বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ভাগ্য নির্ধারণ মঙ্গলবার

October 31, 2020 | 1:47 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা বাতিলের চূড়ান্ত ঘোষণার পর তিন সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। কিন্তু এখনো স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে— তারা প্রত্যেকেই শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিত রেখে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। তবে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু ১৩ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীর উচ্চ শিক্ষা জীবনে প্রবেশের পথটিই এখনো অনিষ্পন্ন রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যলয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সূত্রে জানা গেছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বৈঠক হলেও সে বৈঠক থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। ওই বৈঠকে সফটওয়্যার বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যরেম ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার কথা জানানো হয়। তবে সে বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়নি। এ পরিস্থিতিতে আগামী মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) ইউজিসি’র সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যদের একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মঙ্গলবারের এই বৈঠক থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার ভবিষ্যৎ চূড়ান্ত হবে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ইউজিসিতে। ওই বৈঠক থেকেই মঙ্গলবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটি আসবে ৩ নভেম্বর। ওই দিন শিক্ষামন্ত্রীর উপস্থিতিতে ইউজিসি ও মন্ত্রণালয় বসবে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা থাকবেন। আশা করছি, সেদিনিই চূড়ান্ত ঘোষণা দিতে পারব।

এর আগে, গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের এক বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটি সফটওয়্যার প্রদর্শন করেন। ওই সফটওয়্যার দিয়ে অনলাইনে ভর্তি নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠকের আহ্বান জানায় পরিষদ। সে আহ্বানের পর ওই সফটওয়্যার যাচাই-বাছাই করতে আগ্রহী হয় ইউজিসি। সে আগ্রহ থেকেই ৩ নভেম্বরের বৈঠকটি আহ্বান করেছে ইউজিসি, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ ছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

বিজ্ঞাপন

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, ৩ নভেম্বর আমাদের একটি বৈঠক আছে। ওই বৈঠকে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সফটওয়্যারটির একটি প্রেজেন্টেশন হবে। ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা কতটা সঠিকভাবে নেওয়া সম্ভব হবে, সে বিষয়টি যাচাই করা হবে। এ জন্য কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারও সভায় থাকবেন। সবাই সন্তুষ্ট হলে অনলাইন ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বৈঠকের পর সফটওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে এরই মধ্যে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় সরাসরি জানিয়েই দিয়েছে, তারা আগের মতোই শিক্ষার্থীদের শারীরিক উপস্থিতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। গত ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও ২৭ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী করবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানা যায়নি। তারা হয়তো মঙ্গলবারের বৈঠকের অপেক্ষাতে রয়েছে।

এদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি চান, যেভাবেই হোক এ বছর থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু হোক। এর আগেও ‍গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেঁকে বসায় সেটি সম্ভব হয়নি। শিক্ষামন্ত্রী মনে করছেন, এ বছর যে পরিস্থিতি, তাতে করে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারলে শিক্ষার্থীদের জটিলতা যেমন কমবে, তেমনি করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে।

বিজ্ঞাপন

গত বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনেও শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সমন্বিত পদ্ধতিতে পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ঝুঁকি ও সময় অপচয় কম হবে। তবে সেই ‍গুচ্ছ পরীক্ষা অনলাইনে হবে নাকি শিক্ষার্থীদের সশরীরে উপস্থিতিতে হবে, সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি তিনি।

চলমান পরিস্থিতিতে তাই আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছুদের মঙ্গলবারের বৈঠকের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই।

সারাবাংলা/টিএস/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন