September 6, 2023 | 9:58 pm
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী দাবদাহ ক্রমেই বায়ুর মান কমিয়ে দিচ্ছে এবং বায়ুদূষণকে বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, তীব্র বায়ুদূষণ আবার দাবদাহের কারণ হচ্ছে। এভাবে দাবদাহ ও বায়ুদূষণের এক দুষ্টচক্র তৈরি হচ্ছে, যা গোটা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের কারণ।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাব্লিউএমও) সম্প্রতি বায়ুমান ও জলবায়ুবিষয়ক বার্ষিক বুলেটিন প্রকাশ করেছে। বুলেটিনে সংস্থাটি বলছে, দাবদাহের কারণে কেবল তাপমাত্রাই ব্যাপক হারে বাড়ছে না, দূষণজনিত বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যারও কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বুলেটিনে আবহাওয়াবিদরা জলবায়ুর এই পরিবর্তন ও বায়ুদূষণের ‘দুষ্টচক্র’কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছেন।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, দাবদাহের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। ইউরোপেও দাবদাহের বিরূপ প্রভাব ছড়িয়েছে, বিশেষ করে মরু এলাকায় ধুলা ব্যাপক হারে বেড়েছে। উভয় ঘটনাই ২০২২ সালের বায়ুমানকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে।
ডাব্লিউএমও’র ওই বুলেটিনে বলা হয়েছে, ইউরোপে ২০২২ সালের তাপমাত্রা ছিল ইতিহাসের সর্বোচ্চ। এই চরম তাপমাত্রায় বায়ুতে ক্ষুদ্র কণার উপস্থিতি আগের তুলনায় বাড়িয়ে দিয়েছে। গত বছরের আগস্টের শেষ ভাগে ভূমধ্যসাগর ও ইউরোপে মরুভূমির ধূলিকণার পরিমাণও অস্বাভাবিক পরিমাণে বাড়িয়েছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার মহাসচিব অধ্যাপক পেটেরি টালাস বলেন, দাবদাহ বায়ুমান খারাপ করে দিচ্ছে। জনস্বাস্থ্য, বাস্তুসংস্থান এবং কৃষিসহ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে পরোক্ষভাবে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ুমানকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। তারা একে অন্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত, এদের ‘দুষ্টচক্র’কে ভাঙতে কাজও করতে হবে দুটি বিষয়কে একসঙ্গে আমলে নিয়েই।
মহাসচিব বলেন, বুলেটিনে গত বছরের আবহাওয়ার সব তথ্য রয়েছে। এই বছরটিতে তাপমাত্রা ছিল অনেক বেশি। এ বছরের জানুয়ারির অবস্থা ছিল আরও খারাপ। আর গত বছরের জুলাই ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণ মাস। ওই মাসে উত্তর গোলার্ধের বিভিন্ন অংশে তীব্র তাপমাত্রা বিরাজ করেছে। আগস্ট মাসেও এর প্রভাব ছিল।
এই দাবদাহ, দাবানল ও বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বুলেটিনে। ব্রাজিলের একটি কেস স্টাডির উদাহরণ দিয়ে বলা হযেছে, শহরাঞ্চলে পার্ক এবং বৃক্ষে আচ্ছাদিত এলাকাগুলো একদিকে যেমন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে, অন্যদিকে বায়ুমানকেও ভালো রাখতে সহায়তা করে।
ডাব্লিউএমও’র বিজ্ঞানী ড. লরেনজো ল্যাব্রাডোর বলেন, দাবদাহ ও দাবানল খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্কযুক্ত। দাবানলের ধোঁয়াতে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে যা বায়ুমান ও স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। একইসঙ্গে উদ্ভিদ, বাস্তুসংস্থান ও ফসলেরও ক্ষতি কর। এ ছাড়া আরও বেশি কার্বন নিঃসরণ ঘটনায় এবং বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাসের পরিমাণও বাড়িয়ে দেয়।
সারাবাংলা/টিআর