বিজ্ঞাপন

সংকট উত্তরণ শুধু বিএনপির দায়িত্ব নয়: ফখরুল

March 19, 2023 | 9:05 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকের এই সংকট উত্তরণ শুধু বিএনপির দায়িত্ব নয়। এটা সকল রাজনৈতিক দলের, সকল মানুষের দায়িত্ব। দেশ, জাতি ও গণতন্ত্রকে বাঁচাতে এবং একটি মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১৯ মার্চ) বিকেলে মতিঝিলে হোটেল পূর্বানীর হল রুমে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘কতৃত্ববাদের উত্থান ও বিপন্ন গণতন্ত্র: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা আয়োজন করে জিয়া পরিষদ।

ফখরুল বলেন, ‘সংকট হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থায়। আমরা একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এ রাষ্ট্র লাভ করেছি। সেই রাষ্ট্রের অস্তিত্ব, রাজনৈতিক অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। সংকটটা ওই জায়গায়। বিপন্ন হবার কারণ হচ্ছে ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় যে কমিটমেন্ট, যে প্রতিশ্রুতি আমরা জনগণের সামনে দিয়েছিলাম। তৎকালীন যারা নেতৃত্বে ছিলেন, তারা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এই ৫২ বছর সমস্ত কমিটমেন্ট, প্রতিশ্রুতি তারা নস্যাৎ করে দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো একদলীয় শাসন ব্যবস্থা নিয়ে এসেছে। এদের হাতে গণতন্ত্র বার বার নিহত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এমন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, যেটা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেনি। দেশে কোনো আইনের শাসন নেই। পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের বিনা ওয়ারেন্টে, বিনা মামলায় তুলে নিয়ে গিয়ে নাশকতা, বিস্ফোরণের মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখায়। মামলায় ১০০ জনের নাম দেয়, এক হাজার থাকে অজ্ঞাতনাম। পঞ্চগড়ে দিয়েছে ১৬ হাজার অজ্ঞাতনামা। এতে দু’টি কাজ হয়, ওই মানুষগুলো ঘরছাড়া হয়ে যায়, বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যায়। আরেকটি হলো- বিরাট বাণিজ্য শুরু হয়।’

বিজ্ঞাপন

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ১০ দফায় পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, বর্তমান সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। কারণ, এ সংসদ জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সংসদ নয়। ২০১৪ ও ১৮ সালে কীভাবে নির্বাচন হয়েছে? সেটা আপনারা জানেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সব দলের রাজনৈতিক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি কেয়ারটেকার গভমেন্ট তৈরি করতে হবে। তাদের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সে নির্বাচন কমিশন নতুন করে নির্বাচন ব্যবস্থা করবে। সে নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে নতুন পার্লামেন্ট হবে, নতুন সরকার গঠন করা হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটা কর্তৃত্ববাদী শাসনের দেশ। বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা বলে কিছু নাই। মাঝে মাঝে অনেকেই প্রশ্ন করেন, আপনারা কি নির্বাচনে আসবেন না, আপনারা নাকি ৮০ সিট নিয়ে আলোচনা করছেন, পাচ্ছেন? কীভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। আচ্ছা বলেন তো, সিট দেওয়ার মালিক কে? দেশের জনগণ ছাড়া কি কেউ এ মালিক, জনগণ ছাড়া তো কাউকে দেখি না।’

অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলটাই একটা স্বৈরাচারী দল। এরা আসলে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। কিছু বললেই এরা মারতে আসবে। আর জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করে দেশকে এগিয়ে নিয়েছিল। এখন আমরা নিরাপত্তা হারিয়ে ফেলেছি। ২০১৪ সালের পর থেকে এটা শুরু হয়েছে। সুশাসনের জন্য যে জিনিস দরকার, সেগুলো বাংলাদেশে আর নাই। আমি শঙ্কিত এ দেশের জন্য। এ দেশকে নতুন করে গড়তে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। শেখ হাসিনা বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পান, তাই উনাকে ছেড়ে দেন না।’

বিজ্ঞাপন

জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. এমতাজ হোসেন সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর আব্দুল লতিফ মাসুম, জিয়া পরিষদের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর এম সলিমুল্লাহ খান, ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইনিয়নের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন