বিজ্ঞাপন

নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন দেওয়ার নির্দেশ

June 4, 2023 | 5:44 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত বেসরকারি নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ৫২ শিক্ষার্থীকে অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের সু্যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৪ জুন) জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন‌।

আদালতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন‌। রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার খাজা তানভীর আহমেদ।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের ৫২ জন শিক্ষার্থীকে তিন মাসের মধ্যে যেসব বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন শূন্য রয়েছে তা খুঁজে বের করতে বলেছেন। এই শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের খরচ নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে বহনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

তিন মাসের মধ্যে তিন মাসের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (বিজি) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আইনজীবীরা জানান, নানা অনিয়মের ও অব্যবস্থার অভিযোগে ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বরে ২০১৭-২০১৮ শিক্ষা বর্ষে সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত বেসরকারি নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজসহ বেসরকারি পাঁচটি মেডিকেল/ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্থাস্থ্য অধিদপ্তর।

এরপর ওই স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে নাইটিংগেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আদালত শুনানি নিয়ে ২০১৮ সালের ৪ জানুয়ারি ভর্তি বন্ধের নির্দেশনা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি জাফর আহমদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

এরপর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই বছরের মার্চে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের অধীনে ৫২ জন শিক্ষার্থীকে নাইটিংগেল কলেজে ভর্তি নেওয়া হয়‌। এরপর নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজে আদালত থেকে স্থগিতাদেশের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে নেয়।

নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজে প্রয়োজনীয় শিক্ষক, অপারেশন থিয়েটার, হাসপাতালে রোগী না থাকায় চতুর্থ বর্ষে এসেও শিক্ষার্থীরা কলেজে ক্লাস পরীক্ষা ব্যাহত হচ্ছিল। নিয়ম অনুযায়ী এমবিবিএস পঞ্চম বর্ষে এসে বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করতে হয়।

রেজিস্ট্রেশনের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে কোন তথ্য না পেয়ে বিএমডিসিতে যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে তারা জানতে পারে যে, ভর্তি স্থগিতের নির্দেশ দেওয়া মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হবে না।

এরপর শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না থাকায় নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের ২০১৭-১৮ বর্ষের ৪৫ জন শিক্ষার্থী অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের মাধ্যমে স্থানান্তরের সু্যোগ চেয়ে ২০২২ সালের আগস্ট মাসে তানজুম তাবাসসুমসহ ৪৫ শিক্ষার্থী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট বিচারপতি কাশেফা হোসেন ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শিক্ষার্থীদের অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের সু্যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেন।

এরপর হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল দায়ের করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চেম্বার আদালত হয়ে গত বছরের ৯ নভেম্বর মামলাটি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। শুনানির ধারাবাহিকতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গত মাসে নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশনের বিষয়ে আদালতকে জানায় যে, হাইকোর্টে বিচারাধীন রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন করা সম্ভব নয়।

এরপর গত ১৬ এপ্রিল নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে বিচারাধীন রিট প্রত্যাহার করে নেয়।

তারপরও নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের ওই ৪৫ শিক্ষার্থীর মাইগ্রেশনের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদ কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় শিক্ষার্থীদের আবেদনের শুনানি নিয়ে স্বাস্থ্যের ডিজি ও ঢাবির মেডিসিন অনুষদের ডিনকে তলব করে আপিল বিভাগ।

আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাবির মেডিসিন অনুষদের ডিন আদালতে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন দেওয়ার জন্য আরও সময় চায়। তখন আদালত তিন মাসের মধ্যে যেসব বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন শূন্য রয়েছে। তা খুঁজে বের করে ওই শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। এবং নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজের নিজ খরচায় ওই শিক্ষার্থীদের মাইগ্রেশন করে দিতে বলেন আদালত।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন