বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে সেজেছে ময়মনসিংহ, উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মী

March 10, 2023 | 1:56 pm

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

ময়মনসিংহ: পাঁচ বছর পর আগামীকাল শনিবার (১১ মার্চ) ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস মাঠে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে ময়মনসিংহ নগরী ছেঁয়ে গেছে ব্যানার-তোরণ, ফেস্টুনে। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ অলিগলিতেও শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র। গোটা নগরীতে নির্মিত হয়েছে বিশাল তোরণ।

বিজ্ঞাপন

বর্ণিল আলোকসজ্জা-রঙ্গিন ব্যানার, ফেস্টুন-বিলবোর্ডের শুভেচ্ছায় ময়মনসিংহে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। দলীয় অবস্থান দৃঢ় ও মনোনয়ন প্রত্যাশায় কেন্দ্রীয় নেতাদের নজর কাড়তে শুভেচ্ছার ঝাঁপি মেলেছেন অনেকেই। জনসভাকে সফল করতে দলের সব স্তরের নেতাকর্মীরা সরব হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও জনসভা নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এহতেশামুল আলম জানান, গোটা নগর জুড়ে সাজসাজ রব, এক উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। প্রতিটি উপজেলা-ইউনিয়নে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে জনসমাগম নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দশ লাখের ওপরে জনসমাগম হবে বলেও তিনি জানান।

দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়জ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, ‘দলীয় ভাবে ব্যাপক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এ জনসভাকে কেন্দ্র করে বিভাগীয় পর্যায়ে সব নির্বাচনী আসনগুলোতে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। সভাস্থলসহ গোটা নগরী জনসমুদ্রে পরিণত হবে।

বিজ্ঞাপন

সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে দেশবাসীর কাছে আস্থা অর্জন করেছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ময়মনসিংহকে বিভাগ, সিটি করপোরেশনসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন। আর এ কৃতজ্ঞতা থেকেই দলীয় সভানেত্রীকে স্বাগত জানাতে আমরা দিন-রাত এক করে যাচ্ছি।’

তিনিও আরও জানান, জনসভায় ১০ থেকে ১৫ লাখ লোকের সমাগম ঘটতে যাচ্ছে। জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনে এ অঞ্চলের সাংগঠনিক অবস্থা শক্তিশালী-গতিশীল হবে এবং নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙা হবে। যা আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ময়মনসিংহের জনসভায় এক লাখ লোকের সমাবেশ ঘটাতে চান গফরগাঁওয়ের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল।

গফরগাঁওয়ের সংসদ সদস্য ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল সারাবাংলাকে বলেন, ‘গফরগাঁও আওয়ামী লীগের জনপদ। স্বাধীনতার পর থেকে এই আসনটি আওয়মী লীগের। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহে আসছেন, এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের। ময়মনসিংহের সর্বত্র এখন আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। গফরগাঁও থেকে এক লাখ লোক আগামীকালের সমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছে, আমরা সে লক্ষ্যেই প্রস্তুতি নিয়েছি।’

তিনি আরও জানান, ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগের যেকোন সমাবেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের সমাবেশ ঘটে গফরগাঁও থেকে। এবারও সেই ধারা বজায় রাখতে চায় গফরগাঁও আওয়ামী লীগ। এরইমধ্যে গফরগাঁওয়ের প্রতিটি ইউনিয়নে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ১৮ দফা প্রস্তাব জানিয়েছে ‘জনউদ্যোগ’ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের। ‘জনউদ্যোগ’ আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি ও চাহিদায় আমাদের বিভাগ, সিটি করপোরেশন করে দিয়েছেন এবং ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা ফেরাতে খনন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। শিক্ষা, চিকিৎসা, ডুয়েল-ডাবল গেজ রেল লাইন স্থাপন, নগরবাসীর যানজট নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াসহ ময়মনসিংহের উন্নয়নে ১৮ দফা দাবি আমাদের।’

বিজ্ঞাপন

নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জেলা পুলিশের পাশাপাশি বাইরের জেলা থেকেও এখানে পুলিশ আসবে। প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ মঞ্চের প্রথম সারিতে নিরাপত্তায় থাকবে এপিবিএন। বিশাল জনসমাগমে পৃথক ট্রাফিক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তার প্রশ্নে যেসব বিষয় জড়িত প্রত্যেকটি বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেব না।’

আশপাশের এলাকা থেকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় যোগ দিতে ময়মনসিংহ থেকে ৮টি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন সুপার মো. নাজমুল হক খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ ঘিরে ১১ মার্চ গফরগাঁও, নান্দাইল, দেওয়ানগঞ্জ বাজার-জামালপুর, নেত্রকোণা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ, জারিয়া-ঝাঞ্জাইল রুটে ৮টি বিশেষ ট্রেন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউস ময়দানে সর্বশেষ এক জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ চার বছর পর আবারও এই নগরীতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সে সময় তিনি ১৯৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন করেছিলেন। এর আগে তিনিই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ময়মনসিংহকে বিভাগ, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়েছিলেন, যা চলমান রয়েছে। এবারও বিভিন্ন মেগা প্রকল্পসহ ১০২টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্থর উন্মোচনের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

সারাবাংলা/ইএইচটি/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন