ফরাসিদের রুখে শেষ ষোলোতে ডেনিশরা
২৬ জুন ২০১৮ ২২:০১
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
গ্রুপ ‘সি’র গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয় ফ্রান্স-ডেনমার্ক। মঙ্গলবার (২৬ জুন) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়াম মাঠে নামে দুই দল। বিরতির আগে কোনো দলই গোলের দেখা পায়নি। বিরতির পরও একই অবস্থা বজায় থাকে। গোলশূন্য সমতায় শেষ হলেও নকআউট পর্বে উঠেছে ডেনমার্ক-ফ্রান্স, বিদায় নিয়েছে এই গ্রুপের বাকি দুই দল অস্ট্রেলিয়া-পেরু।
একই সময়ে সোচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে পেরু। আগেই প্রথম দুই ম্যাচ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকা ফ্রান্স শেষ ষোলো নিশ্চিত করে। তবে এক ম্যাচ জয় আর এক ম্যাচ ড্র করা ডেনমার্ক শেষ ষোলো নিশ্চিত করতেই মাঠে নেমেছিল। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে এরই মধ্যে বিদায় নিয়েছে পেরু। আর দুই ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে থাকা অস্ট্রেলিয়াও পিছিয়ে ছিল অনেকটাই। অপর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে পেরু। ফলে, ‘সি‘ গ্রুপে ফ্রান্স ৭ পয়েন্ট নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো। আর ৫ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করলো ডেনমার্ক। ৩ পয়েন্ট পাওয়া পেরু আর ১ পয়েন্ট পাওয়া অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিলো।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে পেনাল্টির আবেদন করেছিল ডেনমার্ক। তবে, সেই আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। ১৫ মিনিটের মাথায় ফ্রান্সের তারকা গ্রিজম্যান-দেম্বেলের দারুণ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় ডেনমার্কের ডিফেন্সে। ২৯ মিনিটে গ্রিজম্যানের ক্রস কোনো সতীর্থের দেখা না পেলে গোল পাওয়া হয়নি ফরাসিদের। পাল্টা আক্রমণে ফ্রান্সের ডিফেন্স চেঁড়া পাস দিয়েছিলেন ডেনমার্কের ব্রাথওয়েইট। তবে, এ যাত্রায়ও গোল আদায় করে নিতে পারেনি কোনো ডেনিশ খেলোয়াড়।
৩৪ মিনিটের মাথায় ডেনমার্কের ডি-বক্সের অনেক দূর থেকে জোরালো শট নেন বার্সা তারকা ফ্রান্সের দেম্বেলে। তবে, গোলপোস্টের গাঁ-ঘেষে বল বাইরে চলে যায়। ৩৭ মিনিটে আরেকটি ফরাসি আক্রমণ রুখে দেয় ডেনমার্কের ডিফেন্ডাররা। ডি-বক্সে বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগেই উল্টে পড়ে যান গ্রিজম্যান।
৪০ মিনিটে গ্রিজম্যানের জোরালো শট নিজের গ্লাভসবন্দি করেন ডেনমার্কের গোলরক্ষক। ৪৩ মিনিটের মাথায় অলিভের জিরুদ ডেনমার্কের বক্সে ফাঁকায় বল পেলেও গোলবারের উপর দিয়ে শট নেন, নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে ফরাসিরা। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে কোনো দলই গোল করতে পারেনি।
বিরতির পর ৫৪ মিনিটের মাথায় ডেনমার্কের ক্রিস্টিয়ান এরিকসনের দূরপাল্লার জোরালো শট নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন ফরাসি গোলরক্ষক। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে মাঠ থেকে উঠে যান গ্রিজম্যান। বদলি হিসেবে মাঠে নামেন নাবিল ফেকির। আর মাঠে নামার এক মিনিটের মাথায় ডেনমার্কের রক্ষণ কাঁপিয়ে শট নেন ফেকির, বল জালের পাশে স্থান নেয়।
৭৩ মিনিটে জিরুদের হেড পোস্টের বাইরে চলে যায়। ৭৮ মিনিটে ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম দেম্বেলেকে তুলে নিয়ে মাঠে পাঠান এমবাপেকে। ৮২ মিনিটে এমবাপের ক্রস থেকে বল পান ফেকির। তার দুর্বল শট রুখে দেন ডেনমার্কের গোলরক্ষক। ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো গোল হয়নি।
এবারের আসরে দারুণ খেলা উপহার দিয়ে চলেছে গ্রুপ পর্বে সবার ওপরে থাকা ফ্রান্স। প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে, আর দ্বিতীয় ম্যাচে পেরুকে ১-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সবার ওপরে থেকেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়েছে ফ্রান্সের। এবার দল নির্বাচনে অভিজ্ঞতার চেয়ে তারুণ্যের দিকেই ঝুঁকেছিলেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। এর মধ্যে বড় ভরসা হিসেবে পগবা-গ্রিজমানরা তো আছেনই, আছেন নবীন ওসমান দেম্বেলে, নাবিল ফেকির, এমবাপে, উমতিতিরা। কাগজে কলমে এই দলটা বিশ্বসেরা হতেই পারে।
বিশ্বকাপে ১৪ বার অংশ নিয়ে ৫ বার সেমিফাইনাল আর ২ বার ফাইনাল খেলে ১৯৯৮ সালে শিরোপা জিতেছিল ফ্রান্স। এবার রাশিয়া বিশ্বকাপে ফেভারিট তালিকায় অনেকটাই এগিয়ে আছে তারা।
ডেনমার্ক প্রথম ম্যাচে পেরুকে ১-০ গোলে হারিয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছিল। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ম্যাচে ২-২ গোলে ড্র করে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে তাদের। বিশ্বকাপে ৪ বার অংশগ্রহণের মধ্যে ডেনমার্কের সেরা অর্জন ১৯৯৮ সালের কোয়ার্টার ফাইনাল।
সারাবাংলা/এমআরপি