বিজ্ঞাপন

চমক দেখিয়ে গাজীপুর সিটির প্রথম নারী মেয়র জায়েদা খাতুন

May 26, 2023 | 7:46 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বড় ধরনের চমক দেখিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাজিমাত করলেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়ে গাজীপুর সিটির প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন জায়েদা খাতুন। নির্বাচনে তিনি ভোট পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।

বিজ্ঞাপন

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মোট পড়েছে ৪৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দিবাগত রাত দেড়টায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামে গাজীপুর সিটি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

এর আগে দিনভর শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ শেষ হলেও রাতে ফল ঘোষণায় দীর্ঘ সময় লাগায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে থাকা আজমত-জায়েদা সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সাড়ে সাত ঘণ্টা শেষে রাত দেড়টায় চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। এতে করে অপেক্ষার অবসান ঘটে।

বিজ্ঞাপন

ফল ঘোষণার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন এগিয়ে ছিলেন। তবে দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান বেশি না হওয়ায় অনেকে নানা শঙ্কা প্রকাশ করতে থাকেন। চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আজমত উল্লা বিজয়ী হয়েছেন বলে তাকে অভিনন্দন জানাতে থাকেন।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন। শুরুতে জাহাঙ্গীর আলম নিজেই প্রার্থী হয়েছিলেন। খেলাপি ঋণ থাকার কারণে তার মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। আপিল করেও মনোনয়ন ফিরে না পাওয়ায় তিনি মা জায়েদা খাতুনকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামেন।

বিজ্ঞাপন

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনী মাঠে থাকায় তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করে আওয়ামী লীগ। নিজের মনোনয়ন বাতিল, দলীয় পরিচয় হারানোর পরও মাকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে দৃঢ় অবস্থান নেন জাহাঙ্গীর আলম। ভোট গ্রহণের দিন অনেক কেন্দ্রে জায়েদা খাতুনের এজেন্ট খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কৌশলগত কারণে অনেক কেন্দ্রে জাহাঙ্গীরের সমর্থকরা নৌকার এজেন্ট হয়ে জাহেদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেছেন। আবার অনেকেই নৌকার ব্যাচ গলায় ঝুলিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের মা জাহেদা খাতুনের পক্ষে কাজ করেছেন। ফলে নির্বাচনী এলাকায় জাহেদা খাতুনের কর্মী সমর্থক চোখে না পড়লেও দিনশেষে ভোটের ফলে বাজিমাত করেন জায়েদা।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ মেয়র প্রার্থী: গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিজয়ী স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জাহেদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত মো. আজমত উল্লা খান পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। নির্বাচনে তৃতীয় হয়েছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান। তিনি হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও মেয়র পথে হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম পেয়েছেন ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট, মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট। লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট এবং ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ পেয়েছেন ২ হাজার ৪২৬ ভোট।

জানা গেছে, গাজীপুর সিটি নির্বাচনের মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, নারী ভোটার পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন। এছাড়াও ১৮ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন। মোট ভোটারের মধ্যে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৫০ ভোট পড়েছে।

এর মধ্যে ১ হাজার ৭৯৪টি ভোট বাতিল হয়েছে। ফলে নির্বাচনে বৈধ ভোটের সংখ্যা৫ লাখ ৭৩ হাজার ২৫৬টি। ২০২৩ সালের নির্বাচনে গাজীপুর সিটিতে মোট ভোট পড়েছে ৪৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ।

২০১৩ সালে গাজীপুরের নির্বাচনে ৬৮ শতাংশ এবং ২০১৮ সালে ৫৮ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

 

সারাবাংলা/জিএস/ এনইউ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন