বিজ্ঞাপন

ধর্ষণ মামলায় মেডিকেল প্রমাণই গুরুত্বপূর্ণ: প্রধান বিচারপতি

May 12, 2018 | 8:02 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ধর্ষণ মামলায় ভিকটিমের বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল তথ্য-প্রমাণই গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। শনিবার (১২ মে) বিকালে সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

‘উচ্চ আদালতে সরকারি আইনি সেবা: বিচারপ্রার্থীগণের প্রত্যাশা ও জেল আপিল মামলা পরিচালনায় আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড শাখা ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

‘ধর্ষণ মামলায় ভিকটিমকেই প্রমাণ করতে হয়, তিনি ধর্ষিত হয়েছেন’ মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনামের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ভিকটিমকে প্রমাণ করতে হয় এ কথাটা ঠিক না। ধর্ষণ মামলা অনেক বড় মামলা। এ মামলা পরিচালনা ও প্রমাণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে আদালতে হাজির করা। এ মামলায় ভিকটিম শুধু একজন সাক্ষী মাত্র। ভিকটিমের বক্তব্য নির্ভরযোগ্য হলে কোলাবরেট (সহযোগী) লাগে না।’

বিজ্ঞাপন

ধর্ষণ মামলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মেডিকেল তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল এভিডেন্স পাওয়া গেলে বিচার করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের দেশে মেডিকেল এভিডেন্স তিন দিন, পাঁচ দিন এবং কখনো ১৫ দিন পরও আসে। দেখা যায় তখন সেখানে কোন আলামত থাকছে না। সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এসব মামলায় কোর্টকে দোষারপ করার আগে দেখতে হবে গলদটা কোথায়। ধর্ষণ মামলায় মেডিকেল এভিডেন্স যদি সঠিক এবং পরীক্ষিত হয়, তাহলে আসামির সাজা না হওয়ার কোন সুযোগ নাই।’

নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় সাজার হার মাত্র তিন শতাংশ কি কারণে হচ্ছে তা খুঁজে বের করতে হবে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘এর কারণ খুঁজতে প্রয়োজনে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের নিয়ে কর্মশালা করা যেতে পারে। কারণ কোর্ট বিচার করবে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে। যথেষ্ট সাক্ষ্য-প্রমাণ না থাকলে সাজা দেওয়া অসম্ভব। সুতরাং কি জন্য সাজা কম হচ্ছে সেটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। হতাশ হলে চলবে না।’

জেল আপিল মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে পৃথক একাধিক বেঞ্চ গঠন করা যায় কিনা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে বলেও জানান প্রধান বিচারপতি। এছাড়া উচ্চ আদালতে আইনি সেবা উন্নয়নে সুপ্রিমকোর্টের প্রশাসনিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা জজদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘জেলখানার অভ্যন্তরে থাকা কারাবন্দিদের খোঁজ নিন। তাদের সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবহিত হোন। অনিয়ম থাকলে কর্তৃপক্ষের নজরে আনুন। বিনা বিচারে আটক থাকলে তাদের আইনি সহায়তার উদ্যোগ নিন।’ এ সময় প্রধান বিচারপতি কারাগারের সঙ্গে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের নিবিড় যোগাযোগ স্থাপনের জন্য গুরুত্বরোপ করেন।

সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী, ভারপ্রাপ্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল ইকবাল হাসান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহিন আনাম প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমও

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন