বিজ্ঞাপন

ইন্টারের স্বপ্ন ভেঙে ম্যানচেস্টার সিটির ইউরোপিয়ান মুকুট জয়

June 11, 2023 | 2:56 am

স্পোর্টস ডেস্ক

পেপ গার্দিওলার ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া ম্যানচেস্টার সিটির শিরোপা কেবিনেটে অপূর্ণতা একটিই। ইউরোপিয়ান ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদার টুর্নামেন্ট উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের রুপালি শিরোপাটি। অবশেষে ঘুচল সেই আক্ষেপও। তুরস্কের ইস্তানবুলে ইন্টার মিলানকে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান মুকুট জয় করলো ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি।

বিজ্ঞাপন

ইস্তানবুলে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মাঠে নামার আগে সবদিক দিয়েই এগিয়ে ছিল পেপ গার্দিওলার দল। তবে ফাইনালে আনকোরা নয় ইন্টার মিলানও। গোটা ম্যাচজুড়েই চললো সমানে সমান লড়াই। তবে পার্থক্য গড়ে দিল ৬৮তম মিনিটে রদ্রির করা গোলটি। ওই একমাত্র গোলেই জয় নিশ্চিত হলো সিটিজেনদের।

শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাসে নাম উঠলো সিটির। নিজেদের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা ঘরে তুললো। আর সেই সঙ্গে ইউরোপিয়ান ট্রেবলও জিতলো ম্যানচেস্টারের ক্লাবটি। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা আর অনেক আশা ভঙ্গের পর অবশেষে ম্যানচেস্টার সিটির হাতে ধরা দিল সেই ইউরোপিয়ান মুকুট। প্রথমার্ধ ম্যাড়মেড়ে কাটার পর দ্বিতীয়ার্ধে ইন্টার মিলানের রক্ষণের ভুলের সুযোগে ব্যবধান গড়ে দিলেন রদ্রি। বাকিটা সময় ওই ব্যবধান ধরে রেখে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরার মুকুট মাথায় তুলল পেপ গার্দিওলার দল। আর তাতেই নিশ্চিত হলো ইউরোপিয়ান ট্রেবলও।

২০২১ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের খুব কাছে গিয়েও হতাশ হতে হয়েছিল সিটিজেনদের। সেবার চেলসির কাছে হেরে শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি সিটির। তবে দুই বছর পরে এসে ইতিহাসই রচনা করে ফেললো পেপ গার্দিওলা বাহিনী। চলতি মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ জিতে আগেই ঘরোয়া ‘ডাবল’ পূর্ণ করে সিটি। এবার ইউরোপ সেরা হয়ে ‘ট্রেবলের’ স্বপ্নও পূরণ করল তারা। ইংলিশ ফুটবলে দ্বিতীয় এবং ১৯৯৯ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পর প্রথম দল হিসেবে এই অসাধারণ কীর্তি গড়ল তারা।

বিজ্ঞাপন

ফাইনালে ইন্টার মিলান কিছুটা দুর্ভাগা তো ছিলই। গোলপোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সিটি গোলরক্ষক এডারসনও করেছেন অবিশ্বাস্য কিছু সেভ। অন্যথায় একাধিক গোল পেতে পারতো তারা। ভাগ্যটা সঙ্গে ছিল না তাদের। অন্যদিকে গোটা মৌসুমে ৫২টি গোল করা আর্লিং হালান্ড এদিন ছিলেন নিজের ছায়া হয়েই। চ্যাম্পিয়নস লিগে ১২টি গোল থাকলেও সেমিফাইনাল ও ফাইনালে নেই কোনো গোল।

বেশ কিছু হাফ চান্স পেলেও গোল করার মতো প্রথম সুযোগ আসে ২৭তম মিনিটে। সিটি মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়ানো বল বাঁ প্রান্তে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন হালান্ড। তবে তার শট দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন ইন্টার গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানা। এর আট মিনিট পর বড় ধাক্কা খায় সিটি। চোটে পড়ে মাঠ ছাড়েন দলের সেরা তারকা ডি ব্রুইন। মাঠে নামার কিছুক্ষণ পর থেকেই অস্বস্তিতে ভুগছিলেন এই মিডফিল্ডার। তার জায়গায় মাঠে নামেন ফিল ফোডেন।

বিজ্ঞাপন

এরপর ম্যাচের প্রথমার্ধে দুই দলের কেউই তেমন গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। আর ম্যাড়মেড়ে প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যতে।

তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই সিটির খেলার ধরনই পাল্টে যায়। অন্যদিকে কম যাচ্ছিল না ইন্টার মিলানও। ৫৯তম ডিফেন্ডারের ভুলে ডি-বক্সের বাঁ প্রান্তে গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন লটারো মার্টিনেজ। কিন্তু দুরূহ কোণ থেকেই নিজেই শট নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার শট ঠেকিয়ে দেন সিটি গোলরক্ষক এদেরসন। অথচ অপর প্রান্তে অনেকটা ফাঁকায় ছিলেন বদলি খেলোয়াড় রোমেলু লুকাকু।

ম্যাচের ৬৮তম মিনিটে বার্নার্দো সিলভার নেওয়া শট ইন্টারের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে চলে যায় রদ্রির কাছে। এরপর বল পেয়ে বুলেট গতির ভলিতে বল জড়ান এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। এতেই সিটি এগিয়ে যায় ১-০ গোলের ব্যবধানে।

বিজ্ঞাপন

মিনিট দুই পরেই সমতায় ফেরার দারুণ এক সুযোগ আসে ইন্টারের সামনে। ফেদেরিকো দিমার্কোর হেড বাধা পায় ক্রসবারে। তারপরও সুযোগ ছিল ।ফিরতি বলে হেড করেন তরুণ ইতালিয়ান ডিফেন্ডার দিমার্কো, বল এগোচ্ছিল জালের দিকেই। তবে ঠিক সেই সময়েই জাল আর বলের মাঝখানে বাধা হয়ে দাঁড়ান রোমেলো লুকাকু। তার শরীরে লেগে বল প্রতিহত হয় আর বেঁচে যায় সিটি।

ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তেও সমতায় ফেরার দারুণ এক সুযোগ আসে সিটির সামনে। বক্সে বাঁ থেকে সতীর্থের হেড একেবারে গোলমুখে পেয়ে যান লুকাকু, সামনে একমাত্র বাধা ছিলেন এডারসন। হেডে সেই তার পায়েই মেরে বসেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড। এমন সুবর্ণ সুযোগ হারানোর হতাশায় দলটির খেলোয়াড়-কোচ থেকে শুরু করে ভক্ত সমর্থকদের মাথায় হাত উঠে যায়।

আর ম্যাচের যোগ করা অতিরিক্ত সময়ে এসেও কর্নার থেকে ইন্টারের দুর্দান্ত আক্রমণ দারুণ এক সেভে রুখে দেন এডারসন। এরপরেই রেফারি শেষ বাঁশি বাজান। আর ইউরোপিয়ান মুকুট পরে উল্লাসে মাতে ম্যানচেস্টার সিটি।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন