Sunday 15 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনবীর আদর্শ অনুসরণের আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:৩২

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মুসলমান সম্প্রদায়ের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরীতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। লাখো নবীপ্রেমীর অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা ও ধর্মীয় সম্মেলন থেকে দেশে-দেশে যুদ্ধবিগ্রহ ও হানাহানি বন্ধ করে বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় রাসূলের আদর্শ অনুসরণের আহ্বান এসেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা থেকে সম্মিলিত শোভাযাত্রা শুরু হয়। এতে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রদেশের সিরিকোট দরবার শরীফের উত্তরাধিকার সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ, সাবির শাহ ও হাশেম শাহ।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বনবীর পৃথিবীতে আগমন উপলক্ষে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের আয়োজনে এবারের ৫১ তম শোভাযাত্রা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। আহ্বান জানানো হয়েছে বিশ্বঐতিহ্য হিসেবে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে স্থান দেওয়ার।

আওলাদে রাসূলদের নিয়ে কাচে ঘেরা ফুলে সাজানো গাড়িটি যখন খানকাহ শরীফ থেকে মুরাদপুর আসে, তখন দক্ষিণ ও উত্তর চট্টগ্রাম, তিন পার্বত্য জেলা এবং কক্সবাজারসহ সারাদেশ থেকে আসা লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষের স্রোত নামে নগরজুড়ে। মুরাদপুর, চকবাজার, ওয়াসাসহ বিভিন্ন সড়কে প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এ শোভাযাত্রার অগ্রভাগে ছিল শতাধিক মোটরসাইকেল।

বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী মহানবীর আগমন ও ওফাতের দিনটিকে স্মরণে এ শোভাযাত্রা নগরীর বিবিরহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর দুই নম্বর গেট ঘুরে ফের মুরাদপুর বিবিরহাট প্রদক্ষিণ করে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদরাসা সংলগ্ন ধর্মীয় সম্মেলনের ময়দানে ফিরে আসে। কণ্ঠে হামদ ও নাত, হাতে কালেমা খচিত ব্যানার ও পতাকা নিয়ে নবীভক্তদের মুখে আরও ছিল রাসূলের শানে দরুদ ও সালাম।

মিল্লাদুন্নবীর ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরীজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। পতাকা, ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, তোরণ দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় নগরীর বিভিন্ন স্পটে সড়ক বিভাজকগুলোকে।

সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় চট্টগ্রাম নগরীতে যানবাহন ছিল তুলনামূলকভাবে কম। এরপর শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে নগরীর সংশ্লিষ্ট এলাকা ও সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল সীমিত করে পুলিশ। নগর পুলিশের উপকমিশনার (জনসংযোগ) স্পিনা রাণী প্রামাণিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে জশনে জুলুছ হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য পুরো নগরীতে মোতায়েন ছিল।’

আয়োজক সংগঠন আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের যুগ্ম মহাসচিব মোছাহাব উদ্দিন বখতেয়ার সারাবাংলাকে বলেন, ‘১৯৭৪ সাল থেকে ঈদে মিলাদুন্নবীতে চট্টগ্রামে জশনে জুলুছ (শোভাযাত্রা) হয়ে আসছে। আমাদের বার্তা হচ্ছে— শান্তি ও মানবতা। আল্লাহ তার রাসুলকে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন রহমত হিসেবে। এই রহমত শুধু মুসলমানের জন্য নয়, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টানসহ সমগ্র মানবজাতির জন্য। মানবতাই হচ্ছে বড় ধর্ম। দাঙ্গা, হাঙ্গামা, আগুন, জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর— এসব ইসলামে নেই। আমাদের হুজুরও বলেছেন, আমান বা শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি মানবতা ও শান্তির ডাক দিয়েছেন।’

সংগঠনের উপদেষ্টা পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফী মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ইসলামের বড় দৃষ্টান্ত। অসাম্প্রদায়িকতা এবং বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনবীর আদর্শে উজ্জীবিত হতে হবে।’

শোভাযাত্রা শেষে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদরাসা মাঠে মিলাদ মাহফিল শুরু হয়। সেখানে জোহরের নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা। এছাড়া দোয়া-মোনাজাত হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

সারাবাংলা/আরডি/ইআ

ঈদে মিলাদুন্নবী টপ নিউজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর