বিজ্ঞাপন

কারাচিকিৎসক নিয়োগ: বিধিমালা চূড়ান্ত করে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ

June 6, 2023 | 8:35 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৬ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলীর চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো.জে আর খান রবিন। কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী মো.জে আর খান রবিন বলেন, দেশের কারা হাসপাতালে দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসক সংকট থাকায় হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করা হয়। একাধিক বার সময় নিয়েও ১৪১টি চিকিৎসক পদে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে পারেনি কারা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া চিকিৎসক নিয়োগে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্ত হয়নি।

বিজ্ঞাপন

আজ শুনানিতে কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানিয়েছে ১৪১টি পদের মধ্যে ১২৫টি পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আর চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত করতে আরও সময়ের আবেদন করে কারা কর্তৃপক্ষ।

শুনানি শেষে আদালত কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ সময়ের মধ্যে শূন্য পদে কারা চিকিৎসক নিয়োগের অগ্রগতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও কারা কর্তৃপক্ষের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

আজ শুনানিতে আদালত বলেন, কারা কর্তৃপক্ষের আইনজীবীর কাছে এখন কারা হাসপাতালগুলোতে কতজন চিকিৎসক আছেন তা জানতে চান- আদালতের এমন প্রশ্নে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এখন ১২৫ জন চিকিৎসক আছেন। তখন আদালত জানতে চান, বাকিগুলো পূরণ করছেন কীভাবে? জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, শূন্যপদ পূরণের কাজ চলছে।

বিজ্ঞাপন

আদালত তখন বলেন, কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ।

আদালত আরও বলেন, শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকে না। ধনীরা কারাগারে গেলেও তাদের জন্য ডিভিশনের ব্যবস্থা থাকে। গরিবদের বাঁচান।

মামলার বিবরণে জানা যায়, কারাবন্দিদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে দেশের কারাগারগুলোতে শূন্যপদে দ্রুত চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৯ সালে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।

পরে ২০১৯ সালের ২৩ জুন ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত সারাদেশের সব কারাগারে বন্দিদের ধারণক্ষমতা, বন্দি ও চিকিৎসকের সংখ্যা এবং চিকিৎসকের শূন্যপদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন।

বিজ্ঞাপন

আদালতের ওই নির্দেশ অনুসারে ২০১৯ সালের নভেম্বরে কারা মহাপরিদর্শক একেএম মোস্তফা কামাল পাশার পক্ষে ডেপুটি জেলার মুমিনুল ইসলাম একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।

হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদন বলা হয়, দেশের ৬৮টি কারাগারে ১৪১টি পদের বিপরীতে মাত্র ১০ জন চিকিৎসক রয়েছে। ওই প্রতিবেদন দেখে হাইকোর্ট কারাগারগুলোর শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগের নির্দেশ দেন।

তারই ধারাবাহিকতায় কারা কর্তৃপক্ষ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জানায়, ১৪১টি চিকিৎসকের পদের মধ্যে ১১২টি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তখন আদালত শূন্য থাকা বাকি পদগুলোতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দেন। কিন্তু এর মধ্যে নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ পায়।

এরপর চিকিৎসক নিয়োগের পর তা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন। এরপর কারা কর্তৃপক্ষ প্রেষণ ও সংযুক্তির মাধ্যমে ১২৫ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়।

এরপর শুনানির ধারাবাহিকতায় আদালত আজ কারা হাসপাতালগুলোতে শূন্য থাকা ১৬টি পদে আগামী এক মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে বলেছেন। পাশাপাশি চিকিৎসক নিয়োগে চূড়ান্ত নীতিমালার তৈরির বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বর্তমানে দেশে মোট ৬৮টি কারাগার রয়েছে। এর মধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুরে একটি মহিলা কারাগার রয়েছে। এসব কারাগারে বন্দির তুলনায় চিকিৎসকের সঙ্কট রয়েছে।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এনইউ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন