ঢাকা: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতারা বলেন, জাতীয় সংসদে গতকাল সরকার বাজেট পেশ করেছে। এখন বাজেট সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি বয়ে আনে না, বরং মানুষ আতঙ্কিত হয়। এই বাজেটে মানুষের ওপর নতুন কর ও ঋণের বোঝা চাপানো হয়েছে। বাজেটে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য কমানোর কোনো নিদের্শনা নেই। উল্টো পণ্যের মূল্য যাতে বৃদ্ধি পায় সেই প্রস্তাব আছে। প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দ দেওয়া হয়নি, রেশনিং ব্যবস্থা চালুর কোনো উদ্যোগ নেই। বাজার ও বিপণন সিন্ডিকেট ভাঙার কোনো রূপরেখা নেই। তাই এই বাজেট জনগণ প্রত্যাখ্যান করছে।’
শুক্রবার (২ জুন) সিপিবি সূত্রাপুর থানার ৪৫ ও ৪৬ নং ওয়ার্ড শাখার উদ্যোগে সরকারের পদত্যাগসহ ৫ দফা দাবিতে ধুপখোলা বাজার ও দয়াগঞ্জ মোড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে দলটির নেতারা এসব কথা বলেন। শাখা সম্পাদক কমরেড হামিদুর রহমান ইকবালের সভাপতিত্বে ও সাইফুল ইসলাম সমীরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন— ঢাকা দক্ষিণের নেতা মঞ্জুর মঈন, সূত্রাপুর থানা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিকাশ সাহা, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বী খান ও যুব নেতা আনোয়ার হোসেন প্রমূখ।
দাবিগুলো হলো— ‘দাম কমাও, জান বাঁচাও’, বাজার সিন্ডিকেট রুখো, সারাদেশে রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু, নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ধুপখোলা বাজার ও দয়াগঞ্জ মোড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
সমাবেশে বিকাশ সাহা বলেন, ‘সরকার সিন্ডিকেট করে যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করছে, তেমনি বাজেট তৈরিতেও বড়লোকদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করেছে। বাজেটের টাকা জোগাড় করার জন্য সরকার একের পর এক কর বসিয়েছে জনগণের ওপর। আবার ঘাটতি পূরণে বিদেশি ঋণ নিয়ে জনগণের ঋণের বোঝা বাড়িয়েছে। দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকা উদ্ধার করে এই ঘাটতি মেটানো যেত। কিন্তু সরকারের সেদিকে কোনো নজর নেই। এই বাজেট জনগণের নয়, এই বাজেটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুসরণ করা হয়নি। তাই এই বাজেট জনগণ প্রত্যাখান করছে।’
মঞ্জুর মঈন বলেন, ‘নিত্যপণ্যের দাম কমাতে হবে, জীবন বাঁচাতে হবে। ভাত ও ভোটের অধিকারের লড়াই তীব্র থেকে তীব্রতর করতে হবে। কমিউনিস্ট পার্টি সাধারণ মানুষের মুক্তির জন্য লড়াই করে। তাই জনমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও বাঁচার তাগিদে লাল পতাকাতলে সমবেত হোন।’
গোলাম রাব্বী খান বলেন, ‘নির্বাচনকালে সরকারের পদত্যাগ ও সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্দলীয় তদারকি সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। রাতের অন্ধকারের নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না। এই আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে হত্যা করছে।’
আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই বজেটে যুবদের কোনো বরাদ্দ নাই। কর্মসংস্থানের কোনো নির্দেশনা নাই। তাই বাজেট প্রত্যাখান করছি।’
সভাপতির বক্তব্যে হামিদুর রহমান ইকবাল বলেন, ‘সারাদেশের মানুষ আজ দিশেহারা। অর্ধাহারে-অনাহারে আছে দেশের প্রায় ৫০ ভাগ মানুষ। তাই সরকারকে রেশন ব্যবস্থা ও ন্যায্যমূল্যের দোকান চালু করতে হবে। জনজীবনে স্বস্তি আনতে হবে।’