বিজ্ঞাপন

পাকিস্তানিকরণকে পেছনে ঠেলে গণতন্ত্রায়নে অপরিহার্য শেখ হাসিনা

March 19, 2023 | 4:33 pm

অরুণ কুমার গোস্বামী

বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রায়ন’-এর বিপরীত শব্দ ‘পাকিস্তানিকরণ’। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পাকিস্তানিকরণের ধারক-বাহক রাজনৈতিক শক্তির বিভিন্ন মহলে দৌঁড়ঝাপের কারণে ‘গণতন্ত্রায়ন’ বনাম ‘পাকিস্তানিকরণ’ সম্পর্কীয় কথকতা প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। চলমান একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে শেষ হবে। অতএব তার আগেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতার জন্য ‘গণতন্ত্রায়ন’ বনাম বাংলাদেশ ধ্বংসকামী ‘পাকিস্তানীকরণ’ এর বিষয়গুলো সামনে চলে আসছে। ‘গণতন্ত্র’ বিষয়টি বাংলাদেশে রাজনীতির ন্যারেটিভে খুব সচরাচর ব্যবহৃত প্রধানতম উপাদান। এইসব ন্যারেটিভের অন্যতম প্রধান একটি বিষয় হচ্ছে গণতন্ত্র না থাকলে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। বর্তমান বাংলাদেশে এখন তাই হচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রায়ন’ এবং ‘উন্নয়ন’ একই সাথে অবস্থান করছে।

বিজ্ঞাপন

এদেশের উন্নয়নের জন্য যেমন ‘গণতন্ত্রায়ন’ প্রয়োজন, ঠিক একইভাবে ‘পাকিস্তানিকরণের বিরোধীতাও’ আরও বেশী প্রয়োজন। প্রকৃত গণতন্ত্রের কথা উঠলেই বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকারের প্রসঙ্গও চলে আসে। যদিও মূলধারার বিরোধীদল, এমনকি কখনো কখনো প্রাধান্যবিস্তারকারী রাজনৈতিক শক্তি বিষয়গুলোকে এড়িয়ে চলতে চায়, কিন্তু সমাজের এক অংশকে বঞ্চিত রেখে তো গণতন্ত্র হতে পারে না। কেবল বাংলাদেশই নয় সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস বলছে রাজনৈতিকভাবে সমাজের অপ্রধান সংখ্যালঘুদের বঞ্চিত রেখে হতে পারে ‘পাকিস্তানীকরণ’। অধিকার বঞ্চিত নিপীড়িত ও অসহায় পাকিস্তানের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বর্তমান বিলুপ্তপ্রায় অবস্থা তাই প্রমান করছে। যেখানে গণতান্ত্রিক ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গণতন্ত্রহীন ও মানব বিধ্বংসী পাকিস্তানের চিতাভস্মের ওপর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের কল্যাণকামী বৃক্ষ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের অভিমুখে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে চলেছে বর্তমান গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ১৯৭০ সালের নির্বাচন ছিল একটি ঐতিহাসিক ভাগ্যনির্ধারণী টার্নিং পয়েন্ট। একইভাবে এদেশের উন্নয়নের জন্য ২০০৮ সালের নির্বাচন ছিল একটি ঐতিহাসিক টার্নিং পয়েন্ট। আর এই দু’টি নির্বাচনই ছিল গণতন্ত্রায়নের লক্ষ্যে এবং পাকিস্তানীকরণের বিরুদ্ধে। দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক শক্তির কাছে এই দু’টি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নাতীত।

ধর্মীয় ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের অধীনে থাকাকালে একমাত্র গণতান্ত্রিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৭০ সালে। সেই নির্বাচনে এদেশের মানুষ নিরঙ্কুশভাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছিল। এই নির্বাচনের ভিত্তিতেই রচিত ম্যান্ডেট অনুসারে বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের ওপর চলমান শোষণ-বঞ্চনা, নিপীড়ন-নির্যাতনের ইতিহাস বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। একজন যোগ্য, বলিষ্ঠ, সাহসী, সৎ, দেশপ্রেমী, মানবতাবাদী ও দূরদর্শী নেতা হিসেবে জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু জনগণের চাওয়া-পাওয়াগুলোকে রাজনৈতিক স্বাধীনতা আদায়ের মরণপণ সংগ্রামের পথে সফলতার সাথে প্রবাহিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এভাবে এদেশের মানুষ গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার স্বাদ বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই পেয়েছে। তবে গণতন্ত্র চলমান থাকাকালে কোন কোন সময় সংকট আসতে পারে। এক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে আমেরিকান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এবং ‘দ্য এন্ড অফ হিস্ট্রি অ্যান্ড দ্য লাস্ট ম্যান’ এর লেখক ফ্রান্সিস ফুকুইয়ামা, গণতন্ত্রের সংকটকালে ‘আতঙ্ক নয়, ধৈর্য’ [. . .প্যাসেন্স, নট প্যানিক. . .] ধরাই দেশের রাজনৈতিক শক্তির জন্য উপযুক্ত কাজ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট, ২০১৪ সালের নির্বাচন বন্ধের জন্য পেট্রোল বোমা হামলা, পুলিশ হত্যা, প্রিজাইডিং ও পুলিং অফিসারদের ওপর হামলা, আগুন সন্ত্রাস এবং ১০ ট্রাক অস্ত্র চালান প্রভৃতি কি ‘ধৈর্য’ ধরার পরিচয় বহন করে?

বিজ্ঞাপন

১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারী দু’একটি দলের নেতা পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধ তথা স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধে সংযুক্ত হলেও, বেশীরভাগে আওয়ামী লীগ বিরোধীশক্তি বাংলাদেশ বিরোধীতায় তথা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সহযোগী সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রাজাকার, আলবদর, আলশামস, শান্তি কমিটি প্রভৃতি গঠন করেছে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ী হাতে গোনা কয়েকজন নেতাও পাকিস্তানীদের পক্ষাবলম্বন করেছিল বলে জানা যায়। যারা পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তথা পাকিস্তানের পক্ষে তখন সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে তারা এদেশের ইতিহাসে ‘গণহত্যা’, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ ও ‘যুদ্ধাপরাধ’ প্রভৃতি ঘৃণ্য শব্দ সংযুক্ত হতে সাহায্য করেছে! স্বাভাবিকভাবেই ধর্মীয় ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের অনুসারী এইসব ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলাম, নেজামে ইসলাম, মুসলিম লীগ প্রভৃতি গোষ্ঠী স্বাধীন বাংলাদেশে (অর্থাৎ যে মাতৃভূমির স্বাধীনতার বিরোধীতা তারা করেছিল) রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে, ‘গণতন্ত্রের নামে’ বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জেল হত্যার বিচার চিরতরে বন্ধ করার জন্য ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করে খুনী খোন্দকার মোশতাক! সামরিক বাহিনীতে চাকুরিকালে রাজনৈতিক ক্ষমতার স্বাদ পাওয়ার আশায় “গণতন্ত্রের নামে” এবং “গণতন্ত্র বাঁচাতে” কুখ্যাত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে সংবিধানের অংশে পরিণত করে জেনারেল জিয়াউর রহমান! তাও করা হয়েছিল এই গণতন্ত্রেরই নামে! ‘গণতন্ত্রের নামে’ বঙ্গবন্ধুর খুনীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়েছিল! জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকান্ড যারা ঘটিয়েছে সেইসব খুনীদের বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসে চাকুরি দেওয়া কোন ধরনের ‘গণতন্ত্র ও ‘আইনের শাসন’? প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েমকে পিস্তল দেখিয়ে যিনি পদত্যাগপত্রে সই করতে বাধ্য করেছিলেন, তিনি কোন ‘গণতন্ত্র রক্ষা’ করেছিলেন? ‘গণতন্ত্রের’ নামে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এসব করলেও এগুলোকে কোন মানদন্ডেই ‘গণতন্ত্র’ হিসাবে আখ্যায়িত করা যাবে না। প্রকৃতপক্ষে এগুলো ছিল পাকিস্তানীকরন প্রক্রিয়ার শক্তিশালী উপাদান। এভাবে দেখা যাচ্ছে ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে অর্জিত ‘গণতন্ত্র’ এর ঠিক বিপরীতে অবস্থান করছে ১৯৭৫ সালের হত্যাকান্ডের বিচার বন্ধের জন্য ইনডেমনিটি দেওয়ার জন্য পাকিস্তানীকরণ প্রক্রিয়ার অংশ তথাকথিত “গণতন্ত্র”। একইভাবে, ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে অর্জিত ‘গণতন্ত্র’ এর বিপরীতে অবস্থান করছে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী, গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের অধিকার দেওয়ার ‘গণতন্ত্র’। পাশাপাশি, এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের যেকোন সতর্ক পাঠক “খুনীদের ইনডেমনিটি দেওয়া গণতন্ত্রের” সাথে আইয়ুব খানের মার্শাল ল’ গাইডেড “গণতন্ত্রের” মিল খুঁজে পেতে পারেন!

সামরিক-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর পর, ২০০৮এর ডিসেম্বরের নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মহল সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অবাধ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। আন্দোলনের মুখে দেশের দ্বিতীয় সামরিক শাসক জেনারেল এরশাদের (প্রথম সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান) পতনের মাধ্যমে ১৯৯০ সালের দ্বিতীয় গণতান্ত্রিক ট্রাঞ্জিসনের পর (প্রথমটি হয়েছিল ১৯৭২ সালে) ২০০৮ সালে সবচেয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই সফল নির্বাচন বাংলাদেশকে একটি সম্ভাব্য সহিংস রাজনৈতিক সংকটের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে এনেছিল। যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (ডিএফআইডি)এর মতে ২০০৮ সালের নির্বাচন, ‘উন্নত শাসনের দিকে পরিচালিত হওয়ার কিছু লক্ষণ স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা গিয়েছে যা নাগরিকরা চায়’ বলে মনে হচ্ছে।

বাংলাদেশের ২০০৮ সালের নির্বাচন সম্পর্কে যুক্তরাজ্যের ডিএফআইডি-র প্রতিবেদনে ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৯১ সালকে সামরিক শাসনের অধীনে থাকার জন্য “গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান” গড়ে উঠতে না পারার কথা খুব স্পষ্ট এবং জোরালোভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপি এক সময় পাকিস্তানীকরণের অন্যতম বাহকের ভূমিকা পালন করেছে। এই দলটি ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ফেনী পর্যন্ত ভারত দখল করে নিবে’ বলত, ‘হরতালের কারণে খালেদা জিয়া ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাতে অপারগতা প্রকাশ করেছিল’, তারা এখন ভারতের অনুগ্রহ পাওয়ার জন্য হা-পিত্যেশ করছে। এসব দেখে, সম্রাট আলেকজান্ডার জীবিত থাকলে তার সেনাপতিকে হয়তো আবার বলতেন, ‘সত্যিই সেলুকাস বিচিত্র এই দেশ !’ ক্ষমতায় আসার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য বিএনপির নেতারা বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রের নেতা ও প্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ানো কোনক্রমেই গণতন্ত্রের স্বার্থে নয় বরঞ্চ ক্ষমতার স্বার্থে হচ্ছে, এমনটাই পর্যবেক্ষকমহলের অভিমত।

বিজ্ঞাপন

একবিংশ শতাব্দীকে বলা হয় এশীয় শতাব্দী। বলা বাহুল্য, আয়তনে বিশ্বে ৯৪তম ক্ষুদ্র ও জনসংখ্যায় বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম রাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ এবং আয়তনে বিশ্বে ৬৮তম বৃহৎ ও সমগ্র বিশ্বে ৪৫তম বৃহৎ জনসংখ্যার রাষ্ট্র দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মালয়েশিয়া ‘এশীয় শতাব্দী’ শব্দবন্ধ কার্যকরীকরণে লক্ষ্যণীয় অবদান রাখছে। বিশেষত দক্ষিণ এশিয়ার গণতান্ত্রিক শ্রীলঙ্কা এবং অগণতান্ত্রিক সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র পাকিস্তান যখন দেউলিয়া হিসেবে গণ্য হচ্ছে, এবং যখন কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারী এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশকেও আঘাত করেছে তখন বাংলাদেশের লক্ষণীয় উন্নয়ন বিশ্বের বিভিন্ন মহলে প্রশংসিত হচ্ছে। বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে গণতান্ত্রিকভাবে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য পাকিস্তানীকরণের কার্যকর বিরোধীতা ও পরাস্ত করা প্রয়োজন। আর এসবের জন্যই শেখ হাসিনার নেতৃত্ব অপরিহার্য।

লেখক: পরিচালক, সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ, ঢাকা; ইনস্টিটিউশনালাইজেশন অব ডেমোক্র্যাসি ইন বাংলাদেশ গ্রন্থের লেখক, সাবেক ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, এবং সাবেক চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এসবিডিই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন