বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ নিয়ে সংসদে তীব্র সমালোচনা

June 6, 2023 | 9:26 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জ্বালানি খাতের অব্যবস্থাপনা নিয়ে সংসদে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৬ জুন) একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনে তিনি চরম সমালোচনার মুখে পড়েন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে সভাপতিত্ব করছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

এদিন বিকেলে জাতীয় সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ খাতে ৩২ কোটি ৪৬ লাখ ৪ হাজার টাকা সম্পূরক বাজেট পাসের ব্যাপক বিরোধিতা করা হয়। বিরোধিতা করে আনা ছাঁটাই প্রস্তারে ওপর আলোচনায় বিরোধীদল জাতীয় পার্টি, গণফেরাম ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা বর্তমান বিদ্যুতের নাজুক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন।

সম্পূরক বাজেটের ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, ‘যে জন দিবসে মনের হরষে জ্বালায় মোমের বাতি, আশুগৃহে তার দেখিবে না আর নিশিথে প্রদীপ ভাতি’। অসময়ে আমরা ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ফেলেছি। অথচ আমাদের লাগে ১৪ হাজার মেগাওয়াট, বাকিটা নষ্ট হয়েছে। আজ উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ৭ হাজার মেগাওয়াট।’

বিজ্ঞাপন

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি ৩২ কোটি ৪৬ লাখ ৪ হাজার টাকা অতিরিক্ত চেয়েছেন। আর আপনার বাকি আছে বিভিন্ন কলকারখানার কাছে ২ হাজার কোটি টাকা। আপনাকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির অনেকগুলো বিল পরিশোধ করতে হবে। যার পরিমাণ ৭১ বিলিয়ন ডলার। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কোথা থেকে আসবে তা ফখরুল ইমাম জানতে চান।’

কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকলে শিল্পায়ন কমে যাবে, কৃষি উৎপাদনে ধ্বস নামবে। এক সময় বিদ্যুৎ ছিল, দেশের প্রতিটি গ্রামে-গঞ্জে বিদ্যুৎ ছিল। কিন্তু এই গরমে হঠাৎ করে কেন বিদ্যুৎ চলে গেল? এর জন্য আগে থেকেই কয়লা, ডিজেল আমদানি করা উচিত ছিল। আমি মনে করি, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় নেই। ফলে আজ এই অব্যবস্থা। এই প্রচণ্ড গরমে দ্রুত কয়লা আমদানি করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো দ্রুত চালু করা যায়।’

তিনি বলেন, ‘সচিবালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, সচিবদের বাথরুমের মধ্যেও এসি আছে। সেখানে সেন্ট্রাল এসি চালিয়ে রেখেছে। তাদের এসি আবার হাই ভোল্টেজ, একবার চললে আর বন্ধ হয় না। অথচ গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। শহরের কিছু ধনীক শ্রেণির জন্য কেন গ্রামের মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারবেন না? তা হতে দেওয়া যায় না।’ তিনি আওয়ামী লীগের এমপি হাবিবুর রহমানের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের সমালোচনা করে ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ তো মানুষ পাচ্ছেই না। তার মধ্যে উনি কি করে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব তোলেন?’

বিজ্ঞাপন

রুস্তম আলী ফরাজী প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘আপনি কেন বলেন না কোন সময় বিদ্যুৎ থাকবে না, কোন সময় থাকবে। কেউ কিছুই জানে না। একেবারে নো ম্যানস ল্যাণ্ডের মতো অবস্থা তো চলে না। কেন বিদ্যুৎ নেই, কখন থাকবে তা জনগণকে জানান। এখানে কিন্তু অনেক ঘসেটি বেগম থাকতে পারে, তারা কিন্তু আপনাদের সুনাম নষ্ট করতে পারে।’

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, ‘ডলার সংকটে এলসি খোলা যাচ্ছে না। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লা, তেল আনা যাচ্ছে না। অথচ গত সোমবার এই সংসদে সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ভোলায় নাকি গ্যাস কূপের ছড়াছড়ি। একেবারে হাবুডুবু খাওয়ার মতো অবস্থা। সারা পৃথিবীর দৃষ্টি এখন বাংলাদেশের দিকে। তাহলে সরকার কেন গ্যাস অনুসন্ধান চালাচ্ছে না? তাহলে তো এ সংকট অনেকখানি কেটে যেত। এত সংকট দেখা দিত না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১০ বছরে গ্যাস একদম ফুরিয়ে যাবে। নতুন করে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। গ্যাসকূপ কেন অনুসন্ধান করা হচ্ছে না?’ এ সময় বিদ্যুতের ভুয়া বিল নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রওশন আরা মান্নান।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এএইচএইচ/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন