সমালোচনার রোল, ওসবে কান দেই না: নেইমার
৩ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫৭
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
রাশিয়া বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ফাউলের শিকার হয়েছেন নেইমার। চার ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ২৩ বার ফাউলের শিকার এই পিএসজি তারকা। গ্রুপ পর্বে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচেই দশবার ফাউলের শিকার হন নেইমার। ১৯৯৮ সালে ইংল্যান্ডের অ্যালান শিয়ারারকে এক ম্যাচে ১১ বার ফাউল করেছিল তিউনিসিয়ার খেলোয়াড়রা। এরপর এক ম্যাচে এতোবার ফাউলের শিকার হননি আর কেউ।
শেষ ষোলোর আগে নেইমারের দৃষ্টিনন্দন ফুটবল শৈলীর সঙ্গে আলোচনায় ছিল তার ‘অভিনয়’ প্রবনতা নিয়ে। হুটহাট নেইমারের যে ডাইভ দেয়ারও কিছু ঝোঁক আছে সে ব্যাপারটি স্বীকার করেছেন খোদ ব্রাজিলেরই অনেক সাবেক ফুটবলার। ব্রাজিলেরই অনেক ফুটবল দর্শকও ব্যাপারটিতে বিরক্ত ছিলেন। আবার কেউ কেউ নেইমারের এসব ডাইভ দেয়াতে বেশ মজাও পান বলে জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফুটবল বিষয়ক ট্রল পেইজগুলোতে নেইমারের এসব ডাইভ নিয়ে প্রতিনিয়ত বেশ হাস্যরসও হচ্ছে।
সার্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষের একটি ট্যাকেলে মোটামুটি সাত-আটবার গড়াগড়ি খেয়ে ইতোমধ্যে ফুটবল দর্শকদের কাছে হাস্যরসের কারণ হয়েছেন নেইমার। অনেক সময়ই তিনি প্রতিপক্ষের হালকা ট্যাকেলেও পড়ে গিয়ে রেফারির দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছেন। কোস্টারিকার বিপক্ষে ম্যাচে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে পড়ে গিয়ে ফাউলের আবেদন করলে পেনাল্টি পেয়েও গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু ভিডিও এসিস্ট্যান্ট রেফারি রিভিউ করে দেখতে পান, নেইমারকে অবৈধ বাধা দেননি কোস্টারিকার ডিফেন্ডার। পরে সেই পেনাল্টিটি বাতিল হয়ে যায়, সমালোচনার রোল উঠে বিশ্ব ফুটবলে।
তবে, এসব সমালোচনায় কান দেন না নেইমার, নিজেই জানালেন শেষ ষোলোতে মেক্সিকোকে হারানোর পর। কোস্টারিকা-মেক্সিকোর বিপক্ষে গোল পাওয়া নেইমার সংবাদ সম্মেলনে জানান, আমি কোনো সমালোচনায় কান দেই না। শুধু সংবাদ সম্মেলনেই না, একজন অ্যাথলেট হিসেবে আমার এসবে কোনো দৃষ্টি নেই। গত দুইটি ম্যাচের পর আমি গণমাধ্যমকে এড়িয়ে চলেছি। কারণ জানি তারা অনেক কথাই বলবে। আমি এগুলো নিয়ে মাথা ঘামাই না। আমি এসেছি খেলতে আর সতীর্থদের সহযোগিতা করতে। আমার একটাই লক্ষ্য আর সেটা হলো শিরোপা জিতে বাড়ি ফেরা। আমার বিশ্বাস নিজের খেলায় আমি আরও উন্নতি করতে পেরেছি।
তবে অনেকেই বলছেন, এবার বিশ্বকাপে নেইমার এখনও পুরোপুরি ফিট নন। এর আগে পায়ের মারাত্মক এক ইনজুরিতে তিন মাসেরও বেশি সময় মাঠের বাইরে ছিলেন পিএসজির এই তারকা। মেক্সিকো ম্যাচের ৭৩ মিনিটের মাথায় নেইমারের পায়ে বুটের ডগা দিয়ে মাড়িয়ে দিয়েছিলেন বদলি খেলোয়াড় মিগুয়েল লাউন। মাটিতে পড়ে নেইমার গড়াগড়ি দিয়েছিলেন, সেটা নিয়েও হাস্যরসের খোরাক জমা হয়। নেইমার সংবাদ সম্মেলনে জানালেন, আমি ওসবে কান দেই না। আমি মনে করি আমার ব্যাপারে ভিন্ন কিছু চিন্তা হতেই পারে। এটা একজন অ্যাথলেটের জন্য স্বাভাবিক। তারা আমাকে মাড়িয়ে দিয়েছিল। এটা ঠিক ছিল না।
নেইমার আরও যোগ করেন, আপনি আমার সঙ্গে এমনটা করতে পারেন না। মাঠের বাইরে তারা অপমানজনক কথাবার্তা বলছিল। ভেতরেও তারা অনেক কথা বলেছিল, কিন্তু তারা এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। ইনজুরির পর আমি নিজেকে ফিরে পেয়েছি, নিজের গতি ফিরে পেয়েছি, মেক্সিকোর বিপক্ষে সেরাটা অনুভব করেছি। পুরো দলের জন্য ভালো লাগছে। এটাই আমার কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে, সমালোচনা নয়।
সারাবাংলা/এমআরপি