বিজ্ঞাপন

ঈদের সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

June 2, 2018 | 2:11 pm

।। মো. আশিকুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ী: আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দম ফেলার সময় নেই রাজবাড়ীর সেমাই তৈরির কারিগর ও শ্রমিকদের। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে সেমাই তৈরির কাজ। তৈরিকৃত এসব সেমাই খোলা ও প্যাকেটজাত হয়ে জেলার চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায়। প্রতি কেজি খোলা সেমাই বাজারে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায় ও প্যাকেটজাত সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।

রাজবাড়ী বিসিক শিল্প নগরী এলাকার দ্বীন ফুড প্রোডাক্ট, শাওন ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ, কাজী ফুড প্রোডাক্ট ও সাগর ফুড প্রোডাক্ট নামে চারটি কারখানায় তৈরি হচ্ছে এসব সেমাই। সবগুলো কারখানা মিলিয়ে শতাধিক কারিগর ও শ্রমিক এখন সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

বিজ্ঞাপন

দ্বীন ফুড প্রোডাক্টের (ডায়মন্ড সেমাই) সেমাই তৈরির প্রধান কারিগর মমিন শেখ বলেন, ‘সারাবছর কাজের চাপ কম থাকলেও ঈদের দুই মাস আগে থেকে আমাদের কাজের চাপ বেড়ে যায়। এসময় কাজ করতে হয় সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। কোনোরকম রং ও কেমিক্যাল ছাড়াই স্বাস্থ্যকর পরিবেশে আমাদের এখানে সেমাই তৈরি করা হয়। প্রথমে ময়দা দিয়ে সেমাই তৈরি করে পরে তা রোদে শুকিয়ে তারপর ভাজা হয়। এরপর প্যাকেটজাত করে বাজারে সরবরাহ করা হয়। আমাদের তৈরিকৃত সেমাই রাজবাড়ী জেলার চাহিদা মিটিয়েও পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরসহ কয়েটি জেলায় সরবরাহ করা হয়।’

কাজী ফুড প্রোডাক্টের সেমাই তৈরির প্রধান কারিগর সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘এখানকার চারটি কারখানার মধ্যে আমাদের কারখানাটি একটু ছোট। এই কারখানায় আমরা নারী ও পুরুষ মিলিয়ে পাঁচজন শ্রমিক কাজ করি। কিন্তু তারপরেও আমরা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রুচিসম্মত সেমাই তৈরি করে চলেছি। আমাদের হাতের তৈরি সেমাই খেয়ে ঈদের দিনের শুরু হবে, এটা ভেবে অনেক আনন্দ নিয়ে কাজ করছি।’

বিজ্ঞাপন

দ্বীন ফুড প্রোডাক্টের মালিক কামিরুল হোসেন বলেন, ‘রাজবাড়ীর বিসিক শিল্প নগরীতে জমি লিজ নিয়ে কারখানা নির্মাণ করে আমি দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সেমাই তৈরি করে আসছি। সারাবছরই এ সেমাই তৈরি হয়। স্বাভাবিক সময়ে মাসে প্রায় এক হাজার কার্টুন (৩০০ গ্রাম করে ২৪ প্যাকেট  = এক কার্টুন) সেমাই বিক্রি হয়। কিন্তু ঈদের আগের দুই মাস পাঁচ-ছয় হাজার কার্টুন করে সেমাই বিক্রি হয়। এ কারণে এ সময়টিতে শ্রমিকের সংখ্যা দ্বিগুণ লাগে। আর আমাদের সেমাই রং ও কেমিক্যাল ছাড়া তৈরি করা হয় বলে বাজারে এর চাহিদাও অনেক বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সেমাই তৈরির কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি, কারিগর ও শ্রমিকদের মজুরি, জমির লিজ ভাড়া ও সরকারের ভ্যাটসহ সব খরচ মিটিয়ে এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখা এখন কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এ ধরনের কুটির শিল্প বাঁচাতে সরকারের কাছে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

রাজবাড়ী বিসিক শিল্প নগরীর সহকারী আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বিসিক শিল্প নগরীর চারটি মিলে যত্নসহকারে মান সম্মতভাবে সেমাই তৈরির নির্দেশনা দেওয়া আছে। তারা নির্দেশনা অনুযায়ীই সেমাই তৈরি করছে। এখানকার সেমাই জেলার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। এসব সেমাই কারখানায় গ্যাসের ব্যবস্থা নেই এবং ঠিকমতো বিদ্যুৎ থাকে না। কারখানাগুলোতে যদি নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং ব্যাংক থেকে ঋণ সহায়তা দেওয়া হয় তাহলে তারা আরও বেশি করে সেমাই উৎপাদন করতে পারবে। এতে আরও অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।’

সারাবাংলা/টিএম/এমও

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন