলব। একবার নির্বাচন শেষ হয়ে গেলে কে আমাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে ?’

বিজ্ঞাপন

এ সময়গুলোতে বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি সব সময় লোকে লোকারণ্য থাকত। বাংলাদেশ কীভাবে পরিচালিত হবে তা এখান থেকেই বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করতেন। পাকিস্তান সরকার যে ঘোষণা দিতেন তা এ দেশের জনগণ অনুসরণ করত না। তারা অনুসরণ করত বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্ত ও ঘোষণা। মূলত ১৯৭১ এর মার্চ মাস থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ডি ফ্যাক্টো ‘স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার’ কার্যকর হয়ে গিয়েছিল। একদিকে রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়ার নির্দেশ যেত, অপরদিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কস্থ বঙ্গবন্ধুর বাসভবন থেকে তিনি নির্দেশ দিতেন। বাংলার মানুষ বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনে চলতেন। অফিস, আদালত, ব্যাংক, বীমা, স্কুল-কলেজ, গাড়ি, শিল্প কারখানা সবই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ মেনেছে। ইয়াহিয়ার সব নির্দেশ অমান্য করে অসহযোগ আন্দোলনে বাংলার মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া ইতিহাসে বিরল ঘটনা।

মূলত ৭ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুই রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। ১৬ মার্চ ঢাকায় ক্ষমতা হস্তান্তর প্রশ্নে মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক শুরু হয়। ২৫ মার্চ আলোচনা ব্যর্থ হবার পর সন্ধ্যায় ইয়াহিয়ার ঢাকা ত্যাগ। ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে। আক্রমন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা রাইফেল সদর দফতর ও রাজারবাগ পুলিশ হেডকোয়ার্টার।

বঙ্গবন্ধু ২৫ মার্চ রাত ১২ টা ২০ মিনিটে ইংরেজিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যার বাংলা অনুবাদ হচ্ছে, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণ, তোমরা যে যেখানেই আছ এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার সৈন্যবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’

এই ঘোষণা বাংলাদেশের সর্বত্র ওয়্যারলেস, টেলিফোন ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে প্রেরিত হয়। এর সঙ্গে সঙ্গে তিনি বাংলায় নিম্নলিখিত একটি বার্তা পাঠান- পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানা ইপিআর ঘাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমন করেছে এবং শহরের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে, আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছি। আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বীরত্বের সঙ্গে মাতৃভূমি মুক্ত করার জন্য শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। সর্বশক্তিমান আল্লাহর নামে আপনাদের কাছে আমার আবেদন ও আদেশ- দেশকে স্বাধীন করার জন্য শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যান। আপনাদের পাশে এসে যুদ্ধ করার জন্য পুলিশ, ইপিআর, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও আনসারদের সাহায্য চান। কোনো আপোস নাই। জয় আমাদের হবেই। পবিত্র মাতৃভূমি থেকে শেষ শত্রুকে বিতাড়িত করুন। সকল আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং অন্যান্য দেশপ্রেমিক প্রিয় লোকদের কাছে এ সংবাদ পৌঁছে দিন। আল্লাহ আপনাদের মঙ্গল করন। জয় বাংলা।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধূর এই বার্তা তাৎক্ষণিকভাবে বিশেষ ব্যবস্থায় সারা দেশে পাঠানো হয়। সর্বস্তরের জনগণের পাশাপাশি চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও যশোর সেনানিবাসে বাঙালি জওয়ান ও অফিসাররা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১.৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। এর তিনদিন পর তাকে বন্দি অবস্থায় পাকিস্তার নিয়ে যাওয়া হয়।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান এক ভাষণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং বঙ্গবন্ধুকে দেশদ্রোহী বলে আখ্যায়িত করেন। এর বিপরীতে ওই তারিখেই অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম. এ. হান্নান বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন।

১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানী অপারেশন সার্চলাইটের কার্যক্রম শুরু করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা, ইপিআর, রাজারবাগ পুলিশ লাইন, জগন্নাথ হল প্রভৃতি স্থানে নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষের উপর হামলা শুরু হয়েছিল। বাঙালিদের মুক্তিসংগ্রাম শুরু হওয়ার চূড়ান্ত মূহুর্তে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন মহলের পক্ষ থেকে বলা সত্ত্বেও তার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন ছেড়ে যাননি। এরপর পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তানের সামরিক আদালত বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে। ১৯৭১ সালের ২৩ আগস্ট, সোমবার এর বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন এর একটি হেড লাইন ছিল “পাকিস্তান : মুজিব’স সিক্রেট ট্রায়াল’। জীবদ্দশায় পরে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান একজন পরিদর্শককে বঙ্গবন্ধুর সাজা সম্পর্কে বলেছিলেন, “My generals want a trial and execution.”

১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে বিপ্লবী সরকার গঠন করা হয়। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে (মুজিবনগর) বাংলাদেশ সরকারের শপথগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পরিচালনায় মুক্তিযুদ্ধ শেষে ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানী বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জিত হয়। বাংলাদেশ লাভ করে স্বাধীনতা। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ধর্মীয় উপনিবেশ পাকিস্তানের মৃত্যুগহ্বর থেকে বঙ্গবন্ধু তার প্রিয় স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

লেখক: পরিচালক, সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ; ইনস্টিটিউশনালাইজেশন অব ডেমোক্র্যাসি ইন বাংলাদেশ গ্রন্থের লেখক। সাবেক ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ; সাবেক চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন