বিজ্ঞাপন

খুলনা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টারে যোগ হচ্ছে নতুন সুবিধা

February 1, 2021 | 10:39 am

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে খুলনা নগরীতে চলছে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টার নির্মাণের কাজ। দুই তলা বেজমেন্টসহ সেন্টারটিতে হবে ১৫ তলা ভবন। ২০১৯ সাল থেকে তিন বছর মেয়াদে শুরু হওয়া প্রকল্পটির অগ্রগতি গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২ শতাংশ। এ বছরের মধ্যেই সেন্টারটি নির্মাণের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে এর মধ্যেই আধুনিক এই কনভেনশন সেন্টারে বাড়তি আরও কিছু সুবিধা যোগ করার প্রস্তাব উঠেছে। আর সেসব সুবিধা যোগ করতে প্রকল্পটি সংশোধনেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

চলমান প্রকল্পটিতে নতুন করে যেসব সুবিধা যুক্ত করার প্রস্তাব চলছে তার মধ্যে রয়েছে— একটি বার, সুইমিংপুলে গিজার তথা গরম পানির সংস্থান, স্টিম সনা (sauna) কক্ষ, গুল্মজাতীয় গাছ বসানোর স্থান, লাইব্রেরি অফিস কক্ষ ও এটিএম বুথ। সেই সঙ্গে জিমের জন্য যন্ত্রপাতি, লন্ড্রি যন্ত্রপাতি, কিচেন সামগ্রী ও ইনডোর গেমসের সামগ্রী কেনা হবে।

এ কারণে ‘খুলনা শহরে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কনভেনশন সেন্টার নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এসব বিষয় তুলে ধরা হয়। সম্প্রতি ওই সভার কার্যবিরণী জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

ওই কার্যবিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রকল্প পরিচালক স্টিয়ারিং কমিটির সভায় জানান, প্রকল্পের মোট অনুমোদিত ব্যয় ১৪৬ কোটি ২৭ লাখ টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। চলতি অর্থ বছরের প্রকল্পের অনূকূলে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তারমধ্যে ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা। প্রকল্পের শুরু হতে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক ব্যয় ২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা প্রকল্পের মোট অনুমোদিত ব্যয়ের ১৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের বাস্তব কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালক বলেন, কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী ভূমি উন্নয়ন, শোর পাইল, কিংপোস্ট, প্রি-কান্ট পাইলিং কাস্টিং লোড টেস্ট, কাস্টিং অ্যান্ড ড্রাইভিং টাই বিম, ব্রেসিং পাইল ক্যাপ, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান, ওয়াটার রিজার্ভার, রিটেনিং ওয়াল ঢালাই, প্রথম বেজমেন্টের স্ল্যাবের ঢালাইসহ ব্লক বি-এর গ্রাউন্ড ফ্লোরের ঢালাইয়ের কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। সার্বিক কাজের বাস্তব অগ্রগতি প্রায় ৩২ শতাংশ।

প্রকল্প পরিচালক গত সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি সভাকে অবহিত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রকল্পের গুণগতমান নিশ্চিত করতে রড, বালি, সিমেন্টসহ সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রী যথাযথ প্রক্রিয়ায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে। সিভিল ড্রয়িং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভেটিং করা হয়েছে। এমইএফ ড্রইং-ডিজাইন গণপূর্ত অধিদফতরের ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং কার্যক্রম বাস্তবায়ন অব্যাহত রয়েছে।

স্টিয়ারিং কমিটির সভায় প্রকল্প পরিচালক ভবনের লেআউট ও ড্রইং-ডিজাইনে কিছু কার্যক্রম সংযোজনের প্রস্তাব দেন। তিনি বলেন, মূল ভবনের বেজমেন্ট মেইটেন্যান্স অফিস ও ওয়ার্কশপ, ড্রাইভারদের বিশ্রাম কক্ষ, ফার্নিচার স্টোর কক্ষ এবং সেমি-বেজমেন্ট ফুড ও বেভারেজ স্টোর রাখা যেতে পারে। এছাড়া গ্রাউন্ড ফ্লোরে স্টাফ ও অতিথিদের জন্য আলাদা টয়লেট এবং এই ফ্লোরে একটি কফিশপ ও জুসবার রাখা যেতে পারে। রিসিপশনে লকার ও এটিএম বুথের সংস্থান রাখা প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প পরিচালক আরও বলেন, মূল ভবনের প্রথম ফ্লোরে টয়লেটের সংখ্যা বাড়ানো, সম্মুখ অংশের পঞ্চম তলা বিল্ডিংয়ে টয়লেট ও ওয়াশ ব্লকের জায়গা রাখা, মূল ভবনের চতুর্থ ফ্লোরে ছাদের উম্মুক্ত অংশ ব্যবহার উপযোগী রাখা, পঞ্চম ফ্লোরে ম্যানেজমেন্ট অফিসে জেনারেল ম্যানেজারের কক্ষে টয়লেটের সংস্থান রাখা, ষষ্ঠ ফ্লোরে ইনডোর গেমস হলে টেবিল টেনিস, পুলসহ অন্যান্য খেলার সামগ্রীর ব্যবস্থা রাখা, ১২তম ফ্লোরে সুইমিং পুলের সাথে জিম ও সুইমিং পুলে গরম পানির ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) কিচেন সামগ্রী কেনার জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। লন্ড্রি সামগ্রী ও জিম সামগ্রী কেনার জন্য ডিপিপিতে কোনো বরাদ্দ রাখা হয়নি।

স্টিয়ারিং কমিটির সভায় খুলনা বিভাগীয় কমিশনার বলেন, মূল ভবনের ১২তম ফ্লোরে সুইমিং পুলের পাশে একটি বার স্থাপনের জায়গা রাখা যেতে পারে। তৃতীয় তলায় লাইব্রেরি রুমে লাইব্রেরিয়ানের জন্য একটি অফিস স্পেস রাখা প্রয়োজন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব বলেন, জিমের জন্য সরঞ্জাম, লন্ড্রির যন্ত্রপাতি, কিচেন সামগ্রীসহ অন্যান্য যেসব সামগ্রী আবশ্যক সেগুলো ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করে ডিপিপি সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। তিনি ভবনের ডিজাইন যথাযথ প্রক্রিয়ায় ভেটিং করে চূড়ান্ত করা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

এসময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বলেন, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিগুলো অন্তর্ভুক্ত করে ডিপিপি দ্রুত সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো প্রয়োজন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটির সভাপতি শেখ ইউসুফ হারুনের সই করা কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ভবনের বেজমেন্ট ও সেমি-বেজমেন্টের চূড়ান্ত লেআউট নকশা পরিবর্তন করা যাবে না। প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় মূল ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এটিএম বুথের স্থান, তৃতীয় তলায় লাইব্রেরি কক্ষে লাইব্রেরিয়ানের জন্য একটি আলাদা স্পেস রাখা এবং ভবনের কিচেন এরিয়াতে গ্যাস সংযোগের জন্য লাইন স্থাপনের জায়গা রাখা যেতে পারে। এছাড়া ভবনের ১২ তলায় সুইপিংপুলের পাশে একটি বার, সুইমিংপুলে গরম পানির সংস্থান এবং সুইমিং পুলের পাশে স্টিম সনা কক্ষ ও গুল্ম জাতীয় গাছ বসানোর জন্য স্থানের সংস্থান রাখতে হবে। এছাড়া সুইমিং পুলের জায়গা আরও বাড়ানো যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে।
কার্যবিবরণীতে আরও বলা হয়েছে, জিমের জন্য সরঞ্জাম, লন্ড্রি যন্ত্রপাতি, কিচেন সামগ্রী, ইনডোর গেমস সমাগ্রীসহ আরও যেসব সামগ্রীর প্রয়োজন রয়েছে, সেগুলোর সংখ্যা ও ব্যয় প্রাক্কলন করে ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্ত করে ডিপিপি সংশোধনের উদ্যোগ নিতে হবে। সেই সঙ্গে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে নিয়মিতভাবে চলমান নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করতে হবে। এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালককে প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন