ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই পিছিয়ে পড়া, তাও মাঝ মাঠ থেকে ভারত অধিনায়ক শামির নেয়া এক ফ্রিকিকে। বাংলাদেশি গোলরক্ষক ইসমাইল হোসেন এগিয়ে এসেছিলেন বেশ, সেটা দেখেই কিনা শামি নিলেন লম্বা এক শট। পিছিয়ে যেতে যেতে আর শেষ রক্ষা হয়নি। ইসমাইলের গ্লাভস ছুঁয়ে বল জড়ায় জালে। এরপর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের টানা আক্রমণের মুখে ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশের রক্ষণভাগ।
তবে বাংলাদেশ যে কয়বার আক্রমণে উঠেছে, ভুগেছে ফিনিশিংয়ের অভাবে। কিন্তু ম্যাচের ৬১ মিনিটে সুপার সাব জয় আহমেদের গোলে সমতায় ফিরে জমিয়ে তোলে লড়াই। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আজ (রবিবার) সন্ধ্যায় অরুণাচলের ইউপিয়ার গোল্ডেন জুবিলি স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারে ভারতের কাছে ৪-৩ ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। বাংলাদেশকে হারিয়ে সাফের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্যাটাগরিতে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জিতল ভারত।
টাইব্রেকারে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম শট নিতে আসা মিঠুন ঠান্ডা মাথায় করেন লক্ষ্যভেদ। বামদিকে শট নিলেও ভারতের গোলরক্ষক সুরাজ সিং ঝাপান ডানদিকে। পরের শটে মুর্শিদও একই দিকে শট নেন, গোলও পান। দলকে সমতায় ফেরানো জয়ের পা থেকে আসে টাইব্রেকারের তৃতীয় গোল।
এর আগে ভারতের হয়ে দ্বিতীয় শট নিতে আসা রোহেন সিংকে আটকে দেন ইসমাইল। গোলপোস্টের ডান দিকে তাক করে মারা শটটা দারুণ রিফ্লেক্সে সেভ করে দেন ইসমাইল। কিন্ত টাইব্রেকারে এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। টুর্নামেন্টে দারুণ খেলতে থাকা বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল চার নম্বর শটে বল রাখতে পারেননি পোস্টের মধ্যে। বিশাল চাপের মুখে থুবড়েই পড়লেন যেন তিনি, চিপ করতে গিয়ে তার নেয়া শটে বল খুঁজে পেল গ্যালারির দর্শকদের।
পঞ্চম শটে গোলের দেখা পেলেও বেঁচে থাকত জয়ের আশা, কিংবা নিদেনপক্ষে ম্যাচ যেতে পারত সাডেন ডেথে। কিন্তু শেষ শট নিতে আসা শাহেদ পোস্টের বাম দিকে ঘেষে বল পাঠালেও দারুণ হাতে সেই শট আটকে দেন সুরাজ। তখন ফাইনালের ভাগ্য এসে ভর করে ইসমাইলের গ্লাভসে। বল ঠেকিয়ে দিলে সাডেন ডেথ, গোল হজম করলে হতে হবে রানার আপ।
হলো দ্বিতীয়টাই। অধিনায়ক শামির বাম পায়ের আলতো শটে বল খুঁজে পায় বাংলাদেশের জাল। পুরো উল্টো দিকে ঝাঁপিয়ে ভারতকে শিরোপা উদযাপানে মাততে দেখেন ইসমাইল। এই শামির গোলেই ম্যাচে পিছিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ, টাইব্রেকারে তার গোলেই ভারত জিতল সাফের শিরোপা। শামির আগে টাইব্রেকারে ভারতের হয়ে গোল করেছেন মোহাম্মদ আরবাশ, ঋষি ও জদরিক আরবাঞ্চেস।