১৩৩ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে মাত্র ১৫ রানে পাকিস্তানের পাঁচ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। ৩০ রানে ষষ্ঠ, ৪৭ রানে পাকিস্তানের সপ্তম উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের জয়টা সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু এরপর ফাহিম আশরাফ বাংলাদেশি বোলারদের নাস্তানাবুদ করেছেন। বাংলাদেশ জয় দেখতে পাওয়া ম্যাচটাতে একটা সময় মনে হচ্ছিল জিততে পারে যে কোনো দল। শেষ দিকের রোমাঞ্চ ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশই ম্যাচ জিতেছে।
শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। মোস্তাফিুজর রহমানের করা প্রথম বলেই ৪ হাঁকিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেন আহমেদ দানিয়েল। পরের বলে হাঁকাতে চেয়েছিলেন ছক্কা। কিন্তু সীমানায় ধরে পরেন দানিয়েল, দশম উইকেট হারায় পাকিস্তান যাতে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়।
শেষ পর্যন্ত ৮ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। সিরিজের প্রথম ম্যাচটাও জেতা বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ২-০ ব্যবধানে। ২৪ জুলাই মাঠে গড়াবে সিরিজের শেষ ম্যাচটা।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৩৩ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। ফখর জামানের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝিতে প্রথম ওভারে রান আউট হয়েছেন সিয়াম আইয়ূব।
পরের ওভারে দারুণ এক ইনসুইং বলে মোহাম্মদ হারিসকে ফেরান শরিফুল ইসলাম। শরিফুল তার পরের ওভারে ফখর জামানকে (৮) উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে পরপর দুই বলে হাসান নাওয়াজ ও মোহাম্মদ নাওয়াজকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান তানজিম হাসান সাকিব। পাকিস্তানের স্কোর তখন ১৫ রানে ৫ উইকেট!
অধিনায়ক সালমান আলি আগা রানের চিন্তা বাদ দিয়ে ক্রিজে পরে থাকতে চেয়েছেন। তবে সেই প্রতিরোধও লম্বা হয়নি। ২৩ বলে ৯ রান করা সালমান মাহেদি হাসানকে হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। ৩০ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
এরপর খুশদিল শাহকে নিয়ে দলকে টানছিলেন ফাহিম আশরাফ। খুশদিল অবশ্য বেশি সঙ্গ দিতে পারেননি। শেখ মাহেদির বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে করেছেন ১৮ বলে ১৩ রান। ৪৭ রানে সপ্তম উইকেট হারায় পাকিস্তান। এরপরই আব্বাস আাফ্রিদিকে নিয়ে ফাহিম আশরাফের পাল্টা আক্রমণ।
১৩ বলে ২টি চার ১টি ছয়ে ১৯ রানে আউট হওয়ার আগে ফাহিম আশরাফের সঙ্গে ২৭ বলে ৪১ রানের কার্যকারী একটা জুটি গড়েন আব্বাস। অভিষিক্ত আহমেদ দানিয়েলও ভালো সঙ্গ দিয়েছেন ফাহিমকে। শেষ দিকে বাংলাদেশি বোলারদের পিটিয়ে ম্যাচ হাতের নাগালে নিয়ে এসেছিলেন ফাহিম। তবে শেষের হিসেবটা মিলাতে পারেননি।
১৯তম ওভারের শেষ বলে রিশাদ হোসেনের বলে সরাসরি বোল্ড হয়েছেন ৩২ বলে ৪টি করে চার-ছয়ে ৫১ রান করে। নবম উইকেট হিসেবে ফাহিমের ফেরার পরও লড়াই করেছে পাকিস্তান। তবে জয় পাওয়া হয়নি।
১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষে শরিফুল ইসলাম ৪ ওভারে ১৭ রান খরচায় নিয়েছেন ৩ উইকেট। শেখ মাহেদি ২৫ রানে ও তানজিম হাসান সাকিব ২৩ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে বাংলাদেশের হয়ে দারুণ একটা ইনিংস খেলেছেন জাকের আলী অনিক। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ তানজিদ হাসান তামিমকে বসিয়ে নাঈম শেখকে রেখে আজ একাদশ সাজিয়েছে। এই পরিবর্তন কাজে লাগেনি। সুযোগ পাওয়া নাঈম শেখ স্কুপ খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন ৭ বলে ৩ রান করে।
তিনে নামা লিটন দাস ৯ বলে ৮ রান করে ফিরেছেন। তাওহিদ হৃদয় রান আউট হওয়ার আগে নিজের রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ফর্মে থাকা পারভেজ হোসেন ইমনও আজ ব্যর্থ। ইমন যখন ফিরলেন পাওয়ার প্লের শেষ বলে বাংলাদেশের স্কোর তখন ২৮/৪।
এরপর কার্যকারী একটা জুটি হয়েছে শেখ মাহেদি ও জাকের আলীর মধ্যে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৪৯ বলে ৫৩ রান তোলেন দুজন। শেখ মাহেদি ২৫ বলে ২টি করে চার-ছয়ে ৩৩ রানের কার্যকারী একটা ইনিংস খেলে ফিরেছেন। এরপর জাকেরকে তেমন সঙ্গ দিতে পারেননি কেউ। তবে জাকের ইনিংসের শেষ বলে আউট হওয়ার আগে বাংলাদেশকে টেনেছেন অনেকটা একাই।
২০ ওভারের শেষ বলে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ১৩৩ রান তোলে বাংলাদেশ। জাকের ৪৮ বলে ৫৫ রান করেছেন। এই রান করতে জাকের চার মেরেছেন ১টি, আর ছক্কা ৫টি। পাকিস্তানের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন আহমেদ দানিয়েল ও সালমান মির্জা।