বিজ্ঞাপন

এলডিসি থেকে উত্তরণে প্রণোদনা থাকছে বাজেটে

May 30, 2018 | 8:58 am

।। গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: চলতি বছরের মার্চে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি দেবে। বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হওয়ায় পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে জিএসপি ও কোটা সুবিধাসহ অনেক সুবিধা সংকুচিত হয়ে পড়বে। এসব মোকাবিলায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে বিশেষ প্রস্তুতি থাকছে। এর মধ্যে আসছে বাজেটে অবকাঠামো এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকছে যথাক্রমে সর্বোচ্চ ও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। এই দুই খাতের মধ্যে পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ৪শ ৪৯ কোটি টাকা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২২ হাজার ৯শ ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে। একইসঙ্গে বাজেটকে শিল্পবান্ধব করতে বাজেটে করপোরেট কর কমানো, সাবসিডিয়ারি কোম্পানির দ্বৈতকর পরিহার এবং পুরনো করদাতাদের ওপর করের বোঝা না বাড়িয়ে নতুন করে করের আওতা বাড়িয়ে শিল্পবান্ধব বাজেটের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাজেটে উচ্চ অগ্রাধিকার এবং অগ্রাধিকার খাত নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে একটি বা দুইটি খাতে অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে না। আমরা উন্নয়নশীল দেশের পথে হাঁটছি। ফলে সব দিক বিবেচনা করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। এবারের বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন না হলেও বিনিয়োগে উৎসাহিত করার দিকে খেয়াল রাখা হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে আগে থেকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকবে। নতুন করে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এলএনজি’তে। এর ওপর বিশেষ কিছু সুবিধা দেওয়া থাকবে যেন দেশে বিনিযোগ বাড়ে এবং শিল্পায়ন হয়।’

অন্যদিকে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করেছি। আগামী বাজেটে তার প্রতিফলন থাকতে হবে। এজন্য বাজেটে বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের দিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।’

তিনি বলেন, যেকোনো দেশের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের পূর্ব শর্ত হলো অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন। এজন্য জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়ন প্রয়োজন। আগামী বাজেটে এসব বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

উন্নয়নশীল দেশের জন্য বাজেটে করণীয়

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করায় বাংলাদেশকে নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন কৌশল নিতে হবে, যেন উৎপাদনশীলতা বাড়ে। তাদের মতে, আগামী বাজেটে শ্রমশক্তির দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। অর্থনীতি এখন যেভাবে দুয়েকটি খাতের ওপর নির্ভরশীল, সেই নির্ভরশীলতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। রফতানি খাত বাড়াতে হবে এবং দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে। বাজেটে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা এবং সুশাসন নিশ্চিতে গুরুত্ব দিতে হবে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও একাধিকবার গণমাধ্যমে বলেছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট নির্বাচনি ও উচ্চাভিলাসী বাজেট হবে না। তিনি বলেছেন, এবারের বাজেট হবে বিনিয়োগ ও শিল্পবান্ধব বাজেট।
এদিকে, আগামী বাজেটকে শিল্পবান্ধব বাজেট করতে ঢাকা চেম্বারের পক্ষ থেকে চারটি খাতের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে অর্থমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। খাত চারটি হলো— কর ব্যবস্থা সহজীকরণ ও করে আওতা বাড়ানো; অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়ন; বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বা বাণিজ্যিক অঞ্চল এবং বিনিয়োগ, আর্থিক খাত ও পুঁজিবাজার। আগামী বাজেটে এই চার প্রস্তাবের প্রতিফলন থাকছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম/টিআর

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন