বিজ্ঞাপন

কোরবানির হাট কাঁপাবে ৪৫ মণের মানিক

July 6, 2022 | 10:04 am

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

টাঙ্গাইল: উদ্যোক্তা হামিদা আক্তার স্বপ্ন দেখেন বড় খামারি হওয়ার। তাই অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি গরু দিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন। পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী ও ষাঁড় লালনপালন করেন। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে গত বছর সুবিধা করতে পারেননি তিনি। তবুও হাল ছাড়েন হামিদা। দেশীয় পদ্ধতিতে লালন-পালনে করে বড় করেছেন ৪৫ মণ (১৮০০ কেজি) ওজনের ষাঁড়কে, যাকে মানিক নামে ডাকেন তিনি। পাঁচ বছর বয়সী মানিক এবার কোরবানির হাট কাঁপাবে এমনটাই আশা করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

আসন্ন ইদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির হাটে বিক্রির এর মধ্যেই মানিকের দাম হাকা হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা। ষাঁড়টি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বাড়িতে ভীড় করছেন মানুষ। ন্যায্য দামে ষাঁড়টি বিক্রি করতে পারলে তার খামার করার স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান হামিদা।

হামিদা আক্তার জানান, পরিবারের সদস্যের মতোই তার গরুগুলো বড় হচ্ছে। গোয়াল ঘরে দুটি সিলিং ফ্যান ও মশারি রয়েছে। নিয়মিত খাবারের তালিকায় খর, ভুষি, কাঁচাঘাস, মাল্টা, পেয়ারা, কলা, মিষ্টি কুমড়া ও মিষ্টি আলু রয়েছে। রোগ জীবাণুর হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করান হয়। মানিকের পেছনে দৈনিক খাবার লাগছে ১৭ কেজি গমের ভুষি, ৪ কেজি ছোলা, ২ কেজি খুদের ভাত, আধা কেজি সরিষার খৈল। এছাড়াও তাকে খাওয়ানো হচ্ছে নানা জাতের পাকা কলা। বর্তমানে মানিকের ওজন ৪৫ মণ।

তিনি জানান, পাঁচ বছর আগে তার বাড়িতে ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভি থেকে মানিক ও রতন নামে দুটি ষাঁড় বাছুর জন্ম নেয়। গেল বছর কোরবানির হাটে ওই ষাঁড় দুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। গত বছরই মানিকের ওজন ছিল ৩৫ মণ এবং রতনের ওজন ছিল ৩৪ মণ। দাম চেয়েছিলেন মানিকের ১৪ লাখ এবং রতনের ১৩ লাখ টাকা। পাইকাররা বাড়িতে এসে মানিকের দাম বলেছিলেন ৯ লাখ টাকা। কিন্তু বাকিতে চাওয়ায় মানিককে আর বিক্রি করা হয়নি। পরে মানিক ও রতনকে ঢাকার গাবতলী হাটে নেওয়া হয়। করোনার কারণে হাটে নিয়েও সুবিধা হয়নি। মাত্র ৪ লাখ টাকায় রতনকে বিক্রি করা হলেও মানিককে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।

বিজ্ঞাপন

হামিদা আরও জানান, বাড়ি থেকেই ষাঁড় বিক্রি করার চেষ্টা করছেন তিনি। বাড়িতে এসে যদি কোনো ক্রেতা ন্যায্য দাম দেন- সেক্ষেত্রে নিজ খরচে মানিককে ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নেবেন। এ বছর ভালো দামে মানিককে বিক্রি করতে পারলে তার স্বপ্নের খামারটি নির্মাণ করবেন। ওই খামারে লালনপালন করবেন ভালো জাতের সব গরু।

হামিদা আক্তারের মা রিনা বেগম জানান, তার মেয়েদের জন্মের আগে থেকেই ওদের বাবা গরু লালনপালন করতেন, যা দেখে হামিদাও গরু লালনপালনে আগ্রহী হয়েছে।

দেলদুয়ারের লাউহাটি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বুদ্দু বলেন, হামিদা আক্তার একজন কৃষক বাবার মেয়ে ও কলেজ ছাত্রী এবং একজন ভালো উদ্যোক্তা। তিনি বেশ কিছুদিন যাবৎ গরুও লালনপালন করছেন। তার ছোট খামারে এবার ৪৫ মণ ওজনের একটি ষাঁড় গরু রয়েছে। ষাঁড়টি ভালো দামে বিক্রি হোক এটাই চাই।

বিজ্ঞাপন

লাউহাটি ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন মোহাম্মদ খান বলেন, উদ্যোক্তা হামিদার গরু লালনপালনকালে তিনি কারও কাছে সহযোগিতা চাননি। তিনি বড় ধরনের গরুর খামার করতে যদি সহযোগিতা চান অবশ্যই করা হবে।

এ বিষয়ে দেলদুয়ার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজভী জানান, সম্ভবত জেলায় হামিদার ষাঁড়টিই সবচেয়ে বড়। প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ওয়েবসাইটে (অনলাইন হাট) তার ষাঁড়টির ছবি, ওজন ও দাম উল্লেখ করে বিক্রির জন্য প্রচারণা চালানো হবে।

সারাবাংলা/এনএস

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন