তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে পাকিস্তানকে স্রেফ উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। কদিন আগে শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ে বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বরই ছিল। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠের খেলাতে সেটাই দেখা গেল। পাকিস্তানকে প্রথমে বোলিংয়ে নাস্তানাবুদ করে পরে ব্যাটিংয়েও সুযোগ দেয়নি বাংলাদেশ।
আগে বোলিং করে পাকিস্তানকে ১১০ রানেই গুটিয়ে দেওয়া বাংলাদেশ পরে ১৫.৩ ওভারেই ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছে। এতে বড় অবদান তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের। ৩টি চার আর ৫টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৬ রানের অপরাজিত এক ইনিংস খেলেছেন ইমন।
এই জয়ে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়াবে আগামী ২২ জুলাই।
রোববার (২০ জুলাই) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ১১০ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। প্রথম ওভারেই ফর্মে থাকা ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে হারায় বাংলাদেশ। আব্বাস আফ্রিদির বলে তামিম যখন ফখর জামানের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন তখন তার রান মাত্র ১, দলের রান ২।
তিনে নেমে অধিনায়ক লিটন দাসও আজ ব্যর্থ। আউট হয়েছেন ৪ বলে ১ রান করে। তাতে পাকিস্তান হয়ত একটু চাঙ্গা হয়েছিল। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুর্দান্ত একটা জুটি গড়ে পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলেছেন পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহিদ হৃদয়।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ৬২ বলে ৭৩ রান তোলেন দুজন। ম্যাচের জয়-পরাজয় অনেকটা নির্ধারণ হয়েছে সেখানেই। অবশ্য আফসোস হৃদয় ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারেননি। ৩৭ বলে দুটি করে চার ছয়ে ৩৬ রান করে ফিরেছেন হৃদয়। জাকের আলী অনিককে নিয়ে বাকি কাজটা সেরেছেন তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।
১৫.৩ ওভারে বাংলাদেশের জয় যখন নিশ্চিত হলো ইমন তখন ৩৯ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত। জাকের আলী ১০ বলে ১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে বাংলাদেশি দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান অসাধারণ বোলিং করেছেন। টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস। সিদ্ধান্তটা যে দুর্দান্ত কার্যকারী ছিল সেটা প্রমাণ হতে বেশি সময় লাগেনি। শুরুর দিকে একটু খরুচে হলেও দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দেন তাসকিন আহমেদ।
৪ বলে ৬ রান করা সায়েম আইয়ূবকে ফেরান তাসকিন। পরের ওভারে মোহাম্মদ হারিসকে ফেরান শেখ মাহেদি। সেখানেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। খানিক বাদে মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসের কোমড় ভেঙে দেয় বাংলাদেশ।
তানজিম হাসান সাকিব ফেরান অধিনায়ক সালমান আলী আগাকে। মোস্তাফিজুর রহমান ফেরান হাসান নাওয়াজকে। ৩ রান করা মোহাম্মদ নাওয়াজ রান আউট হলে ৪৬ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরপর আর সফরকারীদের কোমড় সোজা করে দাঁড়াতে দেয়নি বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ।
ওপেনার ফখর জামান অনেকক্ষণ ক্রিজে ছিলেন। শেষ দিকে খুশদিল শাহ ও পেসার আব্বাস আফ্রিদি বলার মতো দুটা ইনিংস খেলেছেন। পাকিস্তান শেষ পর্যন্ত একশ পেরুতে পেরেছে এই কারণেই। ওপেনার ফখর জামান রান আউট হওয়ার আগে ৩৪ বলে ৬টি চার ১টি ছয়ে ৪৪ রান করেছেন। খুশদিল শাহ ২৩ বলে ১৭ রান করে ফিরেছেন। আর আব্বাস আফ্রিদি ২৪ বলে ২২ রান করার পথে ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৩টি। ১৯.৩ ওভারে ১১০ রানে গুটিয়ে গেছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ ৩.৩ ওভার বোলিং করে ২২ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন। মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ২ উইকেট নেওয়ার পথে খরচ করেছেন মাত্র ৪ রান। শেখ মাহেদি ও তানজিম হাসান সাকিব একটি করে উইকেট নিয়েছেন।