বিজ্ঞাপন

‘বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাঙালি পরিণত হয়েছিল লড়াকু সেনায়’

March 17, 2023 | 10:37 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাঙালি জাতিকে এক করে যুদ্ধে ময়দানে নেয়া সম্ভব হতো না। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে স্বাধীন করে পরিণত হয়েছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালিতে।’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১৭ মার্চ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মেয়র একথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, ‘ছাত্রাবস্থায় বঙ্গবন্ধুর ডাকে নিজের জীবনের মায়া তুচ্ছ করে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম। অনেক সহযোদ্ধার প্রাণ গেছে, কিন্তু লড়াই থামেনি, প্রেরণা ছিল বঙ্গবন্ধু। লড়াই করে এনেছি স্বাধীনতা। ভীতু আর ভেতো বাঙালি বলে যাদের অবজ্ঞা করা হতো, বঙ্গবন্ধুর ডাকে সেই বাঙালি যোগ দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। দুর্বল বাঙালির একেকজন পরিণত হয়েছিল স্বাধীনতার লড়াকু সেনায়।’

শিশুদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে, তবে মুক্তির যুদ্ধ আজও শেষ হয়নি। সাম্য ও মানবিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে আমরা যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলাম, সেই যুদ্ধের চেতনা ও আদর্শ আমাদের বুকে ধারণ করতে হবে, লড়তে হবে সেই আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য।’

বিজ্ঞাপন

নগরীর শেখ রাসেল পার্কে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল, রুমকি সেনগুপ্ত, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, শিক্ষা কর্মকর্তা উজালা রানী চাকমা, জনসংযোগ ও প্রটোকল কর্মকর্তা আজিজ আহমদ।

আলোচনা সভার পর চসিক পরিচালিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এর আগে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনটির কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল ৯ টায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক দেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন:

জাতির জনকের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শুক্রবার নগরীর দামপাড়ায় শিল্পকলা একাডেমিতে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে জেলা প্রশাসন। সকাল সাড়ে ৯টায় শিল্পকলায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। বিভাগীয় কমিশনার ড. আমিনুর রহমান, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ ও একেএম সরোয়ার কামাল, বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক আবু সাইদ, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, শিল্প পুলিশের এসপি মো. সুলাইমান, রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মজিবুর রহমান পাটওয়ারী, জেলা পরিবার পরিকল্পনা দফতরের বিভাগীয় পরিচালক গোলাম মোহাম্মদ আজম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া পিবিআই, ট্যুরিস্ট পুলিশ, আরআরএফ, সিআইডি, নৌ-পুলিশ, জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা শিশু একাডেমি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, আনসার-ভিডিপি, এলজিইডি, বিআরটিএ, খাদ্য বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সরকার-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ দিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এরপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার আমিনুর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে কিন্তু মুক্তির যুদ্ধ এখনো চলমান। আমাদের দেশে এমন কিছু মানুষ আছে যারা দেশের উন্নতি সহ্য করতে পারছে না। তারা বিভিন্ন সময় গুজব ছড়িয়ে হোক বা অন্যান্য অপকর্মের মধ্যে দিয়ে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করার জন্য তৎপর হয়ে আছে। তাদের সফল হতে দেয়া যাবে না। বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে বুকে ধারণ করে কঠোর হাতে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’

সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণে আছে -এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এখানে মুক্তি কথাটির একটি অর্থ হল অর্থনৈতিক মুক্তি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বঙ্গবন্ধুর ১৮ মিনিটের ভাষণে দেশের মুক্তিকামী মানুষ আন্দোলনের শক্তি, উৎসাহ খুঁজে পায় যা পরবর্তীতে দেশের আপামর জনগনকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিল।’

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, ‘জাতির জনকের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটাতে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ:

জাতির জনকের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। সকালে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বন্দর ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এতে বন্দর কর্তৃপক্ষের সকল সদস্য ও বিভাগীয় প্রধান, সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারি এবং অবসরপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ছিলেন। এরপর শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সি অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা সভা, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবনী ও মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তথ্যচিত্র প্রর্দশন করা হয়। বিকেলে চট্টগ্রাম বন্দর স্পোর্টস কমপ্লেক্সে শিক্ষার্থীদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

সারাবাংলা/আইসি/এনইউ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন