বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ৭০ বছরের বহমান সংগ্রাম

May 15, 2018 | 6:05 pm

। এইচ রহমান মিলু।

বিজ্ঞাপন

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি, এক ঐতিহাসিক দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের এসেম্বলী হলে সে সময়ের তরুন নেতা শেখ মুজিবের প্রেরণায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা ঘটে। ওই সভা আলো করে ছিলেন এক ঝাঁক মেধাবী ও প্রগতিশীল ভাবাদর্শের ছাত্রনেতা।

প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে সংগঠনটির নাম ছিলো ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’। পরবর্তিতে এর নাম ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ করা হয়। ছাত্রলীগের প্রথম আহ্বায়ক ছিলেন ছাত্রনেতা নাঈম উদ্দিন আহমেদ। সংগঠনটির প্রথম সভাপতি ছিলেন দবিরুল ইসলাম। সাধারণ সম্পাদক খালেক নেওয়াজ খান। আন্দোলন সংগ্রামে সময়ের প্রয়োজন মেটাতেই এগিয়ে চলা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। পথচলার ৭০ বছরে যা আজও বহমান।

জন্মলগ্ন থেকেই ভাষা ও শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম, গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনে নিরন্তর যোদ্ধা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রআন্দোলনের ইতিহাসের সাত দশকের সফল ও সাহসী ইতিহাসের অধিকার একমাত্র এই ছাত্র সংগঠনটিরই।

বিজ্ঞাপন

দেশ স্বাধীনের পর সামরিক শাসন, জিয়া ও এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে গনতন্ত্র পূনরুদ্ধান আন্দোলনে ছাত্রলীগের সাহসী নেতৃত্ব প্রধান ভূমিকা পালন করে। স্বাধীনতার আগে ২৪ বছর আর জাতির জনককে হত্যার পর ২১ বছর, ছাত্রলীগ কখনো শোষকের বিরুদ্ধে কখনো স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম করেছে। আজ তাই সংগ্রাম আর আন্দোলনের একটি ঐতিহাসিক নাম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

ঐতিহাসিক এই ছাত্রসংগঠনটি আন্দোলন সংগ্রামের পাশাপাশি তৈরি করেছে তোফায়েল আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল কুদ্দুস মাখন এর মতো জাতীয় নেতাদের। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও ছাত্রলীগ থেকে তৈরী হয়ে এসেই বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রধান নেতা। শুধু তাই নয়, আজকের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতাই ছাত্রলীগ করে আসা।

কিন্তু সম্প্রতি সেই ঐতিহাসিক সংগঠনটিরই নেতৃত্ব নিয়ে উঠেছে নানা প্রশ্ন। এটা সত্যি যে, একটি দল যখন দীর্ঘসময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে, তখন দলের ফাঁকফোঁকরে নীতি ও আদর্শহীন মানুষের অনুপ্রবেশ ঘটে। অপরদিকে আন্দোলন সংগ্রামে দল পরিশুদ্ধ হয়। ত্যাগী কর্মীদের সমাবেশ ঘটে দলে।

বিজ্ঞাপন

বর্তমান ছাত্রলীগও এর ব্যতিক্রম কিছু নয়। মাত্র কিছুদিন আগেই কোটা সংস্কারের নামে হওয়া একটি আন্দোলনে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দক্ষতার দৈন্যদশা দেখেছি। শুনেছি ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্র সংগঠনটির ভেতরে দলাদলির কথা, পদ বানিজ্যের কথা। সত্যাসত্য নির্ধারণের সময় এখনও পেরিয়ে যায়নি। কিন্তু নির্বাচনের আগের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এমন কথাগুলোও আশংকার। এই দলাদলিতে জড়িত সিন্ডিকেটবাজরা দলের জন্য ক্ষতিকর- এই বিষয়ে সন্দেহ নেই।

ছাত্রলীগের কতটা দৈন্যদশা হলে স্বয়ং বঙ্গবন্ধুকন্যাকে কমিটি তৈরী করে দিতে হয় তা বলার অপেক্ষা রাখ না।তবে এটি ভালো খবর যে, তিনি যখন হাতে নিয়েছেন, এবার নতুন নেতৃত্বে যারা আসবে তারা নিঃসন্দেহে যোগ্য হবে । পদ পেয়েই টেন্ডারবাজি করবেনা, মন্ত্রী এমপিদের কাছে ব্যবসা চাইবে না এতটুকু বিশ্বাস জনগণের আছে। আর নতুন নেতৃত্বও জনগণের এই আস্থা-বিশ্বাসের কথাটি মনে রেখে নিরন্তর কাজ করে যাবেন এটাই চাওয়া। ৭০ বছরের ইতিহাসসমৃদ্ধ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এই নতুন নেতারা যেন সংগঠনটিকে আরো এগিয়ে নিতে পারে, সাধারন ছাত্রদের ভরসার কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে একজন সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী হয়ে এই মুহুর্তে এরে চেয়ে বড় কিছু আর চাওয়ার নেই।

 

এইচ রহমান মিলু; আহবায়ক, অপরাজেয় বাংলা

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/ এসবি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন