বিজ্ঞাপন

‘অবরোধে অচল দেশ, দরজায় কড়া নাড়ছে বিজয়’

November 12, 2023 | 8:44 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গণতন্ত্রের পক্ষ শক্তির দরজায় কড়া নাড়ছে বিজয়ের হাতছানি। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে সর্বাত্মক অবরোধে অচল হয়ে গেছে বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

রোববার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা শুধুমাত্র নিজের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মরিয়া হয়ে হত্যা, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা, গ্রেফতারের মাধ্যমে গোটা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। জনগণের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ঠেকাতে শেখ হাসিনা নব্য নাৎসি কায়দায় অতীতের মতো আবারও গুমের উৎসব শুরু করেছে। প্রতিটি শহর-বন্দর-জনপদে এখন হাড়-হিম করা আতঙ্ক। চারদিকে ভয়ার্ত পরিবেশ। যেন হানাদার বাহিনী আক্রমণ করেছে বাংলাদেশের বুকে।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার গুম বাহিনীর ভয় দেখিয়ে মায়েরা তাদের বাচ্চাদের এখন ঘুম পাড়াচ্ছে। চারিদিকে শুধু জমাট বাঁধা কান্নার পাহাড়। প্রতিদিনই সেই কান্নার পাহাড় আরও উচু হচ্ছে। ১৫ বছর ধরে সেই কান্নার পাহাড় থেকে এখন চুইয়ে নামছে আর্তনাদ।’

বিজ্ঞাপন

রিজভী বলেন, ‘দিন-রাত তারা মাইক্রোবাস নিয়ে নাৎসি বাহিনীর মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। ছোঁ মেরে তুলে নিচ্ছে গনতন্ত্রকামীদের। তাদের হাতে সাধারণ মানুষও রেহায় পাচ্ছে না। র‌্যাব-পুলিশের নামধারী আওয়ামী পুলিশলীগ আন্দোলনরত নেতা-কর্মীদের না পেয়ে তাদের পিতা-মাতা, পুত্র-সন্তান, ভাই-বোন এবং আত্মীয় স্বজনদের ধরে নিয়ে অদৃশ্য করে রাখছে। তুলে নিয়ে গিয়ে অস্বীকার করছে। কোথাও কোথাও জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের মতো জিম্মী করে মুক্তিপন আদায় করছে। কোথাও কোথাও বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের না পেয়ে বাথরুম থেকে পানি এনে বাসার সব বিছানায় ঢেলে দিচ্ছে পুলিশ!’

তিনি বলেন, ‘সারাদেশে দলদাস পুলিশ বাহিনী বিনা মামলায়, বিনা ওয়ারেন্টে বা গায়েবি মামলায় পাইকারি হারে হাজার হাজার বিএনপি নেতা-কর্মী গ্রেফতার করে নির্যাতন করছে। তুলে নিয়ে গিয়ে বন্দি অবস্থায় অনেককে কোমর থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত হাতুড়িপেটা করে অচল করে দেওয়া হচ্ছে। গুলি করে পঙ্গু করে দেওয়া হচ্ছে। যা চরম মানবতাবিরোধী।’

রিজভী বলেন, ‘আস্তর্জাতিকভাবে ধিক্কৃত এই সরকারকে ক্ষমতায় রাখতে যারা গণতন্ত্রকামীদের গুম-খুন-গ্রেফতার-মিথ্যা মামলায় হয়রানি করছেন তাদেরকে সাবধান এবং হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি। আপনারা ভোটের অধিকার আদায়ে জণগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের প্রতিপক্ষ হবেন না। যে সব সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এখন পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে গণতন্ত্রকামীদের হুমকি দিচ্ছেন, তারা গণবিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসুন। অথবা পুলিশের মর্যাদাপূর্ণ ইউনিফর্ম খুলে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে রাজপথে নামুন।’

বিজ্ঞাপন

‘দুঃশাসনে পিষ্ট প্রতিবাদী মানুষকে নিশ্চিহ্ন করতে দলীয় ও অবৈধ রাষ্ট্রশক্তির হয়ে বেপরোয়া আচরণ করবেন না। আপনারা কে কী করছেন বাংলাদেশের জনগণ সব হিসাব রাখছে। গণঅভ্যূত্থানে আপনাদের পরিণতি কী হবে, তা জনগণ নির্ধারণ করে রাখছে’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই শুধু নয়, পেশাজীবী-শ্রমজীবী-কর্মজীবী এমনকি গার্মেন্টস শ্রমিকরা পর্যস্ত এই ফ্যাসিস্টদের কাছে নিরাপদ নয়। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির ন্যায্য দাবিতে আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের ওপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে চারজন শ্রমিককে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে কেন গাজীপুরে গার্মেন্টস কর্মী আঞ্জুয়ারা, মোঃ জামাল উদ্দিনকে হত্যা করা হল? গার্মেন্টস কর্মী আঞ্জুয়ারা, মো. জামাল উদ্দিন তো রাষ্ট্র ক্ষমতার ভাগ চান নি। আঞ্জুয়ারা শুধুমাত্র স্বামী সস্তান নিয়ে খেয়ে পরে একটু সুখে শাস্তিতে বেঁচে থাকার দাবি তুলেছিল।’

রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সুকৌশলে দেশের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় খাত পোশাকশিল্প ধ্বংসের নীল নকশা বাস্তবায়ন করছেন। তিনি পূনরায় চুয়াত্তরের মতো দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করতে চান, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করতে চান। বাংলাদেশি মালিকরা সরকারের প্ররোচনায় ১৫০ পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। ন্যায্য দাবি আদায়ের বিক্ষোভের দায়ে ১১ হাজার শ্রমিককে অভিযুক্ত করে মামলা করেছে দলদাস পুলিশ। পুরো অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। জনগণ বিশ্বাস করে, এখন রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসা অন্য দেশের হাতে তুলে দিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি চান শেখ হাসিনা।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এজেড/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন