বিজ্ঞাপন

‘জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে সরাতে মার্কেটগুলোতে আগুন’

April 17, 2023 | 7:52 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চলমান আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে সরাতে ক্ষমতাসীনরা মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। সারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এই সমাবেশ আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপনারা (সরকার) কোনো কিছু মনিটর করেন না। প্রতিদিন সবখানে আগুন লাগছে। এই আগুন লাগার পেছনে আপনারা আছেন। এই যে, দাবি উঠেছে- সারের দাম কমাও, চালের দাম কমাও, আমাদের বাঁচতে দাও, ভালো একটা নির্বাচন দাও, ভোটের অধিকার দাও। এই দাবিগুলো পাশ কাটানোর জন্য, মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে দেওয়ার জন্য আপনারা (সরকার) এই আগুন লাগিয়ে বেড়াচ্ছেন।’

‘আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এদেশের মানুষের সহ্যের একটা সীমা আছে। আজকে খুব পরিষ্কার কথা, অবিলম্বে সারের দাম কমাতে হবে, আবার আগের জায়গায় আনতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই সরকার একটা গণবিরোধী সরকার, এই সরকার সাধারণ মানুষের ‍বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, এই সরকার আজ আমার সমস্ত অর্জনকে ধবংস করে দিচ্ছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ খেটে খাই, পরিশ্রম করে খাই তাদের জীবন দুর্বিষহ করে ফেলেছে। প্রতিবাদ করলে কী? প্রতিবাদ করলে গুলি, প্রতিবাদ করলে গ্রেফতার, প্রতিবাদ করলে মামলা, তাও আবার গায়েবি মামলা। আজ সবখানে সাধারণ মানুষের ওপরে নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন করছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কেন এই অত্যাচার? কেন মানুষের প্রতি তাদের দয়া-মায়া তাদের নেই। কারণ, তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) জনগণ দ্বারা নির্বাচিত হয় নাই। দুইটা নির্বাচন করেছে, সেই দুইটা কীভাবে করেছে আপনারা সবাই জানেন। কিন্তু মানুষ আর সহ্য করবে না। খুব পরিষ্কার করে আমরা বলে দিয়েছি, এই সরকারকে সরাতে হবে। এই সরকার যতদিন থাকবে ততদিন মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন বাড়বে, মানুষের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন চলতেই থাকবে।’

নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনারা খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিএনপি। অথচ আপনাদের ব্যবসায়ীরা বলে দিল যে, তারা দেখেছে ভোর সাড়ে ৫টার সময় সিটি করপোরেশনের পোশাক পরে কয়েকজন লোক এসেছে। মার্কেটের সামনের যে ফুটওভার ব্রিজ ছিল, সেই ব্রিজ ভাঙার জন্য তারা গ্রিল নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে তারা ব্লক কেটে সিঁড়িগুলো ভেঙে দিচ্ছিল। তারা যখন ওই গ্রিলের তার পয়েন্টে লাগাতে গেছে তখন শট র্সার্কিট হয়েছে। ব্যবসায়ীরা নিজেরা দেখেছেন।’

বিজ্ঞাপন

‘তারা আগুন নেভানোরও চেষ্টা করেছেন। আগুন নেভাতে যখন পারেনি তখন সিটি করপোরেশনের ওই লোকগুলো পালিয়ে গেল। এটা আমার কথা নয়, সেখানকার ব্যবসায়ীদের কথা। সিটি করপোরেশের দাযিত্বে আছেন এখন কে? সিটি করেপারেশনের দায়িত্বে আছেন আপনারা, আওয়ামী লীগ। তাই দায় সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগের এবং এই সরকারের’— বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি আরও বলেন, ‘এত আগুন লাগছে কেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা পরিবেশের কারণে লাগছে। পরিবেশের বিপর্য্য় কে করেছে? এই সরকার যেখানে জায়গা পায় বিল্ডিং তুলে দেয়, বিল্ডিং তুলে বাজার চালু করে। আবার আওয়ামী লীগের গুণ্ডা-পান্ডারা চাঁদা আদায় করে। তারা অতিরিক্ত দোকান দিয়ে অবৈধ দোকান দিয়ে বাজারের মানুষের চলাচল অনুপযুক্ত করে তোলে। বঙ্গবাজার যেখানে ২০টা দোকান হওয়ার কথা ছিল সেখানে ৪০টা দোকান। নিউ মার্কেটে তিন তলায় হাজার হাজার দোকান বসেছে। কীভাবে বসল?’

সারের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘কৃষকদের শুধু চরম অবহেলা নয়, চরম কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে সরকার। তারা মাথায় হাত দিয়েছে। হঠাৎ করেই কেজিপ্রতি সারের দাম ৫ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেন? তাদের (কৃষকদের) বলা হয়েছে যে, আইএমএফ তাদের শর্ত দিয়েছে যে, ভতুর্কি দেওয়া যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে কৃষিতে ভতুর্কি দেওয়া হয়। এজন্য দেওয়া হয় যে, তারা ফসল ফলায়, আমাদের পেটে ভাত যোগায়। সেই ভাত যারা যোগায় সেই কৃষক উৎপাদন করে তাদের যদি ভতুর্কি দেওয়া না হয় তাহলে তারা ফসল ফলাতে পারবে না। সব দেশে কৃষিতে ভুতর্কি দেওয়া হয়। কিন্তু এখন আমাদের দেশে কৃষকদের গলা টিপে ধরার জন্য এই সরকার কী করেছে? প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়েছে ইউরিয়া সার, অন্যান্য সার তো আছেই।’

বিজ্ঞাপন

কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও বক্তব্য দেন।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন