বিজ্ঞাপন

১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি চায় মিল্কভিটা, মন্ত্রী জানালেন ‘সম্ভব না’

June 4, 2023 | 8:25 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: খামারি পর্যায়ে দুধের দাম বাড়ানোর জন্য আগামী অর্থ বছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়ার দাবি করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটার চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু। তবে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো তাজুল ইসলাম।

বিজ্ঞাপন

রোববার (৪ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। সংসদীয় কমিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে বৈঠকে মিল্কভিটার কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।

মিল্কভিটার ১০০ কোটি টাকা ভতুর্কি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে উপস্থিত এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার এখন সব খাত থেকে ভর্তুকি কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই সময়ে নতুন করে ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব নয়।’

পরে বৈঠকে মিল্কভিটাকে জনপ্রিয় করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

কমিটি সূত্র জানায়, কমিটির আগের বৈঠকেও মিল্কভিটা নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে অভিযোগ করা হয়, বেসরকারি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে নিম্নমানের দুধ কিনে তাতে ক্ষতিকর পদার্থ মিশিয়ে সরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটার তুলনায় অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে বিক্রি করছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি ওই দুধের বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা জরুরি বলে উল্লেখ করা হয় বৈঠকে।

এদিকে বেসরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে নিম্নমানের দুধ সরবরাহ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে সংসদীয় কমিটিতে। কমিটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে অভিযোগ উত্থাপন করে কমিটির সদস্য সরকারি দলের সংসদ সদস্য শাহে আলম বলেন, ‘বেসরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাজার থেকে কমমূল্যে নিম্নমানের দুধ ক্রয় করে। নিম্নমানের গুঁড়োদুধ ৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করে— তা মিশিয়ে বাজারে তুলনামূলক কমমূল্যে বিক্রি করে থাকে।’

বিজ্ঞাপন

ওই বক্তব্যের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। তিনি বৈঠকে বলেন, ‘দুধ সরবরাহকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের দুধ কমদামে কিনে কন্ট্রামিনেশন (ক্ষতিকর পদার্থ মিশিয়ে) করে বাজারে বিক্রি করছে, যা জনসাধারণকে জানানো দরকার।’

এ সময় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘মিল্কভিটার প্রোডাক্টস শতভাগ পিওর। এখানে ভেজালের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু বেসরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান দেশি-বিদেশি নিম্নমানের দুধ কমদামে কিনে তুলনামূলক কমদামে বিক্রি করছে। তাই দুধের সুষ্ঠু মান নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন।’

আমদানিকত দুধের ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করেন তিনি।

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব বলেন, ‘মিল্কভিটার বর্তমানে ৪ লাখ লিটার দুধ প্রসেস করার ক্যাপাসিটি রয়েছে। মিল্কভিটা গড়ে ৫০ টাকা কেজি দরে দুধ সংগ্রহ করে। কিন্তু খামারিরা খোলা বাজারে দুধ বিক্রি করে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭০-৯০ টাকা লিটার প্রতি পায়। এ কারণে মিল্কভিটার দুধ পেতে সমস্যা হচ্ছে আবার ৫০ টাকার বেশি মূল্যে দুধ কেনা হলে ভোক্তা পর্যায়ে ১০০ টাকা লিটার মূল্যেও পৌঁছানো সম্ভব হবে না।’

বিজ্ঞাপন

সংসদ সচিবালয় জানায়, মিল্কভিটার মানোন্নয়নের ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনগণের কাছে মিল্কভিটাকে আরও আকর্ষণীয় করে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয় বৈঠকে।

এছাড়া বৈঠকে ওয়াসার চলমান কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করা, কম খরচে বেশি মানুষের কাছে পানি পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। ভারি যানবাহন চলাচলে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সড়কে ব্যারিকেড দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে একটি পরিপত্র জারির সুপারিশ করা হয়।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন