বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আরেকটি সংগ্রামের চিন্তা নোমানের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফেরাতে জীবন সায়াহ্নে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের একাত্তরের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরেকবার সংগ্রামে নামার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমান।

বুধবার (২২ মার্চ) বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনের মাঠে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সমাবেশে তিনি এ আহ্বান জানান। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় কমিটির এ সমাবেশে ১০০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘শহীদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক, বীর মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধার দল হচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে সেই চেতনাকে ভূলুন্ঠিত করেছে। মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল অবাধ গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার, অন্ন, বস্ত্র ও চিকিৎসার নিশ্চয়তা। আওয়ামীলীগ মানুষের এসব মৌলিক অধিকার হরণ করেছে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা নোমান বলেন, ‘জীবন সায়াহ্নে এসে অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এখন আরেকটি সংগ্রামের চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। দেশের ক্রান্তিলগ্নে একাত্তরের মতো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আরেকটি সংগ্রামে নামতে হবে। এই সরকারকে গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে পরাজিত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগণকে ফিরিয়ে দিতে হবে।’

আওয়ামীলীগ সরকার ভোটচোর ও দুর্নীতিবাজ সরকার হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সদ্য প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টে আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চুরি, মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধীদলের সভা-সমাবেশের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ হয়েছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জাতিসংঘসহ বিশ্বে বিভিন্ন দেশের সরকার ও মানবাধিকার সংগঠন আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চুরি, দমন-পীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।’

আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘সরকার উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। রিজার্ভ সংকটের কারণে সরকার আইএমএফ থেকে ঋণ গ্রহণের শর্ত হিসেবে বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়িয়েছে। এতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। সরকারের দুর্নীতি আর লুটপাটের খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে। লুটপাটের জন্য সরকার যেসব লোকদেখানো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, সেগুলো জনগণের জন্য একসময় বিষফোঁড়া হবে।’

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় সমাবেশে নগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, নগর কমিটির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলার আহবায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় সদস্য সাথী উদয় কুমার বড়ুয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা একরামুল করিম ও শাহাবুদ্দিন আহমদ, সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আহমেদুল আলম রাসেল, নগর যুবদলের সভাপতি মোশারফ হোসেন দীপ্তি ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সাহেদ এবং নগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরীফুল ইসলাম তুহিন বক্তব্য রাখেন।

এদিকে, সমাবেশ চলাকালে বিএনপির নেতাকর্মীদের দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও চেয়ার ছোঁড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। তবে নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে।

সারাবাংলা/আরডি/এনইউ