বিজ্ঞাপন

ঈদের নিরাপত্তায় চট্টগ্রামের বিনোদন কেন্দ্রের দিকে নজর পুলিশের

June 15, 2018 | 10:36 am

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সর্বোচ্চ লোকসমাগমের কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রামের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে জেলা পুলিশ। এছাড়া ঈদ জামাতে জঙ্গি হামলা, সম্প্রদায়গত দ্বন্দ্ব ও জামাতে আধিপত্য নিয়ে বিরোধে অপ্রীতিকর ঘটনা মোকাবেলারও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে পুলিশ।

চট্টগ্রামের যেসব পর্যটন কেন্দ্রকে নিরাপত্তার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, মিরসরাই উপজেলার মহামায়া লেক, আনোয়ারা উপজেলায় পারকি সমুদ্র সৈকত, রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় এভিয়ারি পার্ক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, বাঁশখালী উপজেলায় ইকোপার্ক ও দুটি ছোট সমুদ্র সৈকত, ফটিকছড়ি উপজেলায় তিনটি চা-বাগান এবং সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-ভাটিয়ারি এলাকায় সমুদ্র সৈকতসহ বেড়ানোর জায়গাগুলো।

প্রতিবছর ঈদের দিন বিকেল থেকে এসব পর্যটন কেন্দ্রে লোক সমাগম শুরু হয়। বিভিন্ন বয়সী নারীপুরুষ, শিশু সেখানে বেড়াতে যান। ঈদের পর আরও কমপক্ষে এক সপ্তাহ সেখানে বিনোদন পিয়াসী মানুষের ভিড় লেগে থাকে। তবে মহামায়া লেক এবং পারকিতে লোকসমাগম সবচেয়ে বেশি হয়।

বিজ্ঞাপন

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) নূরে আলম মিনা সারাবাংলাকে বলেন, বিনোদন কেন্দ্রগুলোকে এবার আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। সেখানে এত লোক যায়, যে কোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। আবার সুযোগসন্ধানীরা ইচ্ছাকৃতভাবে কোন ঘটনা ঘটিয়ে সেটাকে ইস্যু বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাতে পারে। সেজন্য সব বিনোদন কেন্দ্রে ঈদের দিন থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আমাদের সিনিয়র অফিসাররা সরাসরি মনিটরিং করবেন।

প্রতিটি বিনোদন কেন্দ্রে সার্বক্ষণিকভাবে কমপক্ষে ১০০ পুলিশ রাখার কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

বিজ্ঞাপন

জেলা পুলিশ সূত্র মতে, জেলা পুলিশের আওতাধীন চট্টগ্রামের ১৬ উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে এবার ২০৯৭টি ঈদ জামাতের স্থান তালিকাভুক্ত করেছে পুলিশ। জনবল সংকটের কারণে সব জামাতে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে না। তবে রাউজান, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী এবং পটিয়ায় শ’খানেক ঈদ জামাতে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। এর বাইরে প্রত্যেক উপজেলা সদরে কিংবা গ্রামে যেসব জামাতে ভিআইপি, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নামাজে অংশ নেবেন, সেখানে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

ঈদ জামাত সহ সার্বিক নিরাপত্তায় এবার ২ হাজার ৩৫০ জন অতিরিক্ত পুলিশ বিভিন্ন উপজেলায় মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন এসপি নূরে আলম মিনা। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সব ঈদ জামাতে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান এবং পটিয়ায় ওহাবি-সুন্নি দ্বন্দ্ব আছে এমন ঈদ জামাত আছে। আবার কিছু ঈদ জামাত নিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে আধিপত্যের বিরোধ আছে। এরকম একশ’র মতো জামাতে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।’

তবে সুনির্দিষ্ট তথ্য না থাকলেও ঈদ জামাতে জঙ্গি হামলা মোকাবেলার প্রস্তুতিও আছে বলে জানিয়েছেন এসপি।

তিনি বলেন, জঙ্গিদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। তবে আমাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। আমরা সবসময় সতর্ক থাকি। গোয়েন্দা তথ্যও সংগ্রহ করি। ঈদের দিন এ সংক্রান্ত যে কোন তথ্য পেলে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাওয়া কিংবা আগে থেকে প্রতিরোধ করার প্রস্তুতি আমাদের আছে।

বিজ্ঞাপন

এসপি জানিয়েছেন, নির্বাচনের বছর হওয়ায় এবার ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে যাতে কোনো ধরনের নাশকতা কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। জেষ্ঠ্য সকল কর্মকর্তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। অধিকাংশ পুলিশ সদস্যও এবার ছুটি পাননি।

শুক্রবার (১৫ জুন) চাঁদ দেখা গেলে শনিবার সারাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে পরদিন রোববারও ঈদুল ফিতর উদযাপন হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সারাবাংলা/আরডি/টিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন