বিজ্ঞাপন

জলাশয় ভরাট করে কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের ল্যাব নির্মাণ অবৈধ

January 28, 2024 | 9:13 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মিরপুরের গৈদারটেক এলাকায় থাকা জলাশয় রক্ষা ও সংরক্ষণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন কর্তৃক সেন্ট্রাল টিস্যু কালচার অ্যান্ড সিড হেলথ ল্যাবরেটরি নির্মাণের জন্য জলাশয় ভরাট অবৈধ ঘোষণা করেছেন আদালত। পাশাপাশি জলাশয়ের ভরাট করা অংশ তিন মাসের মধ্যে পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে এবং জলাশয় হিসেবে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী, মেজবাহুর রহমান শুভ, সৈয়দা সিলমা তামারিনা।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। বিএডিসির পক্ষে শুনানি করেন এস এম জহুরুল ইসলাম, রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইমাম হাসান এবং ডিএনসিসির আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত মিরপুর মৌজার গৈদারটেক এলাকায় ১১৭ একর জলাশয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়াটার রেগুলেটিং পন্ড হিসেবে চিহ্নিত। এ ওয়াটার রেগুলেটিং পন্ড ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) এ জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত। আধুনিক পদ্ধতিতে বীজ আলু উৎপাদনের লক্ষ্যে ‘সেন্ট্রাল টিস্যু কালচার অ্যান্ড সিড হেলথ ল্যাবরেটরি’ নির্মাণের জন্য ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) চিহ্নিত এই জলাশয়ের প্রায় ১২ একর জমি ভরাট করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন। সরকারি সংস্থা কর্তৃক জনগুরুত্বপূর্ণ এ জলাশয় ভরাটের সংবাদ দেশের জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন উল্লিখিত জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনকে পত্র প্রেরণ করে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত পত্রের তোয়াক্কা না করে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনোরূপ অনুমোদন ছাড়াই এ জলাশয় ভরাট করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোশন।

বিজ্ঞাপন

প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন, ২০০০ ও সরকার কর্তৃক গেজেটকৃত ডিটেইল্ড এরিয়া প্ল্যানে জলাশয় হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন এবং জলাশয়ে বালু ভরাট ও অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের সুযোগ নেই। টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৩ অনুযায়ী রাজউকের আওতাধীন এলাকায় যেকোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করতে হলে রাজউকের অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

দেশে প্রচলিত আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন কর্তৃক জলাশয় ভরাটের বিরুদ্ধে গত বছরের ১ আগস্ট জনস্বার্থে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও ওই এলাকার তিন বাসিন্দা এ বিষয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

রিটে পরিবেশ সচিব, কৃষি সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, ঢাকা জেলার জেলা প্রশাসক, ঢাকার পুলিশ সুপার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশ অধিদফতর, ঢাকা মহানগরের পরিচালক এবং সেন্ট্রাল টিস্যু কালচার অ্যান্ড সিড হেলথ ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের প্রকল্প পরিচালককে বিবাদী করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৩ আগস্ট রুল জারির পাশাপাশি জলাশয় ভরাটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত। আজ ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন