চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ : কার ক্ষতি, কার লাভ?

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর চীন পাল্টা শুল্ক আরোপ করায় দুই পরাশক্তির মধ্যে পুরোদমে শুরু হয়েছে বাণিজ্য যুদ্ধ। তবে সাধারণ মানুষ কিভাবে এই যুদ্ধের ব্যাপারটা টের পাবে? এর জন্য কি তাদের পকেটে কোনো টান পড়বে?

চীনা পণ্যের ওপর যে ৩ হাজার ৪ শ কোটি ডলারের শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র—তা গত পরশু থেকে কার্যকর হয়েছে। আর চীনও তার জবাবে ৫৪৫টি মার্কিন পণ্যের ওপর একই রকম ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে—যার পরিমাণও সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৪ শ কোটি ডলার হবে।

চীন দাবি, বিশ্বের অর্থনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাণিজ্য যুদ্ধের শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে পশ্চিমা দেশগুলোতে বিভিন্ন জিনসপত্র, মোবাইল ফোন, ছাতা, এমনকি যৌন খেলনার দামও বেড়ে যাবে শিগগীরই।

তার কারণ এসব পণ্য তৈরি হয় চীনে।

শুধু পশ্চিমা দেশ নয়, সারা দুনিয়ার নানা দেশের ওপরই এর প্রভাব পড়বে। তার কারণ সব দেশই আমদানি করা পণ্য ব্যবহার করে।

যেমন আপনার হাতের আইফোনটি। এটি ডিজাইন করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু এটা তৈরি হয়েছে চীনে।

শুধু তাই নয়, এর যে নানান যন্ত্রাংশ—সেগুলো আবার তৈরি হয়েছে জাপান বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অন্য কোনো তৃতীয় দেশে।

কাজেই যুক্তরাষ্ট্র এর ওপর কর বসালে এর উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সব দেশের কর্মসংস্থানের ওপরই তার প্রভাব পড়ে। তার পর আছে ওভারহেড খরচ।

তাই তার প্রভাবে সারা দুনিয়ার ভোক্তাদের জন্য জন্যই আইফোনের দাম বেড়ে যেতে পারে।

কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চাইছেন আমেরিকার শিল্প এবং এবং কর্মংসংস্থানকে চাঙ্গা করতে, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র চীনে যত পণ্য বিক্রি করে তার চাইতে বেশি আমদানি করে। আর চীন চায় প্রযুক্তিতে বিশ্বে নতুন নেতা হয়ে উঠতে। তারা মেড ইন চায়না নামে ২০২৫ সাল পর্যন্ত একটা পরিকল্পনাও নিয়েছে।

তবে যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনকে আরও সস্তায় পণ্য রপ্তানি করতে পারবে—তারা হয়তো লাভবান হবে। এরকম দেশগুলোর একটি হচ্ছে বাংলাদেশ ও তার তুলা শিল্প।

আরও আছে মেক্সিকোর খেলনা উৎপাদনকারীরা। এ ছাড়া ভিয়েতনাম—যারা পোশাক সেলাই করে।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাণিজ্য যুদ্ধে যেহেতু পণ্যের দাম বেড়ে যায়—তাই শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ মানুষরাই, যারা পণ্য কেনে।

সূত্র: বিবিসি

সারাবাংলা/এমআই