ঢাকা: অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাজেটে দুই বছরের পরিকল্পনা থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান।
শনিবার (৮ জুন) বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ মন্তব্য করেন। এসময় সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়মা হক বিদিশা উপস্থিত ছিলেন।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বাজেটে দুই বছরের পরিকল্পনা দরকার। কারণ এক বছর এক বছরের যে ঘটনা দেখছি, তাতে একটু মোটামুটি বা মিডিয়াম টার্ম আমরা দেখছি। এটা-সেটা মিসিং হচ্ছে, সে জায়গাটা থাকা দরকার। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স যে কথাটা আছে আমরাতো সেই অবস্থান দেখতে চাই। এটার বিরুদ্ধে এতো উদ্যোগ, এতো কমিটি আছে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি বিরোধী উদ্যোগ আজই নেওয়া হচ্ছে না, অতীতে আমরা বিভিন্ন সময়ে শুনেছি। কিন্তু কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয় না। তাহলে সেগুলো কার্যকর হচ্ছে না কেন? এরকম পরিস্থিতির মধ্যেও কেন বড় বড় দুর্নীতির ঘটনা আমরা দেখতে পাই। সেজন্যই আমরা একটা পার্লামেন্টারি কমিটির কথা বলছি, সুপারিশ করছি। যেসব কমিটি এর আগে করা হয়েছে সেগুলোকেও আমরা স্বাগত জানাই। তবে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটা পার্লামেন্টারি কমিটির সুপারিশ করছি যেটা দায়বদ্ধ থাকবে পার্লামেন্টের কাছে।
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক কোথায়? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমরা বাজেটের সাথে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সম্পর্ক দেখি না। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা যেটা পাঁচ বছরের জন্য করা হয়, সেখানে পাঁচটা জাতীয় বাজেট থাকে। তাতে প্রতি বছরের বাজেটইতো হওয়া উচিৎ একটা স্টেপিং স্টোন। কিভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা খাতে ব্যয়, পঞ্চবার্ষিকীর পরিকল্পনায় যে পরিকল্পনা কমিটমেন্ট করা হয়েছে তার বাস্তবতা কতটুকু থাকে বাজেটে। দুর্ভাগ্যজনক যে সরকার যেটা কমিটমেন্ট করেছে যেটা পঞ্চবার্ষিকীর পরিকল্পনায় সর্বোচ্চ পরিকল্পনা, বাজেটে তার প্রপার প্রভাব নেই।
ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, গত এক বছর ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। বর্তমানে ৯ থেকে ১০ এর মধ্যে ওঠানামা করছে। প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছে। তবে বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর সঠিক কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, দেশের ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি বেড়েছে। প্রতি বছরই বাড়ছে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। ব্যাংকখাতে খেলাপি সর্বোচ্চ পর্যায়ে। প্রস্তাবিত বাজেটে খেলাপি ঋণ কমানোর জন্যও কোনো কর্মপরিকল্পনা নেই। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া উচিত না। এতে মূল্যস্ফীতি আরও বেড়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
হুন্ডি নিয়ে তিনি বলেন, খোলাবাজারের সঙ্গে অফিশিয়ালি ডলারের দামের পার্থক্য থাকলে হুন্ডি বন্ধ হবে না। দুই যায়গায় ডলারের দর কাছাকাছি করা উচিত। হুন্ডি ও কালো টাকা রোধ করতে কঠোর নজর দেওয়া দরকার।