বিজ্ঞাপন

২৮ মার্চ ১৯৭১: সারাদেশে বীর বাঙালির দুর্বার প্রতিরোধ

March 28, 2023 | 9:15 am

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ২৮ মার্চ ১৯৭১। গণহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহকুমা শহরের পুলিশ, ইপিআর, ছাত্র-শিক্ষক, জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করায় পাবনায় ১০ জনকে হত্যা করে পাকিস্তানি বাহিনী। এ ঘটনায় ক্ষোভে-রোষে ফেটে পড়ে স্থানীয় জনসাধারণ। অবস্থা বেগতিক দেখে পাকিস্তানি সেনারা টেলিফোন এক্সচেঞ্জের ভেতরে আশ্রয় নেয়। বিক্ষুব্ধ জনতা সে জায়গা ঘিরে ফেলে। সেখানে গোলাগুলি হয়। সব পাকিস্তানি সৈন্য মারা যায়।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামের দক্ষিণ থেকে বালুচ রেজিমেন্ট, উত্তর থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাস এবং কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে অগ্রসরমান পাকিস্তানি সেনাদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলে বাঙালি সেনা, ইপিআর, পুলিশ ও সাধারণ জনতা। কিন্তু অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের মুখে বীর বাঙালির প্রতিরোধ ব্যূহ বেশি সময় টিকতে পারেনি। তাদের পিছিয়ে আসার কৌশল নিতে হয়।

রংপুর শহর ও সেনানিবাসের পাশের এলাকার বাঙালিরা দেশি অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সেনাছাউনি আক্রমণে এগিয়ে যায়। অসংখ্য সাঁওতাল এই প্রতিরোধে অংশ নেন। তারা মুহূর্মুহূ তীর নিক্ষেপ করতে থাকে। সাঁওতালদের ছোঁড়া তীরে নিহত হয় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সৈন্য। পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহিদ হন শতাধিক প্রতিরোধযোদ্ধা।

নোয়াখালীতে আবদুল মালেক উকিলের নেতৃত্বে ইপিআর ও আনসার সদস্যদের সংগঠিত করা হয়। সমগ্র নোয়াখালীতে প্রতিরোধ গড়ে ওঠে।

বিজ্ঞাপন

সিলেটে এমসি কলেজের কাছে চা শ্রমিকদের হত্যা করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। খাদিমনগরে চা বাগান শ্রমিকদের আগুনে পুড়িয়ে ও গুলি করে হত্যা করে তারা। পাকিস্তানি নৌবাহিনী চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে গোলা নিক্ষেপ করে তাদের নৌবহর থেকে। নৌবন্দর এলাকায় পাকিস্তানিরা বাঙালি নৌসেনাদের নিরস্ত্র করে হত্যা করে।

পুরান ঢাকায় জগন্নাথ কলেজসংলগ্ন পরিত্যক্ত ভবনে বাঙালি শিক্ষক, শিল্পী, হোটেল কর্মচারীসহ ৮৮ জনকে হত্যা করা হয়। বিউটি বোর্ডিং, প্যারিদাস রোড, ফরাশগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে এসব বাঙালিকে ধরে আনা হয়।

কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা লেখে, দু’দিনে বাংলার প্রায় এক লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। দুইদিন বন্ধ থাকার পর ‘দ্য পাকিস্তান অবজারভার’ প্রকাশ হয়। সরকারের বিভিন্ন প্রেস নোট আর সরকারি খবরে ভরা ছিল চার পৃষ্ঠার সেই কাগজ। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের ২৬ মার্চের বেতার ভাষণের পুরোটা অবজারভার সেদিন ছাপে দেয়। বঙ্গন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গ্রেফতারের খবর ছাপা হয় ছোট্ট করে।

বিজ্ঞাপন

গণহত্যার প্রতিবাদে এবং স্বাধীনতার দাবিতে লন্ডনে বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাঙালি। সমাবেশে অংশ নেন বিদেশিরাও।

সারাবাংলা/এজেড/এমও

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন